একেক সাগর একেক রঙের হয় কেন? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

0 টি ভোট
316 বার দেখা হয়েছে
"পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (135,480 পয়েন্ট)

2 উত্তর

+1 টি ভোট
করেছেন (840 পয়েন্ট)

পানির রং কী?

পানি একটি যৌগিক পদার্থ যেটি মৌলিক পদার্থ হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেনের সমন্বয়ে গঠিত। যেহেতু হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন বর্ণহীন সেহেতু তাদের দ্বারা গঠিত পানি ও বর্ণহীন। এরা যে বর্ণহীন তার উদাহরণ আমাদের হাতের নাগালেই রয়েছে। আমরা নিশ্বাস এর মাধ্যমে অক্সিজেন এবং হাইড্রোজেন(বেশ সামান্য পরিমানে) গ্রহণ করি। কিন্তু আমরা এই গ্যাস গুলোর কোনো রং দেখতে পায়না। কেননা, এগুলো অদৃশ্য। তাই বিশুদ্ধ পানি ও বর্ণহীন হয়ে থাকে।

আলো ও রং কী?

এখন আমাদের জানা দরকার যে সমুদ্রের পানির রং আসলে নীল নাকি অন্য কিছু। আর এটা জানতে হলে প্রথমত প্রকৃতির আলো এবং রং সম্পর্কে জানা দরকার।

মূলত আমরা রঙিন যা কিছু দেখি তা আলোর কারসাজি। মূল কথা আলোয় রং সৃষ্টি করে থাকে।

আলো এক ধরণের তড়িৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ। এই তরঙ্গকে পরিমাপ করার জন্য 'তরঙ্গদৈর্ঘ্য' টার্ম ব্যবহার করা হয়। এর একক ন্যানোমিটার হিসাবে কাউন্ট করা হয়। প্রতিটা আলোর জন্য তরঙ্গদৈর্ঘ্য নির্দিষ্ট। আর আলোর রং মূলত আলোর বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যের জন্য হয়ে থাকে। অর্থাৎ , আলো নামক তড়িৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গের তরঙ্গদৈর্ঘ্যের পরিবর্তনের সাথে আলোর রং পরিবর্তিত হয়। যেমন - আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ যখন ৬৩৫ থেকে ৭০০ ন্যানোমিটার তখন তাকে লাল দেখায় , আবার একই আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য যখন পরিবর্তিত হয়ে ৪৫০ থেকে ৪৯০ ন্যানোমিটার হয় তখন তাকে নীল দেখায়।

আমরা বিভিন্ন বস্তুর রং বিভিন্ন রঙের দেখে থাকি। কারণ বিভিন্ন বস্তু থেকে বিভিন্ন রঙের আলো প্রতিফলিত হয়ে আমাদের চোখে আসে। আমরা যেই রঙের বস্তুই দেখি না কেন তার মানে হলো বস্তু ওই রঙের আলো শোষণ করে না, বাকি সব রঙের আলো শোষণ করে। যখন আমরা কোনো সাদা বস্তু দেখি তার মানে হলো ওই বস্তু কোনো তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো শোষণ করেন , সব তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো প্রতিফলিত করে দেয়। আবার কালো রঙের বস্তু দেখি কারণ ঐ বস্তু সব তরঙ্গধ্যৈর্ঘের আলো শোষণ করে নেয়।

সমুদ্রের পানি নীল কেন?

এখন আমরা মূল প্রশ্নে আসি। নীল আকাশের প্রতিফলনের কারণে বড় লেক বা সমুদ্রের পানি নীল দেখায় এটা আমরা সাধারণ ভাবে ধরে নিই। কিন্তু এটা মূল কারণ নয়। আসলে সমুদ্রের পানি নীল এবং সে কারণেই মূলত সমুদ্র নীল দেখায়। যদিও কথাটা বিশ্বাস হচ্ছেনা। কেননা একটু আগেই উপরে আলোচনা করা হয়েছে যে পানি আসলে বর্ণহীন। এখন সমুদ্রের পানি নীল কিনা সেটা জানতে হলে আমাদের পানিতে আলোর ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে জানতে হবে।

আমরা জানি সূর্যের আলো বা রোদ মূলত সাতটি ভিন্ন ভিন্ন রঙের সমষ্টি। বেগুনি, নীল, আসমানী, সবুজ, হলুদ, কমলা, লাল। এই বিভিন্ন রঙের আলো তার তরঙ্গদৈর্ঘ্যের ভিত্তিতে পরপর সজ্জিত থাকে। এখন পানির একটি বিশেষ ধর্ম হলো অপেক্ষাকৃত বেশি তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো শোষণ করা এবং কম তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো শোষণ না করা। সুতরাং সূর্যের আলো যখন সমুর পৃষ্ঠে পড়ে তখন লাল, কমলা ও হলুদ রঙের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেশি হওয়াতে সমুদ্রের পানি কর্তৃক দ্রুত শোষিত হয়, কিন্তু অপেক্ষাকৃত নীল রঙের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম হওয়াতে তা কম শোষিত হয়। ফলে নীল রঙের আলো দ্রুত সমুদ্র গর্ভের প্রায় ৩০ মিটার পর্যন্ত ঢুকে পড়ে এবং অশোষিত নীল আলো প্রতিফলিত হয়ে আমাদের চোখে লাগে।

image

ছবি : নীল সাগর

ফলে এই নীল আলোর মিশ্রনে পানি কিছুটা নীলাভ রং ধারণ করে। কিন্তু এটা এটি সামান্য যে সহজে বোঝা যায় না। সমুদ্র বা বড় লেকের পানির পরিমান ও গভীরতা বেশি বলে সেখানে নীলের আধিক্য চোখে ধরা পড়ে। ফলশ্রুতিতে সমুদ্রের পানি নীল দেখায়। তাছাড়া লবন ও অন্যান্য খনিজের রং ও সমুদ্রের পানিতে কিছুটা দেখা যায়। পরিষ্কার নীল আকাশ থাকলে তার প্রতিফলন ও সমুদ্রের পানিতে ঘটে। কিন্তু সে জন্য সমুদ্র মোটামুটি শান্ত থাকতে হবে আর সেই নীল আকাশের ছায়া দেখার জন্য একটু নিচু হয়ে অন্তত ১০ ডিগ্রির কম কোন তাকাতে হবে।

তবে সমুদ্রের পানি যে শুধু নীল হয় তা কিন্তু সঠিক নয়। যেমন আটলান্টিকের পানির রং সবুজ। আবার লোহিত সাগরের পানির রং লাল। শুধু কী তাই ! কালো রঙের পানি বিশিষ্ট সাগরও রয়েছে কিন্তু। তাছাড়া তাকে লাগিয়ে দেয়ার মতো হলুদ রং বিশিষ্ট পীত সাগর ও আছে। আর বিভিন্ন রঙের পানি হওয়ার পেছনে রয়েছে বিভিন্ন কারণ।

image

ছবি : আটলান্টিকের সবুজাভ উপকূল

image

ছবি : লোহিত সাগর

image

ছবি : কৃষ্ণ সাগর

image

ছবি : পীত সাগর

তথ্যসূত্র : ব্যাপন (বিজ্ঞান সাময়িকী)ক

0 টি ভোট
করেছেন (43,970 পয়েন্ট)

এখন পানির একটি বিশেষ ধর্ম হলো অপেক্ষাকৃত বেশি তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো শোষণ করা এবং কম তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো শোষণ না করা। সুতরাং সূর্যের আলো যখন সমুর পৃষ্ঠে পড়ে তখন লাল, কমলা ও হলুদ রঙের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেশি হওয়াতে সমুদ্রের পানি কর্তৃক দ্রুত শোষিত হয়, কিন্তু অপেক্ষাকৃত নীল রঙের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য কম হওয়াতে তা কম শোষিত হয়।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+13 টি ভোট
2 টি উত্তর 759 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
4 টি উত্তর 834 বার দেখা হয়েছে
24 জানুয়ারি 2022 "তত্ত্ব ও গবেষণা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Subrata Saha (15,200 পয়েন্ট)
+2 টি ভোট
4 টি উত্তর 1,929 বার দেখা হয়েছে
+6 টি ভোট
2 টি উত্তর 7,256 বার দেখা হয়েছে
02 ফেব্রুয়ারি 2021 "রসায়ন" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন মেহেদী হাসান (141,820 পয়েন্ট)

10,723 টি প্রশ্ন

18,367 টি উত্তর

4,730 টি মন্তব্য

241,008 জন সদস্য

71 জন অনলাইনে রয়েছে
1 জন সদস্য এবং 70 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Ayon Ratan Agni

    390 পয়েন্ট

  2. Al Moyaj Khondokar

    210 পয়েন্ট

  3. Vuter Baccha

    150 পয়েন্ট

  4. Hasan rafi

    140 পয়েন্ট

  5. Mehedi_Bknowledge

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী চোখ রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #ask চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি প্রাণী স্বাস্থ্য বৈজ্ঞানিক মাথা গণিত মহাকাশ পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি #science বিজ্ঞান #biology খাওয়া শীতকাল গরম কেন #জানতে ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা মাছ মস্তিষ্ক শব্দ ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন গ্রহ রসায়ন তাপমাত্রা উদ্ভিদ কালো কি বিস্তারিত রঙ পা পাখি গ্যাস মন সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত আম বিড়াল কান্না নাক
...