বহু বছর আগে বিলুপ্ত হওয়া ‘ডোডো (Dodo)’ পাখিকে সবচেয়ে ‘বোকা পাখি’ বলা হতো কেন? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

0 টি ভোট
1,232 বার দেখা হয়েছে
"প্রাণিবিদ্যা" বিভাগে করেছেন (141,820 পয়েন্ট)

2 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (141,820 পয়েন্ট)
নির্বাচিত করেছেন
 
সর্বোত্তম উত্তর

হারিয়ে যাওয়া ডোডো পাখির অজানা রহস্য :

ডোডো ১৬শ শতাব্দীতে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া এক বিস্ময়কর পাখির নাম। এরা বসবাস করতো ভারত মহাসাগরের মরিশাস দ্বীপে। ওলন্দাজ নাবিকরা এই দ্বীপে পৌঁছানোর একশো বছরের মধ্যেই এরা বিলুপ্ত হয়। ফলে বিস্ময়কর এ পাখি সম্পর্কে অনেক কিছুই থেকে যায় মানুষের অজানা। ডোডো পাখির শেষ দেখা মেলে ১৬৬২ সালে। গবেষণার জন্য কোনো জীবিত ডোডো পাখির অস্তিত্ব বর্তমানে নেই। তবে থেকে গেছে এর দেহাবশেষ। এই পাখির কংকাল সংরক্ষিত মরিশাসের জাদুঘরে।

১৫৯৮ সালে ওলন্দাজ অভিযাত্রী এডমিরাল উইব্রান্ড ভ্যান ওয়ারুইজকের মরিশাস অভিযানে প্রথম ডোডো পাখি সম্পর্কে মানুষ জানতে পারে। তিনি এর নাম দেন ‘ওয়াগ্লভোগেন’ অর্থাৎ অভক্তিকর পাখি। এ পাখির মাংসের বাজে স্বাদের জন্যেই এমন নাম দিয়েছিলেন তারা। আর বলেছিলেন কালো বর্ণের পাখিগুলো দেখতে কবুতর ও ঘুঘুর মতো। কিন্তু আকৃতি ও ওজনে অনেক তফাত। এরা লম্বায় সাড়ে তিন ফুট ও ওজনে প্রায় ২০ কেজি।

গবেষণায় জানা যায়, ডিম থেকে বের হওয়ার পর ডোডো পাখি অতিদ্রুত প্রাপ্তবয়স্ক আকার ধারণ করে। বিজ্ঞানীরা জানান, আগস্ট মাসে ডিম ফেটে এদের বাচ্চা বের হতো। এই সময়টাতে মরিশাস দ্বীপের গাছ বিভিন্ন রকম ফলমূলে ছেয়ে থাকে। ডোডো পাখির বাচ্চারা পেটুকের মতো এসব ফলমূল খেয়ে সাবার করে ফেলতো। এজন্যেই সচক্ষে ডোডো পাখির কর্মকাণ্ড দেখা অভিযাত্রীরা এ পাখিকে আখ্যায়িত করেছিলো পেটুক পাখি।

বর্ষাকালে ডিম থেকে বেরোনোর পর থেকেই অতিরিক্ত খাবার খেয়ে দ্রুত বড় হয়ে উঠতো পাখিগুলো। নভেম্বর থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত অনেক রকম ঝড় ও দুর্যোগ আঘাত হানে মরিশাসে। এসময় দ্বীপে খাবারও থাকে না তেমন। এমন প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার কৌশল হিসেবে ডোডো পাখির এই দ্রুত বেড়ে ওঠা। অতিদ্রুত প্রাপ্তবয়স্কের আকার ধারণ করলেও বংশ বৃদ্ধির জন্য ডোডো পাখিকে অপেক্ষা করতে হতো বেশ কয়েক বছর। মরিশাস দ্বীপে ডোডো পাখিকে খাওয়ার মতো তেমন কোনো শিকারি জন্তু-জানোয়ার ছিলো না। তাই নির্ভয়ে সময় নিয়ে বংশ বিস্তার করতো এরা।

গবেষকরা আরও জানান, ডিম পাড়ার পর ডোডো পাখির হাড়ে মিনারেলের পরিমাণ কমে যায়, যার ফলে পুরনো পালক ঝরে নতুন পালক জন্মায় এদের দেহে। ১৬শ শতাব্দীর নাবিকেরা বলেছিলেন এদের পালকের রং কালচে। এর কারণ সম্ভবত তারা নতুন পালক জন্মানো ডোডো পাখিই বেশি দেখতে পেয়েছিলেন। গবেষকরা জানান, জন্মের পর ডোডো পাখির পালক থাকে ধূসর-খয়েরি। ডিম পাড়ার মৌসুমে এই পালক ঝরে কালচে পালক জন্মায়।

গবেষকরা এটাও জানান, আজ থেকে ৩৫০ বছর আগে মরিশাস দ্বীপে মানুষ পৌঁছানোর মাত্র ১০০ বছরেরও কম সময়ে এই পাখি যেভাবে বিলুপ্ত হয়ে গেল! মূলত মানুষই এই পাখি বিলুপ্তির প্রধান কারণ। ডোডো ছিল খুবই বোকা গোছের পাখি। ইংরেজিতে একটা প্রবাদ রয়েছে ‘ডোডোর মতো মৃত্যু’ অর্থাৎ বোকার মতো মৃত্যু। এমন মৃত্যু যেটা সম্পর্কে কোন ধারণাই নেই ভিকটিমের। মানুষদের দেখে একদমই ভয় পেত না ডোডো পাখি, বরং আগ্রহী হয়ে মানুষের কাছে এসে ভিড়তো। তাই এরা মানুষের সহজ শিকারে পরিণত হয়।

আগেই বলা হয়েছে, এই পাখি খেতে ছিলো জঘণ্য। কিন্তু মরিশাস দ্বীপে খাদ্যের তেমন কোনো বিকল্প না থাকায় অভিযাত্রীরা বাধ্য হয়ে এদের খাওয়া শুরু করে। ডোডো পাখিরা মাটিতে বাসা বাঁধতো ও ডিম পাড়তো বলে সহজেই এদের ডিম চুরি করতো মানুষ। খাওয়ার উদ্দেশ্য ছাড়াও ডোডো পাখি দেখলেই খেয়ালের বশে নির্বিচারে এদের হত্যা করতো অভিযাত্রীরা।

ডোডো পাখি ছিল যেকোন শিকারি প্রাণীর জন্য সহজ লক্ষ্য। মানুষ মরিশাসে কুকুর, বিড়াল, বানর, শুকর, ইঁদুরসহ বিভিন্ন প্রাণী জাহাজে করে নিয়ে যায়। যার ফলে ডোডো পাখির পক্ষে এই দ্বীপের পরিবেশ টিকে থাকার জন্য একেবারেই অনুপযোগী হয়ে দাঁড়ায়। নিমিষেই পৃথিবীর বুক থেকে চিরতরে হারিয়ে যায় পাখিটি।

সংগৃহীত

0 টি ভোট
করেছেন (2,990 পয়েন্ট)
ডোডো পাখি (Raphus cucullatus) মরিশাসের বিলুপ্ত পাখিদের মধ্যে অন্যতম। এই পাখির বিলুপ্তি ঘটে ১৬৬২ সালে ওলন্দাজদের হাতে। পাখিগুলোর সাথে আগে কখনো মানুষের দেখা হয়নি তাই প্রাথমিকভাবে এরা মানুষের সামনে আসলেও ভয়ে পালিয়ে যেতো না। এ জন্য শিকারীরা খুব সহজেই এদের পাকড়াও করতে পারতো এবং সেখান থেকেই এদের নাম হয় Dodo। ইংরেজি ভাষায় "Dodo" শব্দের অর্থ "নির্বোধ"।

গবেষকদের মতে ডোডোরা এতোটাও নির্বোধ ছিল না। ডোডোর ব্রেইনের সাইজ কবুতরের সমান-ই ছিল।

ডোডো পাখির বিলুপ্তির কাহিনী সত্যি খুব দুঃখজনক। সেই ১৭ শতাব্দী থেকে আজ পর্যন্ত হাজারো প্রজাতির পশুপাখি ডোডোর মতো মানুষের হাতে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

0 টি ভোট
2 টি উত্তর 260 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
1 উত্তর 177 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
1 উত্তর 351 বার দেখা হয়েছে
12 অগাস্ট 2021 "তত্ত্ব ও গবেষণা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন প্যারাফিন (2,760 পয়েন্ট)
+2 টি ভোট
4 টি উত্তর 660 বার দেখা হয়েছে

10,720 টি প্রশ্ন

18,361 টি উত্তর

4,729 টি মন্তব্য

239,934 জন সদস্য

54 জন অনলাইনে রয়েছে
1 জন সদস্য এবং 53 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Ayon Ratan Agni

    390 পয়েন্ট

  2. Vuter Baccha

    150 পয়েন্ট

  3. almoyaj_k

    130 পয়েন্ট

  4. Mehedi_Bknowledge

    110 পয়েন্ট

  5. Monojit Das

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী চোখ রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #ask চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি প্রাণী স্বাস্থ্য বৈজ্ঞানিক মাথা গণিত মহাকাশ পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি #science বিজ্ঞান #biology খাওয়া শীতকাল গরম কেন #জানতে ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা মাছ মস্তিষ্ক শব্দ ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস গ্রহ স্বপ্ন রসায়ন তাপমাত্রা উদ্ভিদ কালো কি বিস্তারিত রঙ পা পাখি গ্যাস মন সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত আম বিড়াল কান্না নাক
...