কোনো শ্যামলা মানুষ যদি অনেক বছর ইউরোপের কোনো বরফ শীতল দেশে থাকে তাহলে কি তার গায়ের রং পুরোপুরি ফর্সা হয়ে যাবে? জেনেটিক্যাল কোনো পরিবর্তন আসবে? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

0 টি ভোট
281 বার দেখা হয়েছে
"জীববিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (4,940 পয়েন্ট)

2 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (4,940 পয়েন্ট)
আরব দেশের মানুষরা জেনেটিক ভাবেই উজ্জ্বল বর্ণের অধিকারী। ইউরোপিয়ান, মিডেল ইষ্ট ও নর্থ আমেরিকার বংশগতভাবে উজ্জ্বল বর্ণের মানুষদের কওকাসিয়ান বলা হয়।

মেলানিন উৎপাদনের পেছনে মূল উপাদান হলো আমাদের DNA। মেলানিন দুই ধরনের থাকে ইউমেলানিন যেটা শ্যামলা বর্নের জন্য দায়ী আরেকটি ফিওমেলানিন যেটা উজ্জ্বল বর্নের জন্য দায়ী। মেলানিন তৈরির পেছনে কিছু এনজাইম কাজ করে যার প্রধানাটি হলো টাইরোসিনেস।DNA থেকে mRNA তৈরি হয় যার থেকে টাইরোসিনেস তৈরি হয়। এই এনজাইমের সঙ্গে DOPA, একটি এমাইনো এসিড এর রিয়াকশনের ফলে DOPA quinone তৈরি হয় যা ইউমেলানিন উৎপাদন করে। আবার এই DOPA quinone এর সঙ্গে Cystein যা আরেকটি এমাইনো এসিড, রিয়াকশন করে উৎপাদন করে ফিয়োমেলানিন। যার শরীরে যত বেশি cystein উৎপাদন হয় এবং DOPA quinone এর সঙ্গে বিক্রিয়া করে ফিয়োমেলানিন তৈরি করে তার বর্ণ তত উজ্জ্বল। এটি প্রায় সম্পূর্ণ নির্ভর করে আমাদের DNA এর উপর।

 

আর বাকি কিছু ফ্যাক্টর যার জন্য আমাদের বর্ণ উজ্জ্বল কিংবা শ্যামলা হয় তা হলো ভৌগোলিক অবস্থান। কোনো শ্যামলা মানুষ যদি অনেক বছর ইউরোপের কোনো বরফ শীতল দেশে থাকে তার গায়ের রং কিছুটা উজ্জ্বল হলেও সম্পূর্ণ ইউরোপিয়ানদের মত হয়ে যাবে না। আবার কোনো উজ্জ্বল বর্ণের মানুষ আফ্রিকার কোনো দেশে বহুবছর থাকলেও তার গায়ের রং একদম গাঢ় হয়ে যাবে না।
0 টি ভোট
করেছেন (700 পয়েন্ট)

ত্বকের রং কি পুরোপুরি সাদা হয়ে যাবে?

না, কোনো গাঢ় ত্বকের মানুষ যদি ঠান্ডা ইউরোপীয় দেশে অনেক বছর ধরে বাস করে, তাহলে তার ত্বকের রং পুরোপুরি সাদা হয়ে যাবে না। ত্বকের রং প্রধানত নির্ভর করে মেলানিন নামক একটি পিগমেন্টের ওপর। এই মেলানিন তৈরি হয় আমাদের ত্বকের কোষে, যাকে বলে মেলানোসাইট। মেলানিনের পরিমাণ এবং ধরন (ইউমেলানিন বা ফিওমেলানিন) আমাদের ত্বকের রং নির্ধারণ করে। যারা গাঢ় ত্বকের, তাদের শরীরে ইউমেলানিন বেশি থাকে, আর যারা ফর্সা, তাদের কম থাকে।

এখন, আপনি যদি ঠান্ডা দেশে চলে যান, যেখানে সূর্যের আলো কম, তাহলে তোমার ত্বক মেলানিন কম তৈরি করতে পারে। কারণ মেলানিনের কাজ হলো সূর্যের আল্ট্রাভায়োলেট (UV) রশ্মি থেকে ত্বককে রক্ষা করা। সূর্যের আলো কম থাকলে, শরীর বুঝতে পারে যে এত মেলানিনের দরকার নেই। ফলে কিছুটা ত্বক হালকা হতে পারে। এটা আমরা প্রায়ই দেখি—যারা গরম দেশ থেকে ঠান্ডা দেশে যায়, তাদের ত্বক কিছুটা ফ্যাকাশে হয়ে যায়। কিন্তু পুরোপুরি সাদা হওয়া সম্ভব নয়, কারণ আপনার ত্বকের মূল রং আপনার জিনের ওপর নির্ভর করে। পরিবেশ শুধু অল্প পরিবর্তন আনতে পারে, পুরোটা বদলে দিতে পারে না।

ধরুন, আপনি বাংলাদেশে থাকতে থাকতে অনেকটা ট্যান হয়ে গেছ। তারপর আপনি নরওয়ে চলে গেলেন, যেখানে সূর্যের আলো খুব কম। কিছুদিন পর আপনার ট্যান চলে যাবে, ত্বক আগের চেয়ে হালকা দেখাবে। কিন্তু আপনার ত্বক যদি জন্ম থেকে গাঢ় হয়, তাহলে সেটা ফর্সা ইউরোপীয়দের মতো সাদা হবে না।

জিনের কোনো পরিবর্তন হবে কি?

না, জিনের কোনো পরিবর্তন হবে না। জিন হলো আমাদের শরীরের নীলনকশা, যেটা আমরা আমাদের বাবা-মা থেকে পাই। ত্বকের রং-সহ আমাদের শারীরিক বৈশিষ্ট্যগুলো এই জিন দিয়ে নিয়ন্ত্রিত হয়। আপনি যদি ঠান্ডা দেশে ১০ বছর, ২০ বছর বা এমনকি সারাজীবন থাকো, তাহলেও আপনার জিন বদলাবে না। পরিবেশ আপনার জিনকে প্রভাবিত করতে পারে না এমনভাবে যে সেটা স্থায়ীভাবে বদলে যায়।

তবে, একটা জিনিস বোঝা দরকার। জিনের পরিবর্তন হতে পারে শুধু অনেক প্রজন্ম ধরে, যাকে আমরা বলি বিবর্তন (evolution)। উদাহরণস্বরূপ, হাজার হাজার বছর আগে যখন মানুষ আফ্রিকা থেকে ইউরোপে গিয়েছিল, তখন যারা ঠান্ডা দেশে বাস করত, তাদের মধ্যে যাদের ত্বক হালকা ছিল, তারা বেশি বেঁচে থাকত। কারণ হালকা ত্বক সূর্যের কম আলোতেও ভিটামিন D তৈরি করতে পারে। ফলে ধীরে ধীরে, অনেক প্রজন্ম পর, তাদের জিনে পরিবর্তন এসে ত্বক ফর্সা হয়ে গেছে। কিন্তু এটা একজন মানুষের জীবনে হয় না—এর জন্য লাখো বছর লাগে।

আপনার ক্ষেত্রে, আপনি যদি ইউরোপে থাকেন, আপনার ত্বকের মেলানিন কমে যেতে পারে, কিন্তু আপনার জিন একই থাকবে। আর আপনি যদি বাচ্চা নেন, আপনার বাচ্চার ত্বকের রং আপনার আর আপনার  সঙ্গীর জিনের ওপর নির্ভর করবে, ইউরোপের জলবায়ুর ওপর নয়।

একটা মজার তথ্য

মজার ব্যাপার হলো, ত্বকের রং শুধু সৌন্দর্যের জন্য নয়। এটা আমাদের বেঁচে থাকার জন্য খুব জরুরি। গাঢ় ত্বক গরম দেশে UV রশ্মি থেকে রক্ষা করে, আর ফর্সা ত্বক ঠান্ডা দেশে ভিটামিন D তৈরিতে সাহায্য করে। প্রকৃতি আমাদের এভাবেই তৈরি করেছে!

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+13 টি ভোট
2 টি উত্তর 662 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
2 টি উত্তর 478 বার দেখা হয়েছে
30 জানুয়ারি 2022 "জীববিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Subrata Saha (15,210 পয়েন্ট)

10,776 টি প্রশ্ন

18,477 টি উত্তর

4,744 টি মন্তব্য

318,651 জন সদস্য

29 জন অনলাইনে রয়েছে
3 জন সদস্য এবং 26 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. GrohanuMax

    700 পয়েন্ট

  2. Md Sumon Islam

    120 পয়েন্ট

  3. H.I Srijon

    110 পয়েন্ট

  4. saleh

    110 পয়েন্ট

  5. slaveair6

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং শক্তি উপকারিতা লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত বাংলাদেশ কান্না আম হরমোন
...