নতুন কোনো মানুষের সামনে গেলে আমরা নার্ভাস হয়ে যাই কেন? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+6 টি ভোট
691 বার দেখা হয়েছে
"মনোবিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (47,700 পয়েন্ট)

1 উত্তর

+3 টি ভোট
করেছেন (47,700 পয়েন্ট)
মানুষ হিসেবে নার্ভাস অনুভূত হওয়া সাধারণ তথা কমন ব্যাপার। আমরা যখন ভয় পাই বা অনেক বেশি উত্তেজিত হয়ে যাই তখনই নার্ভাসনেস কাজ করে। মূলত, যখন কোনো নতুন মানুষের সামনে যান তখন আপনি সেই মানুষটির সামনে যেতে মানসিকভাবে প্রস্তুত নন যার কারনে মানুষের সামনে গেলে আপনার নিজের উপর দৈহিক ও মানসিক চাপ কাজ করে। এবং ভয় পেয়ে বা উত্তেজিত হয়ে কিংবা যেভাবেই হোক, আপনার দেহ থেকে অ্যাড্রেনালিন উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়। সেইসাথে ব্লাড প্রেসার বেড়ে যায়, হার্টবিট বেড়ে যায় ও শ্বাস-প্রশ্বাস ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। যার কারনে তখন নিজেকে নার্ভাস অনুভূত হয়।
31 জানুয়ারি 2021 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন (34,660 পয়েন্ট) সেক্ষেত্রে নার্ভাসনেস দূর করার উপায় কী ?
করেছেন (9,280 পয়েন্ট)


প্রেমে পড়েছেন! প্রথমবারের মত মঞ্চে উঠেছেন, হাজার মানুষ তাকিয়ে রয়েছে আপনার দিকে। বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা। ৯০ মিনিট খেলার পরও গোল হয়নি, পেনাল্টি করতে হবে। হারজিত নির্ভর করছে শেষের পেনাল্টির ওপর। সবাই নার্ভাস, কী পরিমাণ নার্ভাস তা কেউ জানে না। চাকরির ইন্টারভিউ, ভীষণ নার্ভাস। কিছুতেই নিজেকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। পছন্দের মানুষটিকে পছন্দ করি কিন্তু বলার মত শক্তি বা সাহস কিছুই নেই। কারণ কী? 

লজ্জা, ভয়, জড়তা, দুর্বলতা, নার্ভাস নাকি সব কিছুর সমন্বয়? মাঝেমাঝেই নার্ভাস হয়ে পড়েন? কোন অতিরিক্ত কাজ এসে গেলে অথবা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কোন কাজ সারতে না পারলেই কি নার্ভাসনেস আপনাকে গ্রাস করে? এমন আরও অনেক কিছু আছে যা আপনাকে প্রায়শই নার্ভাস করে তোলে। কিন্তু নার্ভাস হয়ে পড়লেই তো হবে না। নিজেই নিজেকে এ সমস্যা থেকে বের করে আনতে হবে।
 
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলে যাওয়া জীবনযাত্রায় স্ট্রেসের পরিমাণ অনেকটাই বেড়েছে। স্ট্রেস বা মানসিক চাপের পরিমাণ বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে মানসিক চাপে ভেঙে পড়ার প্রবণতা। কোনও বড় কাজ করার আগে, পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগে, পেশার জগতে কোনও কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে বা পারিবারিক-সামাজিক সংকটে এই মানসিক চাপ বিরাট আকার ধারণ করে। 

এ ধরণের সমস্যায় অহরহ পড়তে হয় আমাদের। দিন যত যাচ্ছে, জীবন তত জটিল হচ্ছে। জীবন যত জটিল হচ্ছে মানসিক চাপও তত বাড়ছে। এবং এভাবে এটা বেড়েই চলেছে। কথা বলবেন মনোবিজ্ঞানীদের সঙ্গে? তারা বলবেন গান শুনুন, সিনেমা দেখুন, বই পড়ুন। যা করতে ভালো লাগে তাই করুন ইত্যাদি।

শরীর সুস্থ থাকলে, স্বাস্থ্য ভাল থাকলে, স্ট্রেস কম হবে। তাই খাওয়া দাওয়ার দিকে নজর দিন। পুষ্টিকর খাবার খান ইত্যাদি। এতে নিজেকে ভাল করে চিনতে এবং বুঝতে শিখবেন। নিজের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করুন। একা একা সময় কাটাবেন না। বন্ধু বা পছন্দের মানুষদের সঙ্গ অথবা আপনার প্রতি সহমর্মী এ ধরনের মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন, সময় ভালো যাবে।

কেন জীবনে স্ট্রেস হচ্ছে, কী কারণে মানসিক চাপে ভুগছেন তা খুঁজে বের করে সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে। যত বেশি স্ট্রেস থেকে পালাতে চাইবেন তত বেশি স্ট্রেস আপনাকে আচ্ছন্ন করে ফেলবে।

জীবনে কী ঘটতে চলেছে, কী হবে তা নিয়ে না ভেবে যা কিছু পেয়েছেন, যা কিছু আছে তার মূল্য দিন। নিজের এবং স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকুন। জীবনকে উপভোগ করুন। নিজের সাফল্যের সময়কার কথা ভাবুন। সেই সমস্ত ঘটনা যেমন পরীক্ষার কথা মনে করুন, যেগুলো আপনি সাফল্যের সঙ্গে পেরিয়ে এসেছেন। চেষ্টা করুন এমন কোনও ঘটনার কথা মনে করতে, যখন আপনি খুব আনন্দে ছিলেন।

নার্ভাস বোধ করলে পেট এবং ঠোঁটের ওপর আঙুল বোলান। আমাদের ঠোঁটে অনেক প্যারাসিমপ্যাথেটিক নার্ভ ফাইবার থাকে। আঙুল চালালে এসব ফাইবার উত্তেজিত হয়ে ওঠে ও নার্ভাস সিস্টেমকে শান্ত করতে সাহায্য করে।

ডিপ ব্রিদিং করুন। গভীরভাবে শ্বাস নিন, ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন। নাক দিয়ে শ্বাস নিন, মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। যত সময় ধরে শ্বাস নিচ্ছেন, তার দ্বিগুণ সময় ধরে ছাড়ুন। বেলি ব্রিদিং করুন। এই ধরনের শ্বাস প্রক্রিয়ায় ফুসফুস ভরে শ্বাস নিলে বুক নয় পেট ফুলে ওঠে। 

নিশ্বাস ছাড়ার সময় পেট ভিতরে ঢুকে যায়। এতে রিল্যাক্সেশন হয়। প্রতিদিন এভাবে কিছুক্ষণ শ্বাস নিন। একটা কাজ করার সময় অন্য কাজের চিন্তা করবেন না। এতে মনঃসংযোগ হবে না, নার্ভাস হয়ে পড়বেন। যখন কোনো একটি কাজ করবেন, সেই কাজেই মন দিন। মনঃসংযোগ বাড়লে নার্ভাসনেস কমবে।

নিজেকে নিয়ে আপনি কি খুব গর্বিত? নিজের কাজ, নিজের চেহারা ইত্যাদি নিয়ে কি আপনার গর্বের শেষ নেই? তাহলে এটা আপনার নার্ভাস ব্রেক-ডাউনের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। নিজের ইমেজ বা ইগোর প্রতি অল্প আঘাত এলেই আপনি ভেঙে পড়তে পারেন। এই আত্মপ্রেম বা গর্বের বোধটা কমাতে হবে।

হাজার পরামর্শ রয়েছে তা সত্ত্বেও অনেকে চাপ এবং নার্ভ সিস্টেমকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। যার ফলে সাফল্যের দরজাও খুলছে না। নার্ভ সিস্টেম এমন একটি ইস্যু যা এতই ব্যক্তিগত যে সমাধান দেয়া সম্ভব নয়। স্রষ্টা আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তার শক্তি, অস্তিত্ব, কৃতিত্ব এত অপরিসীম যা আমাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। সুতরাং স্রষ্টার সৃষ্টির মাঝে খুঁজতে হবে আমাদেরকে। সেক্ষেত্রে ধ্যান করা, নামাজ পড়া জরুরি। 

আমাদের প্রত্যেকটি অংশ মহান স্রষ্টার নিয়ন্ত্রণে এবং শুধু তিনিই পারেন সকল সমস্যা দূর করতে। সেক্ষেত্রে বলা যেতে পারে ভাগ্যের লিখন না হয় খণ্ডন। আমার মনে হয় যেটা পুনঃনির্ধারিত সেটাই হবে। তবে আমাদেরকেই নিজ নিজ জায়গা থেকে চেষ্টা করতে হবে সমাধানের। কিন্তু সমাধানের চেষ্টা করলেই যে সমাধান হয়ে যাবে এমনটি নয়।

সবশেষে বলতে চাই, জীবনের অপর নাম সমস্যা। সব সমস্যার সমাধান হবে না। আর সব সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব একজনের নয়। আপনি যদি সব সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়ে নেন, তাহলে কোনো না কোনো ক্ষেত্রে ব্যর্থ হবেনই। যখন ব্যর্থ হবেন আত্মবিশ্বাস হারাতে থাকবেন, আপনার স্ট্রেসও বাড়তে থাকবে। 

যখন স্ট্রেস বাড়বে তখন ব্যর্থতার হারও বাড়তে থাকবে। এভাবে আপনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়বেন। চূড়ান্ত অর্থে জীবনে পরাজিত হবেন। অতএব বাস্তববাদী হোন, সমাধানযোগ্য সমস্যা নিয়ে ভাবুন, নিজের সামর্থ্য সম্পর্কে সচেতন থাকুন। তাহলে অবশ্যই আপনি স্ট্রেস মোকাবেলা করতে পারবেন। জীবনে সফল হবেন।

লেখক: রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক (প্রোডাকশন অ্যান্ড সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট), ফাইজার, সুইডেন থেকে, [email protected]
~দৈনিক যুগান্তর।
 

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+3 টি ভোট
1 উত্তর 234 বার দেখা হয়েছে

10,720 টি প্রশ্ন

18,361 টি উত্তর

4,729 টি মন্তব্য

240,084 জন সদস্য

49 জন অনলাইনে রয়েছে
1 জন সদস্য এবং 48 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Ayon Ratan Agni

    390 পয়েন্ট

  2. Vuter Baccha

    150 পয়েন্ট

  3. almoyaj_k

    130 পয়েন্ট

  4. Mehedi_Bknowledge

    110 পয়েন্ট

  5. Monojit Das

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী চোখ রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #ask চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি প্রাণী স্বাস্থ্য বৈজ্ঞানিক মাথা গণিত মহাকাশ পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি #science বিজ্ঞান #biology খাওয়া শীতকাল গরম কেন #জানতে ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা মাছ মস্তিষ্ক শব্দ ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস গ্রহ স্বপ্ন রসায়ন তাপমাত্রা উদ্ভিদ কালো কি বিস্তারিত রঙ পা পাখি গ্যাস মন সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত আম বিড়াল কান্না নাক
...