ট্রাইপোফোবিয়া কি? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+8 টি ভোট
12,729 বার দেখা হয়েছে
"মনোবিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (123,340 পয়েন্ট)

3 উত্তর

+3 টি ভোট
করেছেন (690 পয়েন্ট)
Afsana Afrin-

Trypophobia বা ট্রাইপোফোবিয়া এর অর্থ হচ্ছে fear of many holes.

সাধারণত বড় নয়, এক্ষেত্রে ছোট ছোট গর্ত বা ছিদ্র দেখলে ব্যক্তি আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এমনকি ছোট গর্ত আছে এমন ধরনের ধরনের কোনো ছবি দেখলেও তার মধ্যে এক বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। একক গর্তের চাইতে পুঞ্জীভূত গর্তের দৃশ্য আরো বেশি প্রভাব ফেলে ট্রাইপোফোবিকদের মধ্যে। হতে পারে সেটা শুকিয়ে যাওয়া কোনো মৌচাক, বুদবুদ, ছোট ছোট গর্ত আছে এমন চিত্র,শরিরের কোনো ক্ষত বা এমনকি নিজের ত্বকের লোমকূপও!

এই ট্রাইপোফোবিয়া বিবর্তনবাদের একটা দৃষ্টান্ত। আদিম যাযাবর মানুষ চিনেছে যে অনেকগুলো গর্ত একসাথে থাকা মানে সেটা বিপদজনক। যেমন বোলতার চাক বা পিপড়ার ঢিপি, বিষাক্ত ফল ইত্যাদি, এছাড়াও আদিম মানুষ দেখতে পেল যে যাদের শরীরে এমন গর্ত গর্ত ঘা হয়েছে তারা ছোঁয়াচে রোগে আক্রান্ত অতএব তাদের থেকে দূরে থাকতে হবে। সেইজন্যই একসাথে অনেক গর্ত থাকলে আদিম মানুষ সেটাকে বিপদজনক হিসেবে গণ্য করে এড়িয়ে চলতো। সেই এড়িয়ে চলার প্রবণতাটাই ফোবিয়া হয়ে আমাদের জেনেটিক্সে আছে এখনও।

এই ফোবিয়াতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা কোনো গর্ত দেখলেই তাদের অবচেতন মন সেটিকে কোনো বিষাক্ত প্রাণীর মতো করে উপস্থাপন করে। এদের চোখে গর্তগুলোও অন্যদের চাইতে অনেক বেশি তাড়াতাড়ি ধরা পড়ে।

লক্ষণ হিসেবে শরীরে দৃশ্যমান  প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। যেমন- শরীরের কোনো অংশ ঠান্ডা হয়ে যাওয়া, হাত পা কাঁপা,মাথা ঘুরানো,অস্বস্তি হওয়া ইত্যাদি। এটা কোনো মানসিক রোগ নয়। এটা ফোবিয়া
+1 টি ভোট
করেছেন (1,290 পয়েন্ট)
ট্রাইপোফোবিয়া মূলত গর্ত/ছিদ্র  এই ফোবিয়াতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা অনেকগুলো গর্ত  আছে, এমন কোনো কিছু দেখলেই অবচেতন মনে সেটিকে  কোনো বিষাক্ত প্রাণী মনে করে বসে।  সেগুলো দেখামাত্রই মাইগ্রেন, শরীরে ঘাম চলে আসা বা হার্ট বিট বেড়ে যাবার মতো সমস্যা হতে পারে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ১৬% মানুষের এ সমস্যাটি আছে। উল্লেখ্য, কিছুক্ষণ বিবেচনা করে দেখলাম, আমারো এই সমস্যাটা আছে। তবে আমার সামান্য ভয় এবং ঘৃণা লাগে।
0 টি ভোট
করেছেন (7,560 পয়েন্ট)

মৌচাকের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গর্ত, সাবানের ছোট ছোট ফেনা, অসংখ্য ছিদ্রযুক্ত প্রাণী কিংবা ছোট খাটো কোনো গর্ত দেখার কারণে যদি আপনার অস্বস্তিবোধ থেকে শুরু করে গুরুতর মাইগ্রেন, প্যানিক অ্যাটাক, হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি পর্যন্ত হয়ে থাকে তাহলে আপনি খুব সম্ভবত ট্রাইপোফোবিয়া নামক এক ধরনের ফোবিয়ায় আক্রান্ত। খুব সহজ কথায় বলতে গেলে, ট্রাইপোফোবিয়া হলো নির্দিষ্ট কিছু চাক্ষুষ বৈশিষ্ট্যর কারণে তৈরি ভয় মূলত বিভিন্ন গঠনের ক্ষুদ্র গর্ত দেখার কারণে তৈরি ভয়। 

 

ইউনিভার্সিটি অব এসেক্সের তথ্যমতে, এটি সবচেয়ে কমন বা সাধারণ ফোবিয়ার মধ্যে একটি। এক রিসার্চে দেখা যায় যে, অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ১৬% এই ফোবিয়ার ভুক্তভোগী ছিলেন। ট্রাইপোফোবিয়া শব্দটি গ্রীক থেকে এসেছে : τρῦπα , trŷpa , যার অর্থ "গর্ত" এবং φόβος , ফোবোস , যার অর্থ "ভয়"। ধারণা করা হয়, ২০০৫ সালে কোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীর থেকেই ট্রাইপোফোবিয়া শব্দটির জন্ম হয়। এই ফোবিয়াটি খুব বেশি প্রচারিত না হওয়ার কারণে ভুক্তভোগীদের অধিকাংশই একা এই ফোবিয়ায় ভুগছেন বলে ধারণা করে থাকেন, একই কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ট্রাইপোফোবিয়াকে ট্রিগার করে এমনসব ছবির দেখাও মিলে প্রায়শই। তবে মনে রাখা উচিত, এই ফোবিয়ায় আক্রান্তরা এইসব ছবি দেখে মারাত্মক অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পরে যান। ট্রাইপোফোবিয়া প্রায়ই একটি স্বায়ত্তশাসিত স্নায়ুতন্ত্রের প্রতিক্রিয়া(an autonomic nervous system response) হিসেবে সামনে আসে । যে আকারগুলো ট্রাইপোফোবিক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে তাদের মধ্যে রয়েছে গুচ্ছ গর্তযুক্ত জিনিস যেমন ফল এবং বুদবুদ, কিংবা পোকামাকড় দ্বারা তৈরি গর্ত এবং ক্ষতস্থানে সৃষ্ট গর্ত। আবার রোগাক্রান্ত টিস্যুতে গর্ত যেমন কুকুর বা অন্য প্রাণীতে কীটপতঙ্গ দ্বারা সৃষ্ট গর্ত । এই আকার-আকৃতিগুলো দেখে, কেউ কেউ দাবি করেন যে তাদের শরীর কাঁপছে, তাদের ত্বকে কিছু হামাগুড়ি দিচ্ছে/ crawling করছে অথবা প্যানিক অ্যাটাক অনুভব করছেন, ঘামছেন, বুক ধড়ফড় করছে বা বমি বমি ভাব বা চুলকানি অনুভব করছেন ।অন্যান্য উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে গুজ বাম্পস, অস্বস্তি বোধ করা, এবং দৃষ্টিশক্তির অস্বস্তি যেমন চোখে ঝাপসা দেখা, দৃষ্টি বিভ্রম ইত্যাদি। 

 

ট্রাইপোফোবিয়া ভয় অথবা ঘৃণা কিংবা উভয়েরই প্রতিক্রিয়া হিসেবে প্রকাশিত হতে পারে। যারা ট্রাইপোফোবিয়ায় আক্রান্ত তাদের মধ্যে ঘৃণার (disgust) অনুভূতি বেশ প্রখর থাকে । 

 

ট্রাইপোফোবিয়া নিয়ে গবেষণা এখনও বেশ সীমিত, তবে কেন এটি ঘটে সে সম্পর্কে বেশ কিছু তত্ত্ব রয়েছে। সবচেয়ে জনপ্রিয় তত্ত্বগুলোর মধ্যে একটি হলো বিবর্তনীয় কারণ। ধারণা করা হয় যে, রোগ বা বিপদের সাথে সম্পর্কিত জিনিসগুলোর একটি বিবর্তনীয় প্রতিক্রিয়া হলো ট্রাইপোফোবিয়া। যেমন- রোগাক্রান্ত ত্বক, পরজীবী এবং অন্যান্য সংক্রামক অবস্থা ইত্যাদির সাথে গর্ত বা বাম্পের কিছু সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায় ( যেমনঃ ক্ষতস্থানের গর্ত, বিভিন্ন প্রাণীর দেহে পরজীবি)। এইসব ঘটনা ট্রাইপোফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ট্রিগার হিসেবে কাজ করে, এগুলো ভয়ের চেয়ে বেশি ঘৃণা অনুভব করার প্রবণতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

 

আরেকটি তত্ত্ব পরামর্শ দেয় যে গুচ্ছ গর্তের সাথে কিছু বিষাক্ত প্রাণীর চামড়া এবং আবরণের প্যাটার্নের সাথে মিল থাকায় ট্রাইপোফোবিক লোকেরা অচেতন মনে এই প্যাটার্নগুলোকে মিলিয়ে ফেলে ফলে এই নিদর্শনগুলোকে ভয় পেতে থাকেন।

 

এই ধারণা সমর্থন করে এমন কিছু গবেষণাও আছে। ২০১৩ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ট্রাইপোফোবিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা কীভাবে এই শর্ত অনুযায়ী তাদের এই ফোবিয়া আক্রান্ত হওয়ার প্রমাণ হিসেবে নির্দিষ্ট কিছু উদ্দীপনায় সাড়া দেয়। একটি মৌচাক ( সাধারণ ট্রাইপোফোবিক  বস্তু) দেখার সময়, যাদের ট্রাইপোফোবিয়া নেই তারা মধু বা মৌমাছির মতো জিনিসগুলোর কথা ভাবেন। গবেষকরা বিশ্বাস করেন যাদের ট্রাইপোফোবিয়া আছে তারা অচেতন মনে মৌচাককে বিপজ্জনক জীবের সাথে তুলনা করে ফেলে যেমন র‍্যাটলস্নেকের সাথে মৌচাকের প্যাটার্নগত মিল রয়েছে। যদি তারা এ সম্পর্কে নাও জানেন তবুও তারা তাদের ঘৃণা বা ভয়ের অনুভূতির কারণে ট্রাইপোফোবিয়ার শিকার হতে পারেন । 

ট্রাইপোফোবিয়ার কোনো চিকিৎসা নেই। কিন্তু এক্সপোজার থেরাপি ( যা ফোবিয়া চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়) একটি কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।

 

পুরুষদের চেয়ে নারীরা ট্রাইপোফোবিয়ায় বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে। যেহেতু,, অধিকাংশ ট্রাইপোফোবিয়া ভুক্তভোগী জানেনই না যে তিনি এটি দ্বারা আক্রান্ত তাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি পোস্ট করার ক্ষেত্রে আমাদের সচেতন হওয়া উচিত। আমাদের আপলোড করা ট্রাইপোফোবিক ছবি যেন কারো ট্রাইপোফোবিয়াকে ট্রিগার করে না বসে এদিকে লক্ষ্য রাখা উচিত।

 

সংগৃহীত

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

0 টি ভোট
2 টি উত্তর 96 বার দেখা হয়েছে
26 অক্টোবর 2023 "লাইফ" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Mahfuzur Rahman RM (9,190 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 139 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
2 টি উত্তর 144 বার দেখা হয়েছে
07 ডিসেম্বর 2023 "মনোবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Jihan (1,040 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
2 টি উত্তর 185 বার দেখা হয়েছে
21 নভেম্বর 2023 "মনোবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Jihan (1,040 পয়েন্ট)

10,720 টি প্রশ্ন

18,361 টি উত্তর

4,729 টি মন্তব্য

239,986 জন সদস্য

36 জন অনলাইনে রয়েছে
0 জন সদস্য এবং 36 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Ayon Ratan Agni

    390 পয়েন্ট

  2. Vuter Baccha

    150 পয়েন্ট

  3. almoyaj_k

    130 পয়েন্ট

  4. Mehedi_Bknowledge

    110 পয়েন্ট

  5. Monojit Das

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী চোখ রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #ask চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি প্রাণী স্বাস্থ্য বৈজ্ঞানিক মাথা গণিত মহাকাশ পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি #science বিজ্ঞান #biology খাওয়া শীতকাল গরম কেন #জানতে ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা মাছ মস্তিষ্ক শব্দ ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস গ্রহ স্বপ্ন রসায়ন তাপমাত্রা উদ্ভিদ কালো কি বিস্তারিত রঙ পা পাখি গ্যাস মন সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত আম বিড়াল কান্না নাক
...