বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা কেমন? (সত্য) - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

0 টি ভোট
970 বার দেখা হয়েছে
"বাংলাদেশ ও বিশ্ব" বিভাগে করেছেন (160 পয়েন্ট)

1 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (2,160 পয়েন্ট)
বিশ্বের আরসব দেশের মতো আমাদের দেশেও রয়েছে নিজস্ব শিক্ষানীতি। সরকারি পর্যায়ের নীতি-নির্ধারকেরা তাদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে দেশের কল্যাণ-উপযোগী এ শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেন। বর্তমানে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা কেমন?

আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা তিন স্তরবিশিষ্ট। প্রাথমিক স্তর, মাধ্যমিক স্তর এবং উচ্চশিক্ষা বা বিশ্ববিদ্যালয় স্তর। সরকারি-বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো পরিচালিত হয় পাঁচ বছর মেয়াদী প্রাথমিক, সাত বছর মেয়াদী মাধ্যমিক, এর মধ্যে তিন বছর মেয়াদী জুনিয়র, দুই বছর মেয়াদী মাধ্যমিক এবং দুই বছর মেয়াদী উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়।

বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত হয়। বাংলাদেশে তৃতীয় পর্যায়ে অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা তিন থেকে পাঁচ বছর মেয়াদী। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত ৩৬টি পাবলিক ও ৭৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তত্ত্বাবধানে অধিভুক্ত কলেজের মাধ্যমে এ শিক্ষা দেয়া হয়। শিক্ষার্থীরা শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বাংলা বা ইংরেজির মধ্যে যে কোনোটিকে বেছে নিতে পারে।

 

শিক্ষা মন্ত্রণালয় হলো শিক্ষার জন্য রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ দফতর। এর অধীন কয়েকটি অধিদপ্তরে রয়েছে। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের (শিক্ষা প্রকল্প ও কারিগরি প্রকল্প) মাধ্যমে এ অধিদপ্তরগুলোর কার্যক্রম পরিচালিত হয়। সংবিধানের ১৭ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রতিটি শিশু মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত বিনামূল্যে শিক্ষা সুবিধা পাওয়ার অধিকার রাখে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দশটি (১০) শিক্ষা বোর্ডে অধিভুক্ত।

বোর্ডগুলো তিনটি পাবলিক পরীক্ষা পরিচালনা করে: জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা, মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষা এবং উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষা। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কলেজ হিসেবে পরিচিত। এছাড়া রয়েছে মাদ্রাসা ও ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল। এগুলো যথাক্রমে মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড এবং বিদেশি শিক্ষা বোর্ডের তালিকাভুক্ত। মাধ্যমিক পরবর্তী পর্যায়ে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ স্কুল পরিচালনার জন্য কারিগরি শিক্ষা বোর্ড গঠন করা হয়েছে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড প্রাথমিক, নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যবই উন্নয়ন, অনুমোদন এবং ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্ত্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশ ব্যুরো অব এডুকেশনাল ইনফরমেশন অ্যান্ড স্ট্যাটিসটিক্স (ব্যানবেইনস) গঠন করেছে, যা সব পর্যায়ের শিক্ষাসংশ্লিষ্ট তথ্য সংরক্ষণ করে। বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন সময়ে গঠিত বিভিন্ন শিক্ষা কমিশন থেকে পাওয়া তথ্য ও অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে একটি শিক্ষানীতি প্রকাশ করে। এছাড়া `অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো`র তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশে অনেক অলাভজনক সংগঠন রয়েছে, যারা সামাজিক সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য অনানুষ্ঠানিক ও আধা-আনুষ্ঠানিক শিক্ষাদান কার্যক্রম পরিচালনা করে।

আমরা জানি যে, শিক্ষা মানবিক গুণসম্পন্ন নাগরিক সৃষ্টির কারখানা। শিক্ষা মানুষের নৈতিক ভিত্তি শক্তিশালী এবং ভালো অভ্যাস রপ্ত করার সুযোগ তৈরি করে। কৃষি, শিল্প, প্রশাসনসহ প্রতিটি সেক্টরেই দক্ষ সংগঠক সৃষ্টিতে শিক্ষার বিকল্প নেই। কিন্তু পরিহাস এটাই, আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা স্থায়ী ভিত্তির ওপর এখনও দাঁড়ায়নি। আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি-বেসরকারি এ দুপর্যায়ে বিভক্ত। শিক্ষা প্রশাসন হলো সরকারি। ফলে শিক্ষায় দুর্নীতির পথটা বিস্তৃত। যদিও কেউ কেউ বলছে, শিক্ষায় দুর্নীতি কমেছে, আসলে কমেনি। শিক্ষক এবং ছাত্র উভয়কেই টু-পাইস দিয়ে শিক্ষা প্রশাসনে কাজ করাতে হচ্ছে। যারা শিক্ষা প্রশাসনে কাজ করছেন তারা প্রায় সবাই শিক্ষকতা থেকে এসেছেন; তাদের মানসিকতা নিম্নমানের হবে এটা ভাবতেও লজ্জা লাগে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন বাণিজ্যভিত্তিক ছেড়ে দেয়ায় হতদরিদ্রের সন্তানেরা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের খরচ কোনোভাবেই জোগান দিতে পারছে না। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কাদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে, এটাও বিবেচ্য বিষয় হওয়া জরুরি। একজন উগ্রবাদী যদি কোনো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব পায় সেখানে উগ্রবাদীমনা শিক্ষকরা শিক্ষকতা করার সুযোগ পেয়ে ছাত্রদের জঙ্গিবাদী দীক্ষা দেবে, এরকম ঘটনা তো এখন অহরহই ঘটছে। শিক্ষার ব্যবস্থা এক চক্ষুপনা হয়ে উঠেছে। সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে অঙ্গীকারবদ্ধ; কিন্তু দৃশ্যমান বিষয় হলো সরকার বেছে বেছে মনগড়াভাবে কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ল্যাপটপ বিতরণ করছে এবং গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানে ডিজিটালাইজ কক্ষ তৈরির সুযোগ দিচ্ছে। অনুরূপ বৈষম্য রেখে শিক্ষায় অগ্রগতি হয়েছে কথাটা নিতান্তই বেমানান।

এদিকে রয়েছে সরকারি-বেসরকারি শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য। ইনক্রিমেন্ট ও বাড়ি ভাড়ায় বৈষম্য রয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা উচ্চতর স্কেল পাচ্ছে, কিন্তু বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানেরা তা পাচ্ছে না। পাহাড়সম বৈষম্য রেখে শিক্ষায় ভালো কিছু আশা করা যায় না। শিক্ষা জাতির অগ্রগতির অন্যতম অনুষঙ্গ, তাই শিক্ষায় বৈষম্য কোনোক্রমেই বাঞ্ছনীয় নয়। এতকিছুর পরও শিক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে বছরের শুরুতে একসঙ্গে যত বই ছাত্রদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে, এটা বিশ্বের মাঝে নজির বটে। শিক্ষা ক্ষেত্রে অপরাজনীতির কারণে সংঘাতের নির্মম পথ রচিত হয়ে গেছে। যদি প্রশাসনিকভাবে শক্ত পদক্ষেপ ছাত্রদের অপকর্মের বিরুদ্ধে নেয়া হয়, শিক্ষা প্রশাসন যদি অটল ভূমিকায় থাকে তবে অনিবার্যভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কমে আসবে।

শিক্ষায় সমস্যা অদৃশ্য কিছু নয়। আবার শিক্ষায় বৈষম্যও দৃশ্যমান। স্বাধীনতার ৪৫ বছরেও এসব সমাধান হবে না, এটা ঠিক নয়। এত টাকা পাচার হচ্ছে! এত টাকা লুটপাট হচ্ছে! তাছাড়া থোক বরাদ্দের টাকাগুলোর সঠিক ব্যবহার হলে শিক্ষায় সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে যা বৈষম্য রয়েছে তা অবশ্যই সমাধান সম্ভব।

 

-ছায়াবীথি শ্যামলিমা,

সোর্সঃ Chharpatra

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

0 টি ভোট
3 টি উত্তর 269 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
1 উত্তর 187 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
1 উত্তর 348 বার দেখা হয়েছে

10,720 টি প্রশ্ন

18,363 টি উত্তর

4,729 টি মন্তব্য

240,138 জন সদস্য

39 জন অনলাইনে রয়েছে
0 জন সদস্য এবং 39 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Ayon Ratan Agni

    390 পয়েন্ট

  2. Al Moyaj Khondokar

    210 পয়েন্ট

  3. Vuter Baccha

    150 পয়েন্ট

  4. Mehedi_Bknowledge

    110 পয়েন্ট

  5. Monojit Das

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী চোখ রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #ask চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি প্রাণী স্বাস্থ্য বৈজ্ঞানিক মাথা গণিত মহাকাশ পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি #science বিজ্ঞান #biology খাওয়া শীতকাল গরম কেন #জানতে ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা মাছ মস্তিষ্ক শব্দ ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস গ্রহ স্বপ্ন রসায়ন তাপমাত্রা উদ্ভিদ কালো কি বিস্তারিত রঙ পা পাখি গ্যাস মন সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত আম বিড়াল কান্না নাক
...