হ্যালোসিনেশন কী?ব্যাখ্যা - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+1 টি ভোট
1,403 বার দেখা হয়েছে
"মনোবিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (43,940 পয়েন্ট)

2 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (43,940 পয়েন্ট)
হ্যালুসিনেশন একটি অস্বাভাবিক অনুভূতি। কেউ একজন হয়তো দাবী করে অদৃশ্য কেউ তার কানে কানে কথা বলে যায়!

হ্যালুসিনেশন দেহের প্রতিটি ইন্দ্রিয়তে ঘটতে পারে। কেউ হয়তো দেখে তার আশেপাশে একটা কুকুর সব সময় হাঁটাহাঁটি করছে; আদতে কোন কুকুর তার আশেপাশে থাকে না। এটা ভিজ্যুয়াল হ্যালুসিনেশন। এমনও হতে পারে আক্রান্ত মানুষটি এক বা একের অধিক মানুষের সাথে কথা বলতে পারে। হতে পারে সে এখানে বসে দূরের কারো সাথে কথা বলছে। কেউ কেউ এটাকে অলৌকিক শক্তি ভাবলেও এটা একটা মানসিক রোগের উপসর্গ।

হ্যালুসিনেশন আর ইলিউশন দু’টোই একধরণের বিভ্রান্তি। তবে ইলিউশনে উদ্দীপক থাকবে, হ্যালুসিনেশনে কোনো উদ্দীপক থাকবে না। সামনের ঝুলে থাকা দড়ি যদি কারো কাছে সাপ মনে হয় তাহলে এটি ইলিউশন। যদি কোনো দড়ির অস্তিত্ব ছাড়াই সাপ দেখতে পায় তাহলে তা হ্যালুসিনেশন।

কেউ বিষয়টিকে দেখেন একটা মজার বিষয় হিসেবে, কেউ রহস্যময়, কেউ এটাকে নাটক বা উপন্যাসের বিশেষ উপকরণ হিসেবে কেউ আবার বিশেষ ক্ষমতা প্রাপ্তির সঙ্গে হ্যালুসিনেশনকে তুলনাও করে থাকেন।

কিন্তু আর যাই হোক, এটি মোটেই মজার কোনো বিষয় নয়। এটি এমন এক দশা যখন কেউ মিথ্যা জালের ভেতরে বসবাস করে অজান্তেই। আসলে মিথ্যার জগতে বসবাস করে কেউ ভাবে সে বাস্তব জগতে বসবাস করছে।

হ্যালুসিনেশন কোনো রোগ নয়, এটি অন্য রোগের উপসর্গ। এটি সাধারণত মানসিক রোগের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। তবে কিছু ক্ষেত্রে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থেকেও হ্যালুসিনেশন হতে পারে। তাই কেবল হ্যালুসিনেশন দিয়ে কোনো নির্দিষ্ট রোগ নির্ণয় করা সম্ভব নয়। বিভিন্ন কারণে হ্যালুসিনেশন ঘটতে দেখা যায়-

(১) সিজোফ্রেনিয়া, সিভিয়ার মুড ডিসঅর্ডার, ডিল্যুশনাল ডিসঅর্ডারে রোগীর প্রায়ই হ্যালুসিনেশন হতে পারে

(২) মাত্রাতিরিক্ত ড্রাগস বা অ্যালকোহল সেবনের কারণে

(৩) মস্তিষ্ক, স্নায়ুতন্ত্র এবং ইন্দ্রিয়ের সমস্যায় হ্যালুসিনেশন হতে পারে।

(৪) শরীরে লবণের তারতম্যের জন্যও স্বল্পমেয়াদের হ্যালুসিনেশন দেখা দিতে পারে।

(৫) প্রচণ্ড জ্বর হলে বিশেষ করে শিশুদের হ্যালুসিনেশন হয়। মৃগীরোগ, বিষন্নতা, হিস্টিরিয়া এমনকি ব্রেইন টিউমারের বেলাতেও হ্যালুসিনেশন ঘটতে পারে।

(৬) লিভার বা কিডনির সমস্যা প্রভৃতি মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হলে।

ভিজুয়াল বা দৃষ্টিতে হ্যালুসিনেশন: এক্ষেত্রে এমন কিছু দেখা, যার কোনো বাস্তবিক ভিত্তি নেই। হতে পারে সেটা কোনো আকারের-বর্ণের কিংবা আলোর ছটা, যা অবাস্তব মানব আকৃতি বিশেষ। যেমন মনে হতে পারে পেছনে কেউ দাঁড়িয়ে আছে। অথচ তখন পেছনে বা আড়ালে বস্তুত কেউই নেই।

অডিটরি বা শ্রুতিগত হ্যালুসিনেশন: এমন কোনো শব্দ, মিউজিক হইচই কিংবা কণ্ঠস্বর শোনা, যা নিতান্তই অলীক। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি যেটা হয়ে থাকে, তা হলো ক্ষতিকর গায়েবি কথা, আদেশমূলক কিংবা নিষেধমূলক কথা শোনা। এসব কথা মস্তিষ্কের ভেতর বা বাইরে থেকে হতে পারে। পুরুষ কিংবা নারীকণ্ঠ হতে পারে, অপরিচিত কিংবা পরিচিত মনে হতে পারে। সিজোফ্রেনিয়া রোগীর ক্ষেত্রে অডিটরী হ্যালুসিনেশন বেশি হয়ে থাকে।

অলফ্যাক্টরি বা ঘ্রাণজনিত হ্যালুসিনেশন: এক্ষেত্রে হ্যালুসিনেশনে আক্রান্ত ব্যক্তি এমন কিছু জিনিসের ঘ্রাণ অর্থাৎ গন্ধ পাবে, যার কোনো সত্যতাই নেই, শুধুই একটি ভ্রান্ত ধারণা। যেমন: হঠাৎ করে পঁচা মাছের গন্ধ, বমি, প্রস্রাব, সিগারেট এমনকি পঁচা লালার গন্ধও পেতে পারে। এটি মূলত হয়ে থাকে অলফ্যাক্টরি সিস্টেমের স্নায়ুকোষের ক্ষতিগুলো থেকে, যা ভাইরাস ইনফেকশন ব্রেন টিউমার ট্রমা, সার্জারি কিংবা ওষুধের কারণে হয়ে থাকে।

গ্যাস্টেটরি বা স্বাদজনিত হ্যালুসিনেশন: কোনো কিছুর স্বাদকে মুখে বিস্বাদ লবণাক্ত বা মেটালিক মনে হয়, সম্পূর্ণটাই ভুল ধারণা। সাধারণত এপিলেপসি রোগে এ ধরনের হ্যালুসিনেশন হয়ে থাকে। টমেটো, আলু, বেগুন, মরিচ জাতীয় খাবারে 'সোলানিন' নামক উপাদান থাকে যেটি হ্যালুসিনেশনে প্রভাব রাখতে পারে। তাছাড়া কফি অতিরিক্ত পান করলেও হ্যালুসিনেশনের সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

সোমাটিক বা স্পর্শগত হ্যালুসিনেশন: এক্ষেত্রে কোনোকিছুর স্পর্শ অনুভূত হওয়া, যা বাস্তবিকভাবে ঘটেনি। যেমন হঠাৎ করে শরীরের ভেতর বা উপরে কিছু উঠে আসছে মনে হওয়া। অন্ধকার ঘরে মনে হবে কেউ স্পর্শ করছে অথচ ঘরে তখন কেউ নেই। এটি মূলত একটি মেডিকেল ডিসঅর্ডার।

কারো প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে গেলে কিংবা প্রিয় কোনো মানুষকে হারিয়ে ফেললে সেই মানুষটিকে নিয়ে হ্যালুসিনেশন হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে । হ্যালুসিনেশনের রোগীদের সঙ্গে এমনো হতে পারে, কাছের কোনো একজন মানুষের নাম ধরে গায়েবি কথাবার্তা সে শুনতে পায়।

ক্রমাগত হ্যালুসিনেশন হওয়ায় ঘটে যাওয়া কিংবা শোনা সবকিছুকেই মানুষটি সত্যি মনে করতে থাকে। যার জন্য অনেক বিপদ ঘটে থাকে।

সুতরাং এসব বিষয়গুলোকে দ্রুত বুঝে শণাক্ত করা খুবই জরুরি। যত তাড়াতাড়ি তাদের চিকিৎসার আওতায় আনা যায় ততই মঙ্গল।
0 টি ভোট
করেছেন (33,350 পয়েন্ট)
হ্যালুসিনেশন হচ্ছে মানুষের এমন এক অভ্যন্তরীণ শক্তিশালী বিশ্বাস, যার বাস্তবিক উপস্থিতি না থাকলেও কারও মনে হতে পারে যে এটি আছে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এর সুস্পষ্ট উপস্থিতি টের পায়, যা অন্য কেউ পায় না।

যেমনঃ অলৌকিক কিছুর উপস্থিতি টের পাওয়া, ভৌতিক শব্দ শোনা, অযৌক্তিক গন্ধ পাওয়া, মৃত মানুষের সঙ্গে কথা বলা, অলৌকিক কারও দ্বারা কিছু করতে বাধ্য হওয়া ইত্যাদি হ্যালুসিনেশনের উদাহরণ। হ্যালুসিনেশনে ভোগা অনেকেই শোনেন যে, তাকে কেউ মরে যেতে বলছে এবং অনেকে আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন। হ্যালুসিনেশন কয়েক ধরনের হতে পারে। যেমন: ভিজ্যুয়াল হ্যালুসিনেশন, অডিটরি হ্যালুসিনেশন, ট্যাক্টাইল হ্যালুসিনেশন, অলফ্যাক্টোরি হ্যালুসিনেশন, জ্যাস্টাটরি হ্যালুসিনেশন ও জেনারেল সোমেটিক হ্যালুসিনেশন।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

0 টি ভোট
1 উত্তর 253 বার দেখা হয়েছে
+8 টি ভোট
1 উত্তর 590 বার দেখা হয়েছে
+12 টি ভোট
1 উত্তর 287 বার দেখা হয়েছে

10,815 টি প্রশ্ন

18,521 টি উত্তর

4,744 টি মন্তব্য

646,242 জন সদস্য

81 জন অনলাইনে রয়েছে
3 জন সদস্য এবং 78 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Dibbo_Nath

    230 পয়েন্ট

  2. M_H_Rohan

    180 পয়েন্ট

  3. Soborno Isaac Bari

    170 পয়েন্ট

  4. giavangol2025

    120 পয়েন্ট

  5. keonhacai1820

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ পৃথিবী এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত #ask আলো মোবাইল ক্ষতি চুল #science কী চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি মাথা স্বাস্থ্য প্রাণী গণিত মহাকাশ বৈজ্ঞানিক পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান গরম খাওয়া শীতকাল #জানতে ডিম চাঁদ কেন বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং শক্তি উপকারিতা সাপ লাল আগুন মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মাছ মস্তিষ্ক মশা শব্দ ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন কালো উদ্ভিদ পা মন কি বিস্তারিত রঙ পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাংলাদেশ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি কান্না দাঁত বিড়াল আম
...