সোডিয়াম ও ক্লোরিন দুটি উপাদানই আলাদাভাবে অত্যন্ত বিপজ্জনক। সোডিয়াম একটি ধাতু যা পানির সংস্পর্শে এলেই বিষ্ফোরণ ঘটায়, বাতাসের সংস্পর্শে এলে দাহ্য পদার্থ হিসেবে কাজ করে। ক্লোরিন একটি বিষাক্ত গ্যাস যা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে আমাদের শরীরে গেলে আমাদের মৃত্যুও ঘটাতে পারে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হলো, এই দুই বিপজ্জনক উপাদান একসাথে মিলেই তৈরি করে আমাদের প্রতিদিনের জীবনে ব্যবহৃত নিরীহ খাবার লবণ, অর্থাৎ সোডিয়াম ক্লোরাইড (NaCl)। এটা সম্ভব হয় রসায়নের একটি বিশেষ বন্ধনের কারণে, যাকে বলা হয় আয়নিক বন্ধন। সোডিয়াম তার একটি ইলেকট্রন ক্লোরিনকে দিয়ে দেয়, ফলে সোডিয়াম হয়ে যায় ধনাত্মক আয়ন (Na⁺) এবং ক্লোরিন হয়ে যায় ঋণাত্মক আয়ন (Cl⁻)। এই বিপরীত চার্জের কারণে তারা পরস্পরকে আকর্ষণ করে এবং একত্রে একটি স্থিতিশীল যৌগ গঠন করে (NaCl)।
যৌগটি তৈরি হওয়ার পর আগের উপাদানগুলোর বিপজ্জনক বৈশিষ্ট্য আর প্রকাশ পায় না কারণ তাদের ইলেকট্রন বিন্যাস তখন সম্পূর্ণ এবং স্থিতিশীল। এভাবেই বিপজ্জনক দুই উপাদান একসাথে হয়ে পরিণত হয় নিরাপদ, প্রয়োজনীয় ও জীবনরক্ষাকারী পদার্থে যা শুধু নিরাপদই নয় বরং শরীরের জন্য অপরিহার্য। এরা শরীরের বিভিন্ন কাজ (যেমন: স্নায়ুর সিগনাল, পেশী চলাচল, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ) ঠিক রাখতে সাহায্য করে।