বিমান কি পাখির মতো নেমোট্যাক্সেসের মাধ্যমে চলাচল করে? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+9 টি ভোট
551 বার দেখা হয়েছে
"আইকিউ" বিভাগে করেছেন (11,220 পয়েন্ট)

1 উত্তর

+1 টি ভোট
করেছেন (110,340 পয়েন্ট)
সম্পাদিত করেছেন

খুব সাধারন কিছু ট্রিক ফলো করে বিমান আকাশে উড়ে।আমরা জানি, যে কোন বস্তুর চারদিকে বাতাসের চাপ সব সময় সমান। কিন্তু তাকে শুন্যে ছেড়ে দিলে তা মাটিতে পরে যায় বস্তুর ওজন ও মধ্যাকর্ষন শক্তি'র কারনে । সুতরাং এমন একটা শক্তির ব্যবস্থা করতে হবে যাতে বস্তুর ওজন+মধ্যাকর্ষন শক্তিকে মোকাবেলা ক’রে বাতাসে ভেসে থাকা যায়।যেহেতু চারিদিকে বাতাসের চাপ সমান তাই +মধ্যাকর্ষন শক্তি'র বিপরিতদিকে বাতাসের চাপ কমালেই নীচ থেকে বাতাসে চাপ ঐ বস্তুকে ভেসে থাকতে সাহায্য করবে। এই শক্তির নামই lift।

সুতরাং যে কোন ভাবে হোক বস্তুর উপরের অংশের বাতাসে চাপ কমালেই ভেসে থাকা সম্ভব। কিন্তু তা করবো কিভাবে ???

Bernoulli principle খাস বাংলায় বলা যায় যে কোন প্রবাহিত স্রোতের কোন যায়গায় গতি বেশি হলে সেখানে তার চাপ কমে যায়।

এরোপ্লেনের উইংগুলো দেখলে লক্ষ করা যায় উপরের অংশ খানিকটা উচু কিন্তু নীচের অংশটা একদম ই ফ্ল্যাট বা সমতল।এর কারন হলো যখন রানওয়েতে এরোপ্লেনটি দ্রুতবেগে এগিয়ে যায় তখন উপরের অংশে বাতাশের চাপ কমে যায়। কারন উপরের অংশ কার্ভ হওয়ায় সেখানে বাতাসের বেগ বেশি থাকে নীচের তুলনায় ।উপরের অংশে চাপ কমতে কমতে এমন একটা অবস্থার সৃস্টি হয় যখন এরোপ্লেনটি বাতাসে ভাসতে পারে সহজেই।

ঠিক তখন ইন্জিনের Thrust বা ধাক্কাকে কাজে লাগিয়ে বিমান উপরের দিকে উঠে যেতে পারে তর তর করে।আর একবার উপরে উঠে গেলে আর বাতাশের চাপ নিয়ে ভাবতে হয়না। প্রপেলার বা জেট ইন্জিনের অনবরত ধাক্কায় বিপুল গতিতে এগিয়ে যেতে থাকে বিমান।

@কোরা

 

বিমান কিভাবে উড়ে তা জানতে চাইলে আগে জানতে হবে বিমান কোথায় উড়ে? 

 

বাতাসে! আর এই বাতাস হলো বিজ্ঞানের ভাষায় ফ্লুইড (Fluid)। পানি যেমন ফ্লুইড ঠিকতেমনি বাতাস ও ফ্লুইড। কাজেই একটা ঈগলের কিংবা একটি বিমানের আকাশে উড়া অনেকটা একটা হাঙ্গরের পানিতে সাঁতার কাটার মতই। এ কারণেই এরোডাইনামিক্সের বিভিন্ন টেস্ট আকাশে না করে প্রথমে পানির নিচে করা হয়। একটা বিমান যখন আকাশে উড়ে তখন সেটি ৪টি এরোডাইনামিক্স বল অনুভব করে।

১। ওজন-যা নিচের দিকে ক্রিয়া করে অভিকর্ষ বলের কারণে,
২। লিফট-উপরের দিকে,
৩। ড্র্যাগ(Drag)-প িছনের দিকে (একটি লাঠিকে যদি বাতাসে বা পানিতে এদিক-ওদিক নাড়ানো হয়, তবে যে বল বাঁধাদেয়ার চেষ্টা করে সেটাই ড্র্যাগ। অর্থাৎ বাতাসের বাঁধাজনিত বল।)
৪। থার্স্ট (Thrust)-সামনের দিকে।

স্পষ্টতঃ ১ ও ৩ নং বল হচ্ছে প্রাকৃতিক এবং ২ ও ৪ নং হচ্ছে কৃত্রিম, যা এদের বিপরীতে ক্রিয়া করে এবং যা বিমানকে ফুয়েল খরচ করে পেতে হয় ওজন এবং পশ্চাতমুখী টান (Drag) এর বিপরীতে ভেসে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য।
এবার আসা যাক কিভাবে বিমান এই ২ ও ৪ নং বল সৃষ্টি করে।

লিফটঃ
যে বল উড়োজাহাজকে তার ওজন বা অভিকর্ষবলের বিরুদ্ধে উড্ডয়ন করতে সাহায্য করে। স্বাভাবিকভাবেই এটি একটি উর্ধ্বমুখী বল।

আমরা জানি, যেকোন ফ্লুইডের বেগ তার প্রবাহের পথে প্রযুক্ত চাপের সমানুপাতিক, অন্যকথায় তার প্রবাহ পথের প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলের ব্যস্তানুপাতিক( V=Q/ A)। ঠিক যেমন বৈদুতিক বর্তনীতে তড়িৎ প্রবাহ রোধের ব্যস্তানুপাতিক। যদি প্রবাহের পথে কোন বাঁধার থাকে অর্থাৎ প্রবাহ পথ Narrow হয়ে যায় তবে প্রবাহের বেগ বৃদ্ধি পায় এবং চাপ হ্রাস পায়। একটা উদাহরণ দিলে ব্যাপারটা বোঝা যাবে-একটা নল দিয়ে যখন পানি আসে তখন নলটা যদি চেপে ধরা হয় তবে পানির বেগ অনেক বেড়ে যায় কিন্তু চাপ হ্রাস পায়।একই নীতি ব্যবহার করা হয় ইঞ্জিনের কার্বুরেটর কিংবা যেকোন স্প্রে(যেমনঃ এরোসল, বডি স্প্রে)র ক্ষেত্রে। এই নীতির নাম ভেঞ্চুরী নীতি (Venturi Principle) যা কিনা ফ্লুইড মেকানিক্সের বিখ্যাত বার্ণোলীর ইক্যুয়েশানের (Bernoulli's Equation) ব্যবহারিক রূপ।

বিমানের যে ডানা থাকে তার নাম উইং (Wing) বা এয়ার ফয়েল (Air Foil)। বিমানের ডানার আকার তো সবাই জানে-একটু বাঁকানো ধরণের। যখন ই একটাবিমান সামনের দিকে চলতে শুরু করে তখনএর ডানা বায়ুকে দুটি স্তরে  বিভক্ত করে ফেলে-একটি ডানার উপরের স্তর, অন্যটি নিচের। এখন ডানার উপরের বিশেষধরণের অর্ধবৃত্তাকার বা অধিবৃত্তাকার আকৃতির কারণে এর উপর দিয়ে যে বায়ু স্তর অতিক্রম করে তা বাঁধা পায় বা কম আয়তনের মধ্যে দিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ফলে বার্ণোলী নীতি অনুসারে এই বায়ু স্তরের বেগ বৃদ্ধি পায় কিন্তু চাপ হ্রাস পায়। পক্ষান্তরে ডানার নিচের তলটি সমতল বলে বায়ুস্তরের বেগ বা চাপ পরিবর্তন হয় না। সুতরাং যেহেতু ডানার উপরের বায়ুচাপ অপেক্ষা নিচের বায়ুচাপ বেশী,স্বাভাবিকভাবেই বিমানটি বায়ুর চাপে ওজনের বিপরীতে উপরের দিকে উঠবে। একেইলিফট বলে। প্রাথমিক অবস্থায় ভূমি থেকে উঠার সময় অনেক বেশী লিফট প্রয়োজন হয় বলেই বিমান ভূমি থেকে টেকঅফ করার সময় তির্যকভাবে উঠে। কারণ যতবেশী তির্যকভাবে ডানা বা উইং গুলোকে বাতাসে মুভ করানো যাবে তত বেশী লিফট পাওয়া যাবে। এখন নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন কেন টেক অফের আগে বিমানকে রানওয়েতে অতদূর চলতে হয়। কারণ এ সময় ধীরে ধীরে বিমানের বেগ বাড়তে থাকে বলে লিফটও বাড়তে থাকে এবং একটা নির্দিষ্ট বেগে নির্দিষ্ট দূরত্ব অতিক্রম করলেই লিফট বল বিমানের ওজনের চেয়ে বেশী হয় এবং বিমান ফাইনাল টেক অফ করে।বিমানকে যখন ল্যান্ডিং-এর প্রয়োজন হয় তখন বিমানের ডানা দুটিকে নিচের দিকে বাঁকা করা হয়। ফলে এখন ডানার নিচের বায়ুর চাপ ধীরে ধীরে কমতে থাকেএবং বিমান উচ্চতা হারিয়ে নিচের দিকে নামতে শুরু করে।

থার্স্ট(thurst)

বিমান তো আকাশে উঠলো, কিন্তু বাতাস তোএকে পিছনের দিকে Drag করে নামিয়ে দিতে চাইবে। কাজেই এই বলকে অতিক্রম করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হলে চাই বল বা থার্স্ট। এ বল নিউটনের গতির তৃতীয় সূত্র কাজে লাগিয়ে সৃষ্টি করা হয়। বিমানের ইঞ্জিন থাকে এর ডানায়। বিমানের উইং বা ডানায় জেট ইঞ্জিনচালিত কম্প্রেসর ঘুরলে বাইরেরবায়ু প্রচুর পরিমাণে ইঞ্জিনের ভিতরে প্রবেশ করে। ইঞ্জিনে ২টি চেম্বার থাকে। একটি কম্বাসচন চেম্বার, অন্যটিএয়ার চেম্বার। এই দুই চেম্বার থেকে প্রচন্ড বেগে বের হওয়া এক্সহস্ট গ্যাস পিছনের বায়ুতে আঘাত করে, ফলে নিউটনের তৃতীয় সূত্র অনুসারে পিছনের বায়ু থার্স্ট প্রয়োগ করে বিমান কে সামনের দিকে চলতে সাহায্য করে।

ইঞ্জিনে প্রবিষ্ট বায়ুর প্রায় ৮০% এয়ার চেম্বারের মধ্য দিয়ে বাইরে বেরিয়ে যায় এবং থার্স্ট তৈরী করে। অবশিষ্ট ২০% বায়ু দুইটি কাজ করে।

১. কম্প্রেসড হয়ে কম্বাসচন চেম্বারে প্রবেশ করে এবং ফুয়েলকে জ্বলতে সাহায্য করে। এই ফুয়েল জ্বালানীর ফলেউৎপন্ন গরম গ্যাস প্রচন্ড বেগে বের হয়ে যাওয়ার সময় কম্প্রেসরের টার্বাইনকে ঘুরায়, যা প্রকারান্তরে এর সাথে কাপল্ড সাকশান ফ্যানকে ঘুরতেসাহায্য করে, যার ফলে নতুন বায়ু কম্প্রেসড হয়ে ইঞ্জিনে প্রবেশ করে।

২. টার্বাইনকে ঘুরিয়ে যখন গরম এক্সহস্ট গ্যাস বের হয়ে যায় তখন তাও থার্স্ট সৃষ্টি করে।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+1 টি ভোট
1 উত্তর 1,383 বার দেখা হয়েছে
25 এপ্রিল 2023 "তত্ত্ব ও গবেষণা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Admin (71,300 পয়েন্ট)
+3 টি ভোট
2 টি উত্তর 6,819 বার দেখা হয়েছে
+10 টি ভোট
2 টি উত্তর 1,570 বার দেখা হয়েছে
+3 টি ভোট
1 উত্তর 2,502 বার দেখা হয়েছে
19 এপ্রিল 2021 "তত্ত্ব ও গবেষণা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Ubaeid (28,330 পয়েন্ট)

10,854 টি প্রশ্ন

18,552 টি উত্তর

4,746 টি মন্তব্য

852,163 জন সদস্য

19 জন অনলাইনে রয়েছে
0 জন সদস্য এবং 19 জন গেস্ট অনলাইনে

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ পৃথিবী এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল #science ক্ষতি চুল চিকিৎসা কী পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত মহাকাশ বৈজ্ঞানিক #biology পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান গরম খাওয়া #জানতে শীতকাল ডিম বৃষ্টি চাঁদ কেন কারণ কাজ বিদ্যুৎ রং রাত শক্তি উপকারিতা সাপ লাল মনোবিজ্ঞান আগুন গাছ খাবার সাদা মস্তিষ্ক আবিষ্কার শব্দ দুধ উপায় হাত মাছ মশা ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন কালো উদ্ভিদ পা মন কি বিস্তারিত রঙ পাখি গ্যাস সমস্যা বাচ্চা মেয়ে বৈশিষ্ট্য মৃত্যু হলুদ বাংলাদেশ সময় ব্যথা চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি কান্না দাঁত বিড়াল আম
...