পিঁপড়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছিলাম.. - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+2 টি ভোট
738 বার দেখা হয়েছে
"প্রাণিবিদ্যা" বিভাগে করেছেন (140 পয়েন্ট)

2 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (16,190 পয়েন্ট)

পিঁপড়া বা পিপীলিকা হল ফর্মিসিডি (Formicidae) গোত্রের অন্তর্গত সামাজিক কীট বা পোকা। পিঁপড়া এদের ঘনিষ্ঠ প্রজাতি বোলতা ও মৌমাছির মত একই বর্গ হাইমেনপ্টেরার (Hymenoptera) অন্তর্গত। এরা মধ্য-ক্রেটাশাস পর্যায়ে ১১ থেকে ১৩ কোটি বছর পূর্বে বোলতা জাতীয় প্রাণী হতে বিবর্তিত হয় এবং সপুষ্পক উদ্ভিদের উদ্ভবের পর বহুমুখী বিকাশ লাভ করে। এখন পর্যন্ত জানা প্রায় ২২,০০০ পিঁপড়া প্রজাতির মধ্যে ১৩,৮০০ টির শ্রেণিবিন্যাস করা হয়েছে। কনুই-সদৃশ শুঙ্গ এবং গ্রন্থির মত যে কাঠামো দিয়ে তার সরু কোমর গঠিত হয় তার মাধ্যমে পিঁপড়াকে সহজেই শনাক্ত করা যায়।

একটি কর্মী পিঁপড়ার রেখাচিত্র

পিঁপড়া উপনিবেশ তৈরি করে বাস করে যা প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্টি হওয়া কয়েক ডজন শিকারী পিঁপড়া থেকে শুরু করে বিশাল এলাকাজুড়ে বাস করা লক্ষ লক্ষ পিঁপড়ার সমন্বয়ে গঠিত হতে পারে। বড় দলগুলি প্রধানত অনুর্বর, পাখাবিহীন নারী পিঁপড়াদের সমন্বয়ে তৈরি হয় যারা কর্মী, সৈন্য এবং অন্যান্য বিশেষায়িত বাহিনীতে বিভক্ত থাকে। প্রায় সব পিঁপড়ার উপনিবেশেই কিছু প্রজননক্ষম পুরুষ পিঁপড়া (ড্রোন) এবং এক বা একাধিক উর্বর নারী পিঁপড়া থাকে, যাদের রাণী পিঁপড়া বলা হয়।

শ্রম বিভাগ

পিঁপড়াদের এই উপনিবেশকে কখনো কখনো সুপার-অর্গানিজম বা দলগতস্বত্তাও বলা হয়, কারণ এরা সবাই মিলে কেবল একটি প্রাণীর মত আচরণ করে এবং অস্তিত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ ভাবে সংগ্রাম করে।

পৃথিবীর প্রায় সর্বত্র পিঁপড়ার দেখা মেলে, একমাত্র এন্টার্কটিকা ও এ ধরনের কিছু এলাকা ছাড়া। পিঁপড়া প্রায় যেকোনো বাস্তুসংস্থানে বিকাশ লাভ করতে পারে এবং এরা ভূমিগত বায়োমাসের প্রায় ১৫-২৫% গঠন করে। তাদের এই সাফল্যের কারণ হল তাদের সামাজিক সংগঠন, দ্রুত বাসস্থান পরিবর্তনের ক্ষমতা, রসদ জোগাড় করার দক্ষতা এবং নিজেদের রক্ষা করার পারদর্শিতা। অন্য প্রাণীদের সাথে তাদের দীর্ঘ দিনের সহবিবর্তনের ফলে অন্য প্রানীর আচরণ নকল/কপি করা, পরাশ্রয়ী, পরজীবী এবং মিথোজোবী সম্পর্কের পত্তন ঘটিয়েছে।

পিপীলিকা সমাজে শ্রমবিভাগ, ব্যক্তিগত পর্যায়ে যোগাযোগ এবং জটিল সমস্যা সমাধানের দক্ষতা রয়েছে। মানুষের সাথে এই সাযুজ্যগুলো তাদেরকে গবেষণার জন্য খুব আকর্ষণীয় প্রাণী করে তুলেছে। অনেক মানব সমাজে আবার পিঁপড়াকে খাদ্য, ঔষধ এবং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা হয়। পিঁপড়ার কিছু প্রজাতি জৈব কীটনাশক হিসেবেও গুরত্বপূর্ণ। তবে পিঁপড়া মানুষের জন্যে মাঝে মাঝে ক্ষতিরও কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। পিঁপড়া ফসলের ক্ষতি করে এবং দালান-কোঠার ধ্বংস সাধন করে। এর কিছু প্রজাতি যেমন Red imported fire ant কে কোথাও কোথাও আগ্রাসী প্রজাতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ এরা ঘটনাচক্রে নতুন কোন পরিবেশে গিয়ে পড়লেও খুব সহজে সেখানে নিজেদের সুপ্রতিষ্ঠিত করে নিতে পারে।

শ্রেণিবিন্যাস ও বিবর্তন

ফর্মিসিডি পরিবারটি হাইমেনপ্টেরা বর্গের অন্তর্ভুক্ত যে বর্গের মধ্যে পিঁপড়া ছাড়াও রয়েছে মৌমাছি, বোলতা এবং সফ্লাই। ভেসপয়েড বোলতাদের একটি বংশধারা থেকে পিঁপড়াদের বিবর্তন ঘটেছে। জীবাশ্মের রেকর্ড থেকে জানা গেছে ১৫ কোটি বছর পূর্বে অর্থাৎ জুরাসিক যুগের শেষদিকেও তাদের অস্তিত্ব ছিল। ১০ কোটি বছর পূর্বে সপুষ্পক উদ্ভিদের বিকাশের পর তারা আরও বৈচিত্র্যময় হয়ে ওঠে এবং আনুমানিক ৬ কোটি বছর পূর্বে বাস্তুতান্ত্রিক প্রতিপত্তি অর্জন করে।[৬] ১৯৬৬ সালে ই ও উইলসন ও তার সহকর্মীরা অ্যাম্বারে ফাঁদে আটকে পড়া ক্রিটেশাস যুগের একটি পিঁপড়ার জীবাশ্ম আবিষ্কার করেন যার প্রজাতির নাম Sphecomyrma freyi. ৮ কোটি বছরের পুরনো এই জীবাশ্মটিতে পিঁপড়া ও বোলতা উভয়ের বৈশিষ্ট্যই পাওয়া যায়।[৭] স্ফেকোমারমা সম্ভবত ভূপৃষ্ঠে বসবাসকারী সংগ্রাহক ছিল, অনেকে অবশ্য মনে করেন Leptanillinae এবং Martialinae শ্রেণীর প্রাণীদের মত প্রাচীন পিঁপড়ারা মাটির নিচে শিকার করে খেতো।

ক্রেটাশাস যুগে, প্রাচীন কিছু পিপড়ার কিছু প্রজাতি Laurasian সুপারকন্টিনেন্টে (উত্তর গোলার্ধ) ছড়িয়ে পড়ে। অন্য পতঙ্গের তুলনায় তাদের সংখ্যা ছিল অপ্রতুল, পুরো প্রতঙ্গের সংখ্যার তুলনায় ধরলে প্রায় ১% মত। Paleogene যুগের শুরুতে পিঁপড়েরা দ্রুত বিবর্তন ও উপজাতীকরনের কারনে প্রভাবশালী হতে থাকে। ওলিগোসিন এবং মিয়োসিন যুগে এসে তাদের সংখ্যা ২০-৪০% দাড়ায়। ইয়োসিন সময়ে পাওয়া প্রজাতিগুলোর ১০টির মধ্যে একটি প্রজাতি আজও দেখা যায়। যে সমস্ত প্রজাতি বেচে আছে তাদের ৫৬%ই বাল্টিক এমবার (ওলিগোসিনের প্রথম দিক) ফসিলে পাওয়া গিয়েছে এবং ডমিনিকান এমবারে (মিওসিনের প্রথমদিক) ৯২% ফসিল পাওয়া যায়।

Termites উইপোকাও কলোনিতে বাস করে কখনো কখনো এদের সাদা পিঁপড়া বলা হয় কিন্তু উইপোকারা পিঁপড়ে নয়। তারা ইসোপ্টেরার উপ-গোত্র এবং তেলাপোকাকে নিয়ে তারা অন্য একটি গোত্র ব্লাটোডি গঠন করে। পিঁপড়ের মত উইপোকারাও সামাজিক, অনুর্বর কর্মী নিয়ে গঠিত কিনতু তাদের প্রজনণের জিনগত বৈশিষ্ট্য ভিন্নl উইপোকা এবং পিঁপড়ের যে সামাজিক গঠন তার মিলকে কোভারজেন্ট ইভোলুসন বা সমগোত্রীয় কিন্তু স্বাধীন (একটি অপরটির সাথে কোন সম্পর্ক নেই) বলে। ভেলভেট পিঁপড়া দেখতে বড় পিঁপড়ার মত কিন্তু তারা আসলে পাখাবিহীন স্ত্রী বোলতা।

0 টি ভোট
করেছেন (4,150 পয়েন্ট)

পিপীলিকা সমাজে শ্রমবিভাগ, ব্যক্তিগত পর্যায়ে যোগাযোগ এবং জটিল সমস্যা সমাধানের দক্ষতা রয়েছে। মানুষের সাথে এই সাযুজ্যগুলো তাদেরকে গবেষণার জন্য খুব আকর্ষণীয় প্রাণী করে তুলেছে। অনেক মানব সমাজে আবার পিঁপড়াকে খাদ্য, ঔষধ এবং ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে ব্যবহার করা হয়। পিঁপড়ার কিছু প্রজাতি জৈব কীটনাশক হিসেবেও গুরত্বপূর্ণ।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

0 টি ভোট
1 উত্তর 136 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
2 টি উত্তর 293 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
2 টি উত্তর 410 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
1 উত্তর 333 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
3 টি উত্তর 539 বার দেখা হয়েছে
08 নভেম্বর 2021 "চিন্তা ও দক্ষতা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Fake Id (14,120 পয়েন্ট)

10,809 টি প্রশ্ন

18,512 টি উত্তর

4,744 টি মন্তব্য

559,200 জন সদস্য

93 জন অনলাইনে রয়েছে
29 জন সদস্য এবং 64 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. আব্দুল্লাহ আল মাসুদ

    1280 পয়েন্ট

  2. Dibbo_Nath

    370 পয়েন্ট

  3. Fatema Tasnim

    340 পয়েন্ট

  4. _Polas

    160 পয়েন্ট

  5. Arnab1804

    140 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ পৃথিবী এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত #ask আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি মাথা স্বাস্থ্য প্রাণী গণিত মহাকাশ বৈজ্ঞানিক পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে ডিম চাঁদ কেন বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং শক্তি উপকারিতা সাপ লাল আগুন মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মাছ মস্তিষ্ক মশা শব্দ ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা মন কি বিস্তারিত রঙ পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাংলাদেশ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি কান্না দাঁত বিড়াল আম
...