ডি ব্রগলিয়ে সমীকরণ থেকে আমরা পাই , m=h/λc ,এখান থেকে অতিক্ষুদ্র হলেও আলোর কিছুটা ভর পাওয়া যায় ।আইন্সটাইন এর আপেক্ষিক ভরের সমিকরনে নিশ্চল ভর m0( m not) = 0 বসালে মোট ভর ও ০ ই থাকে। তাহলে ডি ব্রগলিয়ে সমীকরণ থেকে আলোর ভর পাওয়া গেলেও আইনস্টাইন এর সমীকরণ থেকে কেন আলোর ভর পাওয়া যায় না? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+10 টি ভোট
1,347 বার দেখা হয়েছে
"পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (220 পয়েন্ট)

2 উত্তর

+4 টি ভোট
করেছেন (71,000 পয়েন্ট)
বিজ্ঞানচিন্তার দপ্তরে অনেক চিঠি আসে, একটা প্রশ্নের উত্তর চেয়ে। মেসেজ আসে বিজ্ঞানচিন্তা গ্রুপ কিংবা ফেসবুক পেজে, একই প্রশ্ন। একটুখানি ফিজিকস গ্রুপের দেয়ালে আছড়ে পড়ে প্রশ্নের ঢেউ- ফোটনের ভর নেই কিন্তু ভরবেগ আছে কেন?

এখানেই আসলে ভরশক্তির সমীকরণের কারিশমা। ধরা যাক, একটা ইলেকট্রন। এর গতি নির্দিষ্ট নয়। কিন্তু একেবারে থেমে থাকা ইলেকট্রনের দেখাও আপনি পাবেন না। তাই যেকোনো ছুটন্ত ইলেকট্রনের ভরবেগ আপনি পাবেন। আলোর তো আর নিশ্চল ভর নেই, তাহলে এর ভরবেগ আসে কোত্থেকে?

এখানেই আসলে আলোর বিচিত্র চরিত্রের খেলা। আলো এক ধরনের শক্তি, সে আমরা সেই প্রাইমারি স্কুল থেকে পড়ে আসছি। আবার শক্তির সঙ্গে ভরবেগের সম্পর্ক আছে।

বিস্তারিত ব্যাখ্যায় যাওয়ার আগে জানা দরকার, ভরবেগ নিয়ে বাংলা ভাষায় জটিলতা আছে। আমরা যেটাকে বাংলায় ‘ভরবেগ’ বলি, এই শব্দটা দেখলেই বোঝা যায়, ভর আর বেগ দুটোই যেন ডট গুননের নিয়মে পাশাপাশি বসে গেছে। কিন্তু ইংরেজি শব্দটা হলো মোমেন্টাম (momentum)। এখানে ভর অর্থাৎ ম্যাস (mass) কিংবা বেগ, ইংরেজিতে যাকে বলে ভেলোসিটি (Velocity)- এই দুইয়ের নামগন্ধই নেই এই ‘মোমেন্টাম’ শব্দটির মধ্যে। তাই বাংলা ভরবেগ শব্দটা দেখলে আমরা সরলীকরণ করে ফেলি, বস্তুর মোমেন্টাম থাকতে হলে ভর থাকতেই হবে। ঝামেলাটা তৈরি হয়েছে চিরায়ত গতিবিদ্যায় মোমেন্টামের যে সংজ্ঞা আছে সেখান থেকেই।

চিরায়ত গতিবিদ্যায় মোমেন্টামের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলা হয়েছে, বস্তুর ভর আর বেগকে গুন করে ফলাফল হিসেবে পদার্থবিদ্যার যে রাশিটি পাওয়া যাবে, তাকেই বলে মোমেন্টাম। সুতরাং বাংলা বৈজ্ঞানিক পরিভাষাবিদরা সেটা ‘ভরবেগ’ বানিয়ে ফেলছেন। চিরায়ত বলবিদ্যায় এটাতে সমস্যা থাকারও কথা নয়। সমস্যা হয় তখন, যখন খুদে কণিকাদের হিসাব এসে পড়ে। বিশেষ করে কোয়ান্টাম বলবিদ্যায় মোমেন্টামের হিসাব মোটেও ভর আর বেগের গুনফল দিয়ে করলে চলে না। কারণ কণাদের ভর থাকতেও পারে নাও পারে। কিন্তু শক্তি আছে। আবার একই সঙ্গে কণা আর তরঙ্গ চরিত্রও রয়েছে এদের। সুতরাং মোমেন্টামের ভেতর কোয়ান্টামের ব্যাপার-স্যাপার না এলে হিসাব মিলবে কী করে?

আবার কণাদের ভর না থাকলেও তারা অন্যবস্তুকে মোমেন্টাম অর্থাৎ ভরবেগ দিতে পারে, ঠিক যেমন গতিশীল এক বড় গাড়ি একটা সিএনজি অটোরিক্সাকে ধাক্কা দিয়ে সেটাকে গতিশীল করে দিতে পারে। অর্থাৎ থেমে থাকা একটা অটোরিক্সাকে যদি কোনো প্রাইভেট কার এসে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়, তাহলে অটোরিক্সাটি গাড়ির কাছ থেকে ভরবেগ লাভ করে এবং সামনের দিকে গতিশীল হয়। অন্যদিকে ধাক্কার ফলে প্রাইভেট কারটির গতি কিছুটা কমে যায়, সুতরাং ভরবেগও কমে যায়। আর গাড়ির ভরবেগ ততটুকুই কমবে, যতটুকু ভরবেগ সিএনজি অটোরিক্সাটি লাভ করবে। ঠিক একই ঘটনা ঘটে আলোকতড়িৎক্রিয়ার ক্ষেত্রেই।

আলোকতড়িৎক্রিয়া প্রথম পর্যবেক্ষণ করেণ ব্রিটিশ বিজ্ঞানী হেনরিখ হার্জ, ১৮৮৭ সালে। একই বছর একই ব্যাপার লক্ষ্য করেন জার্মান বিজ্ঞানী ভিলহেম হলকওয়াস। এসময় বিশ্বজড়ে বিজ্ঞানীরা ক্যাথোড রশ্মি নিয়ে ব্যস্ত। ক্যাথোড রশ্মি আসলে কণাদের স্রোত না আলোর রশ্মির প্রবাহ, তা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত গোটা দুনিয়ার বিজ্ঞানীরা। ক্যাথোড রশ্মির পরীক্ষাগুলো চলে বায়ুশূন্য ক্যাথোড টিউবের ভেতর। এই টিউবে যে ক্যাথোড দণ্ড ব্যবহৃত হয়, সেগুলো ধাতুরই তৈরি। হার্জ ক্যাথোড দণ্ডকে অতিবেগুনি রশ্মি দিয়ে আঘাত করেন। এর ফলে সেটা থেকে নির্গত হয় ক্যাথোড রশ্মি। হার্জের বিশ্বাস ছিল ক্যাথোড রশ্মিও এক ধরণের আলোর কণা, তাই ফটোতড়িৎ ক্রিয়ার মাহত্ম্য বোঝা তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়নি। পরে অবশ্য হলকওয়াসকেও ভাবিয়েছিল এই ঘটনা। তিনি আরও পরীক্ষা-নিরিক্ষা চালান। আরেকটু স্পষ্ট হয় ব্যাপারটা। কিন্তু, ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। হার্জ-হলকয়াকেরও দেড় দশক আগে একটু অন্যভাবে ব্যাপারটা পর্যবেক্ষণ করেন এক ব্রিটিশ তড়িৎপ্রকৌশলী উলাফবি স্মিথ। কিন্তু তিনি মাথামুণ্ডু কিছুই বোঝেননি। এরপর ১৮৯৯ সালে আলোকতড়িৎক্রিয়া নিয়ে ব্যাপকভাবে কাজ করেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী জে জে টমসন। আসলে এই ঘটনা নিয়ে গবেষণা করতে গিয়েই তিনি নিশ্চিত হন ক্যাথোড রশ্মি আসলে আলোক রশ্মি নয়, ইলেকট্রন কণার স্রোত। অর্থাৎ ইলেকট্রন কণাটাই টমসন আবিষ্কার করে বসেন ক্যাথোড রশ্মি নিয়ে পরীক্ষা করতে গিয়ে। কিন্তু কেন ক্যাথোড দণ্ডে আলো ফেললে সেখান থেকে ইলেকট্রন কণা নির্গত হবে, সে বিষয়টা নিশ্চিত হতে পারেননি টমসন।

কাছাকাছি সময় এই ঘটনা নিয়ে আরও বিস্তারিত গবেষণা করেন ফিলিপ লেনার্ড। কিন্তু ব্যাখ্যা মেলেনি। ব্যাপারটা ছিল এমন-- ধাতব ক্যাথোড পাত ওপর পাত থেকে ক্যাথোড রশ্মির আকারে আসলে ইলেকট্রন কণাই বেরিয়ে আসছে। সমস্যা আলোকে তখন সবাই তরঙ্গ মনে করত, নিউটনের কণা তত্ত্ব বাতিল করেছিলেন জার্মান বিজ্ঞানী হেনরিখ হাইগেনস শ দেড়েক বছর আগেই। যে জিনিস নিজে তরঙ্গ, তারপক্ষে কীভাবে সম্ভব একটা ধাতব পাত থেকে রীতিমত ভরযুক্ত একটা কণাকে মুক্ত করা?

পাঠক, এখন আবার আমাদের ফিরে যেতে হবে অটোরিক্সা আর প্রাইভেট কারের কাছে। ভাবুন তো একটা স্থির অটোরিক্সার ওরর লক্ষ-কোটি ওয়াটের এক টর্চের আলো ফেলে সেটাকে নড়াতে পারবেন? আপাতদৃষ্টিতে সেটা সম্ভব নয়। কিন্তু আলোর বদলে যদি বাতাস প্রবাহিত করেন? খুব কম বাতাস হলে চলবে না। কিন্তু বাতাসের বেগ যদি খুব বেশি হয়, ধরা যাক সেটা বিশাল এক ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়ে এলো, তাহলে? শুধু অটোরিক্সা কেন, প্রাইভেট কারকেও উড়িয়ে নিতে পারে। তবে সেটা বাতাস বলেই সম্ভব। কারণ বাতাস বস্তু, ভর আছে, মোমেন্টাম আছে। কিন্তু তরঙ্গ? সেই যুগে তরঙ্গের শক্তির কথা জানত সবাই, কিন্তু তার যে মোমেন্টাম থাকতে পারে একথা ভাবার সাহসই ছিল না। কিন্তু একজন জার্মান, যিনি কৃষ্ণবস্তুর বিকিরণ সমস্যার সমাধান করতে গিয়ে দেখালেন দুঃসাহস। বললেন, বিকিরণ, যাকে আমরা শক্তি বলে জানি, সেই শক্তি নির্গত হয় গুচ্ছ গুচ্ছ আকারে। অর্থাৎ যাবতীয় বিকিরণ শক্তি যাকে আমরা এতদিন নিরবিচ্ছিন্ন শক্তি প্রবাহ বলে ভাবতাম, তা আসলে নিরবিচ্ছিন্ন প্রবাহ নয়। যাঁরা রাইচমিলে ধান ভাঙানো দেখেছেন, তাদের জন্য ব্যাপারটা বোঝা সহজ হবে।

রাইচ মিলের হলার থেকে যখন প্রচণ্ডবেগে চাল বেরিয়ে আসে, তখন মনে হয় ঝর্নার ধারার মতো একটা চালের ধারা বেরিয়ে আসছে। এগুলো যে অসংখ্য চালের সমষ্টি, তখন তা বোঝা যায় না। মনে হয় ধূসর রঙের একটা নিরবিচ্ছিন্ন ধারা হলার থেকে নিচে নেমে আসছে। কিন্তু সেখন থেকে একমুঠো চাল হাতে নিয়ে দেখুন, প্রতিটা চাল তখন আলাদা করে চিনতে পারবেন। ঝর্নার পানির ক্ষেত্রেও একই ব্যপার। আপাত দৃষ্টিতে মনে হয়, ঝর্নার ধারা নিরবিচ্ছিন্ন। কিন্তু একথা তো সত্যি, এই পানির ধারাগুলো ট্রিলিয়ন-ট্রিলিয়ন পানির অণু দিয়ে তৈরি। কষ্টসাধ্য হলেও পানির ধারা থেকে পানির অণুগুলো আলাদা করা যায়।

চলবে...
+3 টি ভোট
করেছেন (71,000 পয়েন্ট)
প্ল্যাঙ্কও বললেন, পানির অণুর মতো কিংবা রাইচ মিলের প্রতিটা চালের মতো বিকিরণ বা আলোরও এমন খুদে কণা জাতীয় কিছু আছে। ১৯০৫ সালে আইনস্টাইন বললেন আক্ষরিক অর্থেই বললেন, আলোক রশ্মিগুলো রীতিমতো অসংখ্য কণা দিয়ে তৈরি। ২১ বছর পর ১৯২৬ সালে সেই কণার নাম দেওয়া হয় ফোটন। ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক বিকিরণ শক্তি তথা গুচ্ছের তত্ত্ব দিয়েছিলেন কৃষ্ণবস্তির বিকিরণ শক্তির সমাধান করার জন্য, আইনস্টাইন আলোর কণাতত্ত্ব ব্যাবহার করলেন আলোকতড়িৎক্রিয়ার ধর্ম ব্যাখ্যা করতে।

ওপরে যে প্রশ্নটার কথা বলেছিলাম, সেটাতে আবার ফিরে আসি, ভরহীন তরঙ্গের পক্ষে কি ধাতু থেকে ইলেকট্রন মুক্ত করা সম্ভব? আইনস্টাইন বললেন সম্ভব, কারণ আলো শুধু তরঙ্গই নয়, একই সঙ্গে কণাও। আলোর কণাদের যদি বস্তু কণার মতো যদি যথেষ্ট শক্তি থাকে, তাহলে সে ধাতব পাতকে আঘাত করে সেখান থেকে ইলেকট্রনকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে পারে। সেই মুক্ত ইলেকট্রন যেহেতু ধাতু থেকে ছুটে বেরিয়ে যায়, সুতরাং সে ভরবেগ লাভ করে। আর এই ভরবেগের জোগান দেয় আঘাতকারী আলোর কণা, যার পোশাকি নাম পরে হয়েছিল ফোটন। তাহলে নিশ্চয় ফোটনেরও মোমেন্টাম অর্থাৎ ভরবেগ আছে?

আইনস্টাইন বললেন, আসলেই ভরবেগ আছে ফোটন কণাদের।

সে বছরই আইনস্টাইন তাঁর বিশেষ আপেক্ষিক তত্ত্ব প্রকাশ করেছিলে। সেখানে আবার বলেছিলেন, আলোর কণার ভর নেই। তাহলে কি স্ববিরোধী হয়ে গেল কথাটা?

না, কারণ আইনস্টাইন স্পেশাল থিওরি অব রিলেটিভিটির সাহায্যেই দেখিয়েছিলেন, ভর না থালকলেও কীভাবে আলোর কণাদের ভরবেগ বা মোমেন্টাম থাকে। সেটা আলোচনা করেই আমরা এই লেখার সমাপ্তি টানব। তার আগে আরেকটা বিষয় পরিষ্কার হওয়া দরকার।

অনেকেই বলেন, ফোটনের নিশ্চল ভর শূন্য[1] হলেও এর আপেক্ষিক ভর আছে। কারণ ফোটন গতিশীল কণা। আর গতিশীল কণাদের ভর বৃদ্ধি পায় সে কথা থিওরি অব রিলেটিভিটিতেই বলা হয়েছে। এই ধারণা কিন্তু ঠিক নয়। দুটো কারণে ঠিক নয়। প্রথম কারণ থিওরি অব রিলেটিভিটিতে ভর বৃদ্ধির যে সমীকরণ দেওয়া হয়েছে, সেখানে কিন্তু ভরশূন্য বস্তুর ভর বাড়বে এমন কথা বলা হয়নি। বরং যেসব বস্তুর খুব সামান্য হলেও ভর আছে, তাদের ক্ষেত্রেই ভর বাড়বে। প্রয়োজনে আপনি ভর বৃদ্ধির সমীকরণে ফোটনের ভর বসিয়ে দেখতে পারেন। এটা যদি করতে যান, তাহলে আপনার বস্তুর বেগের মানের জায়গায় ফোটনের বেগের মান (cc) বসাতে হবে। আর তখন পুরো সমীকরণেই প্যাঁচ লেগে যাবে। সুতরাং ভর শূন্য থেকে বেড়ে যাবে, এ হিসাব আপনি কখনোই মিলাতে পারবেন না।

এবার আসা যাক দ্বিতীয় কারণে। আর এটাই সবচেয়ে বড় কারণ। আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্বের সমীকরণগুলো গড়েই উঠেছে আলোর বেগ পরম বা ধ্রুবক ধরে। স্থির বা গতিশীল কোনো কাঠামোতেই এর কোনো নড়চড় হবে না। তার মানে ফোটনের কোনো আপেক্ষিক বেগ থাকে না। আর আপেক্ষিক বেগ না থাকলে এর ভর বৃদ্ধিও সম্ভব নয়। সুতরাং গতির কারণে ফোটনের ভর বাড়ছে, তার কারণে ফোটন লাভ করছে ভরবেগ একথার কোনো যুক্তিই নেই।

তাহলে মোমেন্টামটা আসছে কোথা থেকে? এই সমস্যার সমাধানও দিয়েছিলেন আইনস্টাইন আপেক্ষিকতা থেকেই, ভরশক্তির সমীকরণের মাধ্যেম। আইনস্টাইন বলেছিলেন ফোটনের মোমেন্টাম আসে এর গতিশক্তি থেকে। ভরশক্তির সমীকরণ থেকেই পাওয়া যায় ভরকে শক্তিতে রূপান্তর মন্ত্র। আবার ভরযুক্ত বস্তুকে গতিশীল করতে পারলে বস্তটি ভরবেগ লাভ করে। তাহলে শক্তি আছে এমন যেকোনো বস্তুর পক্ষেই মোমেন্টাম বা ভরবেগ লাভ করা সম্ভব, যদি বস্তুটির গতি থাকে। ফোটনের তো চিরগতিশীল কণা, কখনো থামে না। তাহলে এই কণার গতিশক্তি থাকবে, তাই এর মোমেন্টামও থাকবে।

যার নিশ্চল ভর শূন্য তার ভরবেগ কীভাবে থাকে? ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করা যায়, আইনস্টাইনের ভরশক্তির সমীকরণ থেকে। চাইলে কোয়ান্টাম তত্ত্বও যোগ করা যেতে পারে। আসুন আমরা দেখে নিই ভরশক্তির সমীকরণ কী বলে?

আইনস্টিইনের ভরশক্তির সমীকরণের আরেকটি রূপ হলো,

E2=(pc)2+(m0c2)2E2=(pc)2+(m0c2)2 ………. (১)

এখানে EE হলো বস্তুটির শক্তি, pp হলো ভরবেগ, cc আলোর বেগ এবং m0m0 বস্তুটির নিশ্চল অবস্থার ভর।

এখন এই সূত্র আমারা ফোটন কণার জন্যও প্রয়োগ করতে পারি। তাহলে ফোটনের নিশ্চল অবস্থার ভর m0=0m0=0 হবে। ফোটনের জন্য ওপরের সমীকরণটি দাঁড়ায়-

E2=p2c2E2=p2c2

বা, E=pcE=pc

p=Ecp=Ec ………. (২)

এখানে ২ নং সমীকরণটিই হলো ফোটনের ভরবেগের সমীকরণ। অর্থাৎ ফোটনের শক্তিকে এর বেগ দিয়ে ভাগ করলেই মোমেন্টাম অর্থাৎ ভরবেগ পেয়ে যাব।

এখানে বিশেষ আপেক্ষিতা দিয়ে দেখানো হয়েছে ভরশূন্য ফোটনের ভরবেগ নির্ণয়ের সূত্রটি। তবে এখানে কিন্তু ফোটনকে কণা হিসেবেই দেখিয়েই ভরবেগ বের করা হয়েছে। কিন্তু ফোটন তো শুধু কণা নয়। একই সঙ্গে তরঙ্গও। তরঙ্গই যদি হয় এর ভরবেগ তাহলে কী হবে?

সেক্ষেত্রে আমাদের ম্যাক্স প্ল্যাঙ্কের সেই কোয়ান্টাম তত্ত্বের সমীকরণটিতেই ফিরে যেতে হবে। প্ল্যাঙ্কের সমীকরণ থেকে আমরা জানি, কোনো তরঙ্গ গুচ্ছের শক্তি,

E=\hνE=\hν

এখানে h হলো প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবক, v (এটা গ্রিক বর্ণ নিউ ইংরেজি ভি নয় কিন্তু) হলো তরঙ্গের কম্পাঙ্ক। এখনা থেকে E এর মান ২ নং সমীকরণে বসিয়ে পাই-

p=\h\vcp=\h\vc ...................(৩)

এই তিন নম্বর সমীকরণটিই দেখায়, একটা ভরহীন আলোক তরঙ্গের ভরবেগ কী হবে। অর্থাৎ ফোটনের কম্পাঙ্ককে প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবকের সঙ্গে গুন করলের যে গুনফল পাব, তাকে আলোর বেগ দিয়ে ভাগ করলেই পেয়ে যাব ফোটনের ভরবেগ। এর জন্য ফোটনের ভর থাকার কোনো প্রয়োজন নেই। তাহলে, এখন নিশ্চতভাবেই বলতে পারেন, কেন ফোটনের ভর না থাকলেও কেন ভরবেগ আছে।

লেখকঃ আব্দুল গাফফার রনি

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

10,723 টি প্রশ্ন

18,367 টি উত্তর

4,730 টি মন্তব্য

241,474 জন সদস্য

50 জন অনলাইনে রয়েছে
2 জন সদস্য এবং 48 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Ayon Ratan Agni

    390 পয়েন্ট

  2. Al Moyaj Khondokar

    210 পয়েন্ট

  3. Vuter Baccha

    150 পয়েন্ট

  4. Hasan rafi

    140 পয়েন্ট

  5. Israt Jahan Taha

    130 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী চোখ রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #ask চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি প্রাণী স্বাস্থ্য বৈজ্ঞানিক মাথা গণিত মহাকাশ পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি #science বিজ্ঞান #biology খাওয়া শীতকাল গরম কেন #জানতে ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা মাছ মস্তিষ্ক শব্দ ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন গ্রহ রসায়ন তাপমাত্রা উদ্ভিদ কালো কি বিস্তারিত রঙ পা পাখি গ্যাস মন সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত আম বিড়াল কান্না নাক
...