অন্ধরাও কী স্বপ্ন দেখে? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+3 টি ভোট
3,031 বার দেখা হয়েছে
"লাইফ" বিভাগে করেছেন (141,850 পয়েন্ট)

2 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (141,850 পয়েন্ট)
নির্বাচিত করেছেন
 
সর্বোত্তম উত্তর

স্বপ্নে সাধারণত আমরা চারপাশের চরিত্র এবং পরিবেশকেই দেখে থাকি। টেলিভিশন, সিনেমা কিংবা ভিডিও গেমের কোনো চরিত্রও আমাদের স্বপ্নে দেখা দিতে পারে। একটা কথা অনস্বীকার্য, আমরা স্বপ্নে যাকি দেখি না কেন, সেই চরিত্র কিংবা পরিবেশ আমরা এর আগে বাস্তবেও দেখেছি। বাস্তবের চরিত্র ও পরিবেশ গল্প পাল্টে আমাদের স্বপ্নে এসে ধরা দেয়। কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন কি, অন্ধ লোকেরা কীভাবে স্বপ্ন দেখে? 

আগেই বলে রাখা ভালো, এই মুহূর্তে কারো চোখে জ্যোতি আছে কিনা, তার ওপর স্বপ্ন দেখা নির্ভর করে না। ধরুন, কোনো ব্যক্তি যদি জন্মান্ধ না হন, ২০ বছর বয়সে গিয়ে অন্ধ হয়ে যান, এরপরের জীবনেও তিনি স্বপ্নে ছবি দেখতে পারবেন। যদিও তার চোখে কোনো জ্যোতি নেই! কারণ স্বপ্নের পুরো ব্যাপারটিই ঘটে ব্রেইনে। এর ওপর চোখের প্রভাব নেই। 

২০১৪ সালে প্রকাশিত ডেনমার্কের এক দল গবেষণায় উঠে এসেছে, যেসব অন্ধ মানুষ চোখের জ্যোতি নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন তারাও স্বপ্নে ছবি দেখতে পান। কিন্তু দৃষ্টিশক্তি হারানোর পর যতই দিন গড়াতে থাকে, ততই তাদের স্বপ্নে সত্যিকারের ছবি আসা কমে যেতে থাকে। যেমন আমাদের কোনো বন্ধু বা আত্মীয় মারা গেলে তার কোনো ছবি না থাকলে বহু বছর পর সেই চেহারা মনে করতে কষ্ট হয়। তেমনি হঠাৎ চোখের জ্যোতি হারানো কোনো ব্যক্তিও তো বহুদিন দেখতে না পেরে আস্তে আস্তে চেনা মুখগুলোর অবয়ব স্মৃতি থেকে হারিয়ে ফেলেন। সময় ও স্মৃতি প্রতিনিয়ত ধোঁকা দিয়ে যাচ্ছে আমাদের। ক্রমাগত নতুন নতুন স্মৃতি এসে পুরাতন স্মৃতিগুলো আমাদের ভুলিয়ে দেয়। 

তবে যারা জন্মান্ধ, তারা স্বপ্নে কোনো ছবিই দেখতে পায়না। কারণ তাদের স্মৃতিতে যে আদৌ কোনো ছবি জমেনি! কোনো কিছু দেখতে কেমন লাগে, এই অনুভূতি তারা একটি মুহূর্তের জন্যও জীবনে অনুভব করতে পারেনি। যে ব্যক্তি কোনোদিন মিষ্টি খায়নি, তাকে যেমন কোনোভাবেই বোঝানো যাবে না এর স্বাদ কেমন, এ ব্যাপারটিও ঠিক তেমন। তবে তাই বলে জন্মান্ধরা যে স্বপ্ন দেখে না তা নয়। তারা তাদের স্বপ্নে বিভিন্ন শব্দ শুনতে পায়, দৃষ্টি ছাড়া অন্যান্য ইন্দ্রিয়ানুভূতি লাভ করে। 

জন্মান্ধরা দুঃস্বপ্ন দেখে বেশি :

ড্যানিশ ওই গবেষণাতেই দেখা যায়, জন্মান্ধরা সাধারণ মানুষের তুলনায় চার গুন বেশি স্বপ্ন দেখে থাকে! সাধারণভাবে বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, সামনে ঘটিতব্য ভয়ানক ঘটনাগুলোর সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নেয়ার জন্যেই দুঃস্বপ্নগুলো মস্তিষ্কের এক ধরণের মানসিক প্রশিক্ষণ হিসেবে কাজ করে। এর ফলে বাস্তবে যখন সেই ভয়াবহ ঘটনাগুলো ঘটে, আমরা একটু কম বিচলিত হই। 

অধিকাংশ অন্ধ মানুষের দৈনন্দিন জীবনেই সাধারণ মানুষের তুলনায় অনেক বেশি দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। যেমন তারা খুব সহজেই দলছুট হয়ে যেতে পারেন, ভীড়ের মাঝে পথ ভুলে হারিয়ে যেতে পারেন বা ছিনতাইয়েরও শিকার হতে পারেন। এসব দুর্ঘটনায় খুব বেশি বিচলিত না হতেই হয়তো তাদের মস্তিষ্ক দুঃস্বপ্নের মাধ্যমে প্রস্তুতি নেয়!

তথ্যসূত্র : ডেইলি বাংলাদেশ

0 টি ভোট
করেছেন (140 পয়েন্ট)
অন্ধ ব্যক্তিদের কল্পনা ও স্বপ্নের বিষয়টি বেশ জটিল এবং তা মূলত নির্ভর করে দৃষ্টিহীনতার সময় এবং ব্যক্তির অভিজ্ঞতার উপর। এখানে আরও গভীরভাবে ব্যাখ্যা করা হলো:

১. মস্তিষ্কের ভূমিকা:

মস্তিষ্ক খুবই অভিযোজনশীল এবং ইন্দ্রিয়গুলোর মধ্যে তথ্য প্রক্রিয়া করার ক্ষমতা থাকে। যদিও দৃষ্টি হলো এক ধরনের সংবেদনশীল ইন্দ্রিয়, মস্তিষ্ক কেবলমাত্র দৃষ্টির ওপর নির্ভর করে না কল্পনা বা স্বপ্ন তৈরির জন্য। মস্তিষ্কে অন্যান্য ইন্দ্রিয় যেমন শ্রবণ, স্পর্শ, গন্ধ, এবং অনুভূতির তথ্য ব্যবহার করে একধরনের "মেন্টাল ইমেজ" তৈরি করতে পারে। অন্ধ ব্যক্তিদের মস্তিষ্ক সেই অভিজ্ঞতাগুলোকে ব্যবহার করে কল্পনা বা স্বপ্নের পৃথিবী তৈরি করে।

২. জন্মগতভাবে অন্ধদের কল্পনা:

জন্মগতভাবে অন্ধ ব্যক্তিরা কখনও দেখেনি, তাই তাদের মস্তিষ্ক চাক্ষুষ চিত্র তৈরি করতে অভ্যস্ত নয়। তাদের কল্পনা বা চিন্তা সম্পূর্ণ ভিন্ন হয়। তারা যেভাবে তাদের চারপাশের পৃথিবীকে অনুভব করে, সেটিই তাদের কল্পনার উপাদান। উদাহরণস্বরূপ:

শব্দ: তাদের কল্পনায় আশেপাশের শব্দ, কথা বলা, প্রাকৃতিক শব্দ ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে ছবি তৈরি হয়।

স্পর্শ: তারা বিভিন্ন বস্তু বা প্রাণীর গঠন, মসৃণতা, খসখসে অনুভূতি কল্পনা করে। যেমন, কাঠের মসৃণ পৃষ্ঠ, লোহার ঠান্ডা অনুভূতি, কাপড়ের নরমত্ব ইত্যাদি।

গন্ধ ও স্বাদ: তারা কোনো খাবার, ফুলের সুবাস, বা বৃষ্টির মাটির গন্ধ থেকে এক ধরনের অনুভূতি তৈরি করে।


জন্মগতভাবে অন্ধ ব্যক্তিরা এসব ইন্দ্রিয়ের উপর নির্ভর করে একটি বাস্তব জগৎ তৈরি করে, যা তাদের জন্য একধরনের কল্পনার জগৎ। যদিও তারা দৃষ্টি ব্যবহার করে না, তাদের কল্পনা অন্য ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে বেশ শক্তিশালী হয়।

৩. জীবনের পরে অন্ধ হওয়া ব্যক্তিদের কল্পনা:

যারা জীবনের একটি পর্যায়ে অন্ধ হয়েছেন, তারা আগে দেখেছেন, তাই তারা ভিজ্যুয়াল স্মৃতি ধরে রাখতে পারেন।

স্বপ্নের সময়: তারা তাদের পুরনো দৃষ্টিভিত্তিক স্মৃতি থেকে ইমেজ তৈরি করতে পারেন। এমনকি অন্ধ হওয়ার পরও তাদের মস্তিষ্কে চাক্ষুষ উপাদান থেকে তৈরি স্মৃতি থাকে এবং তা স্বপ্নে প্রতিফলিত হয়। তারা হয়তো পুরনো স্মৃতির চিত্র যেমন মানুষের মুখ, স্থান, এবং প্রকৃতির দৃশ্য দেখতে পারে।

সময় ও অভিজ্ঞতার সাথে পরিবর্তন: সময়ের সাথে সাথে, দৃষ্টিশক্তির অভাবে তাদের ভিজ্যুয়াল কল্পনা কমে যেতে পারে, এবং মস্তিষ্ক অন্যান্য ইন্দ্রিয়ের উপর বেশি নির্ভরশীল হতে পারে। তখন তাদের স্বপ্নে শব্দ, স্পর্শ এবং অন্যান্য ইন্দ্রিয়মূলক অভিজ্ঞতা প্রাধান্য পায়।


৪. অন্য ইন্দ্রিয়ের শক্তিশালী ভূমিকা:

অন্ধ ব্যক্তিদের অন্যান্য ইন্দ্রিয় (শ্রবণ, স্পর্শ, গন্ধ, স্বাদ) অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়ে ওঠে। উদাহরণস্বরূপ:

শ্রবণ: অন্ধ ব্যক্তিরা চারপাশের বিভিন্ন ধ্বনির মাত্রা, টোন এবং উচ্চতা থেকে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। তারা এই শব্দগুলো কল্পনায় সংযুক্ত করে তাদের অভিজ্ঞতা বা চিন্তা গঠন করতে পারে। স্বপ্নেও তারা শব্দের উপর বেশি নির্ভর করে।

স্পর্শ: তারা বস্তু, গঠন, আকার, এবং টেক্সচারের মাধ্যমে কল্পনার জগৎ তৈরি করতে পারে। ধরুন, একটি পাথরের কঠিনতা, কাপড়ের নরমত্ব, গাছের পাতার মসৃণতা থেকে একটি ছবি তারা তাদের মস্তিষ্কে তৈরি করে।


৫. স্বপ্ন এবং চেতনা:

স্বপ্নের প্রকৃতি: গবেষণায় দেখা গেছে, অন্ধ ব্যক্তিরা স্বপ্নে শব্দ, স্পর্শ, গন্ধ এবং আবেগের মতো ইন্দ্রিয় অনুভূতি অনুভব করে থাকে। তাদের স্বপ্নে চাক্ষুষ চিত্র থাকতেও পারে, তবে এটি প্রধানত নির্ভর করে তারা কখন অন্ধ হয়েছিল তার উপর। যেমন, যারা জন্মগতভাবে অন্ধ, তাদের স্বপ্নে ভিজ্যুয়াল উপাদান থাকে না, বরং তারা অন্য ইন্দ্রিয়গুলোর মাধ্যমে স্বপ্ন অনুভব করে।

গভীর অনুভূতি: যেহেতু তাদের চাক্ষুষ অভিজ্ঞতা নেই, তাই অন্ধ ব্যক্তিদের অন্যান্য ইন্দ্রিয় প্রখর হয়। তারা স্বপ্নে বা কল্পনায় অনেক বেশি শক্তিশালী এবং গভীর অনুভূতি অনুভব করে, যা সাধারণত দৃষ্টিশক্তি সম্পন্ন মানুষের তুলনায় বেশি তীব্র হতে পারে।


৬. কল্পনার জগৎ:

অন্ধ ব্যক্তিরা এমন একটি কল্পনার জগৎ তৈরি করতে পারে যা তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে সম্পূর্ণ আলাদা। তারা সেইসব উপাদান কল্পনা করে যা তারা শুনেছে, ছুঁয়েছে, বা অনুভব করেছে। এ ধরনের কল্পনা তাদের জন্য বাস্তব অনুভূত হয় এবং তারা সেই কল্পনায় গভীরভাবে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়।

সংক্ষেপে:

অন্ধ ব্যক্তিদের কল্পনা এবং স্বপ্ন দেখতে কোনো বাধা নেই, যদিও তারা দৃশ্যমান চিত্র তৈরি করতে অক্ষম। তাদের কল্পনা এবং স্বপ্ন প্রধানত শ্রবণ, স্পর্শ, গন্ধ, স্বাদ এবং আবেগের উপর ভিত্তি করে গঠিত হয়। মস্তিষ্কের অসাধারণ অভিযোজন ক্ষমতার কারণে, তারা দৃষ্টিহীনতার মধ্যেও এক ধরনের সমৃদ্ধ, বহুমাত্রিক অভিজ্ঞতা এবং কল্পনার জগৎ তৈরি করতে সক্ষম।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+3 টি ভোট
2 টি উত্তর 498 বার দেখা হয়েছে
16 ফেব্রুয়ারি 2022 "মনোবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Priom Chowdhury (2,630 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 678 বার দেখা হয়েছে
+5 টি ভোট
1 উত্তর 676 বার দেখা হয়েছে
01 ফেব্রুয়ারি 2021 "মনোবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hojayfa Ahmed (135,480 পয়েন্ট)
+1 টি ভোট
4 টি উত্তর 767 বার দেখা হয়েছে
16 অগাস্ট 2022 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Maksud (3,610 পয়েন্ট)

10,771 টি প্রশ্ন

18,449 টি উত্তর

4,741 টি মন্তব্য

258,322 জন সদস্য

28 জন অনলাইনে রয়েছে
3 জন সদস্য এবং 25 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. RTasfiat

    340 পয়েন্ট

  2. Be_Shafkat

    120 পয়েন্ট

  3. M D Akib

    110 পয়েন্ট

  4. AbbyRhea925

    100 পয়েন্ট

  5. LeighLovelad

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত #ask আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী চিকিৎসা #science পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...