বিজ্ঞানীদের মতে, ‘ঘুম’ হলো একটি পর্যাবৃত্ত (পিরিয়ডিক)। ঘুম মানে সাময়িক ভাবে হারিয়ে যাওয়া চেতনার ক্ষণ। সুস্বাস্থ্যের জন্য ঘুম অপরিহার্য। ঘুম মস্তিষ্ক সহ শরীরকে সময় দেয়, নিজেকে মেরামত করার এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি সম্পাদন করার জন্য। আমরা আমাদের জীবনের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সময় ঘুমিয়ে ব্যয় করি।
প্রক্রিয়া : নিদ্রা’ আর ‘জাগরণে’র প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ হতে দেহের যে অংশটুকুর ভুমিকা সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সেটি হলো- আমাদের মস্তিষ্কের নীচের দিকে থাকা ছোট্ট বাদামের মতো একটি অংশ। যার নাম-‘হাইপোথ্যালামাস। আমরা জেগে থাকব নাকি ঘুমিয়ে পড়ব, তার অনেকটাই নির্ভর করে ‘হাইপোথ্যালামাস’ আর ‘ব্রেন স্টেম’ নামে দু’টি বিশেষ অংশের ওপরে।তার কিছু নিউরন বা স্নায়ুকোষই এই কাজটার জন্য দায়ী। এদের দু’ভাগে ভাগ করা যায়। এর মধ্যে যে স্নায়ুকোষগুলি উত্তেজিত থাকলে আমরা এক টানা ১৬ ঘণ্টা জেগে থাকতে পারি, তারাই তখন ক্রমাগত ‘ঘুম আনার জন্য দায়ী’ স্নায়ুকোষগুলিকে দাবিয়ে রাখে।নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় দেখা গেছে, মস্তিষ্ককে উত্তেজিত রাখতে গিয়ে ‘হিস্টামিন’ নামে এক ধরনের নিউরো-ট্রান্সমিটার নিঃসরণ করে‘হাইপোথ্যালামাস’-এর ‘টিউবারো-ম্যামালিয়ারি নিউক্লিয়াস’ বা ‘TMN’ নামে স্নায়ুগুলি থেকে। ঘুমের সময়, ‘হাইপোথ্যালামাস’-এর ‘ঘুমের জন্য দায়ী’ ‘ভেনট্রোল্যাটেরাল প্রি-অপটিক নিউক্লিয়াস’ বা, ‘VLPO’ স্নায়ুকোষগুলো উত্তেজিত হয়ে ওঠে। এই সময়টিতে তারা ক্রমাগত ‘জাগিয়ে রাখার’ স্নায়ুকোষগুলোকে পুরোপুরি দাবিয়ে রাখার চেষ্টা চালায়।এভাবে ‘রাসায়নিক বার্তা’র মাধ্যমে ‘হাইপোথ্যালামাসে’র ‘TMN’ স্নায়ুকোষগুলোকে ‘জাগ্রত অবস্থা’থেকে ‘নিদ্রা’য় রুপান্তরিত করার সঙ্কেত পাঠায়।মূলত,মস্তিষ্কের এই ‘সুইচ’টিই আমাদের ‘নিদ্রা’ আর ‘জাগরণে’র জন্য দায়ী।
Shah Sultan Nur
Source : Health line,BBC