হাত-পা ঝিনঝিন করে কেন? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

0 টি ভোট
901 বার দেখা হয়েছে
"স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে করেছেন (135,480 পয়েন্ট)

2 উত্তর

+1 টি ভোট
করেছেন (135,480 পয়েন্ট)
শরীরে রক্ত সরবরাহের জন্য সারা দেহে জালের মতো আছে রক্তনালি। এ রক্তনালি দুই ধরনের। ধমনি এবং শিরা। ইংরেজিতে বলে Artery & Vein। ধমনির কাজ হৃদপিণ্ড থেকে রক্তের মধ্যে অক্সিজেন মিশিয়ে শরীরের বিভিন্ন অংশে পৌঁছে দেয়া। আর শিরার কাজ শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে অক্সিজেনবিহীন রক্তকে সংগ্রহ করে হৃদপিণ্ডে পৌঁছানো।

একজন মানুষের শরীরে যা রক্তনালি আছে তার দৈর্ঘ্য হবে ৬০ হাজার মাইলের মতো, যা দিয়ে পৃথিবীতে আড়াইবার পেঁচানো যাবে। পৃথিবীর ব্যাস মাত্র ২৪ হাজার মাইল। হৃদপিণ্ড সারা শরীরে দৈনিক গড়ে ১৮০০ গ্যালন রক্ত পাম্প করে। অন্যদিকে শরীরে সব ধরনের সংবেদন সরবরাহ করতে রক্তের মতো নার্ভের নেটওয়ার্ক আছে। এ নার্ভ শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে অনুভব স্পাইনাল কর্ড এবং ব্রেইনে পৌঁছায় এবং ব্রেইন থেকে নির্দেশ শরীরের বিভিন্ন অংশে পৌঁছায়। মানুষের শরীরে প্রায় ৭ ট্রিলিয়ন নার্ভ আছে। রক্তনালিতেও নার্ভ আছে। এ নার্ভের কাজ রক্তনালির সংকোচন প্রসারণকে নিয়ন্ত্রণ করা।

আমরা যখন ব্যায়াম করি, আমাদের বেশি পরিমাণ অক্সিজেনের দরকার হয়, পেশিগুলোর বেশি কাজ করতে হয় বলে। তখন রক্তনালির নার্ভ রক্তনালিগুলোকে বেশি প্রসারিত করে। ফলে বেশি পরিমাণ রক্ত বেশি বেশি অক্সিজেনকে পৌঁছে দেয়।

এখন শরীরের কোথাও কিছুক্ষণ একনাগাড়ে চেপে বসলে সেখানকার নার্ভ এবং রক্তনালিতে বাধা পড়ে। একদিকে রক্তনালিগুলো ঠিকমতো অক্সিজেন সরবরাহ করতে পারে না, অন্যদিকে রক্তনালিতে থাকা নার্ভ কিংবা ওই অংশে থাকা নার্ভগুলো তাদের সংবেদনগুলো পাঠাতে বাধা পায়। কিছুক্ষণ পর সেই চাপ সরে গেলে হঠাৎ সেই অংশের রক্তনালিতে অক্সিজেনের সরবরাহ বেড়ে যায়, নার্ভ তার সংবেদন বাধা থেকে বেরিয়ে ব্রেইনকে সংকেত পাঠায়। ব্রেইন হঠাৎ করে এমন থেমে গিয়ে আবার হঠাৎ ফিরে আসা সংবেদনকে ভুল করে পিনপিনের মতো ফিলিংস দেয়। আর তাতেই আমরা যা অনুভব করি-সেটাই pins and needles।

এটি কিছুক্ষণের জন্য থাকে, আবার নিজে নিজেই চলে যায়। তাই অনেকে একে temporary paraesthesia বলে।

এটি বার বার এবং বেশি ঘটতে থাকলে তা শরীরের মধ্যে কোনো সমস্যার লক্ষণ। অনেক সমস্যার কারণে এমন পিনস অ্যান্ড নিডলস হতে পারে। তিনটি প্রধান কারণ আলোচনা করব, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে জড়িত।

Pins and needles সচরাচর হাতে পায়ে বেশি হয়। ঘাড়, মুখ, পিঠ, পশ্চাৎদেশ, এসব জায়গাতেও দেখা দেয়।

ডায়াবেটিস আক্রান্তদের শরীরে সুগার বেড়ে গেলে পায়ে এমন pins and needles অনুভব আসে। ট্রিটমেন্ট না করে এমন পরিস্থিতি দীর্ঘদিন চলতে থাকলে ধীরে ধীরে পায়ের বিভিন্ন জায়গায় সংবেদন ক্ষমতা কমে যায়, নষ্ট হয়ে যায়। ধীরে ধীরে পায়ের সেনসেশন কার্যক্ষমতা কমে যায়, পায়ে ক্ষতের সৃষ্টি হয়, পায়ের রং পরিবর্তন হয়ে যায়। সমস্যাটিকে বলে ডায়াবেটিস ফুট।

Carpal tunnel syndrome হাতের কব্জির মধ্যে এক ধরনের ঝিনঝিন, পিনপিন কিংবা অবশ ভাব চলে আসে অনেকের। এটি মূলত বেশি হয় যারা অনেকক্ষণ কম্পিউটারের কিবোর্ডে কাজ করেন। এমনকি যারা অনেকক্ষণ ফোন হাতে নিয়ে টেপাটিপি করেন, তাদেরও এমন কব্জিতে ব্যথা করতে পারে। কব্জির মধ্যে মিডিয়ান নার্ভ নামের একটি নার্ভ আছে, এটিতে চাপ পড়ার কারণে এমন হয়। বেশিক্ষণ এমন কাজ না করে এবং এমন পিনপিন অনুভব এলে হাতকে কয়েকবার ঝাড়া দিলে অস্বস্তিটি চলে যাবে।

Tight jeans syndrome বিশেষ করে মেয়েরা টাইট জিনস পরে বেশি। দীর্ঘক্ষণ এমন পরে থাকলে উরু, কোমর এবং পশ্চাৎদেশে অবশ অবশ অস্বস্তি ভাব লাগে। আবার এমন টাইট প্যান্টের পকেটে মোবাইল ফোন অনেকক্ষণ রাখলে সেটাও অনেক চাপ দেয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এমন সমস্যাকে বলে mergalgia paresthetica।
0 টি ভোট
করেছেন (4,210 পয়েন্ট)
এই ঝি ঝি ধরার অনুভূতিটা আপাতদৃষ্টিতে কিছুটা রহস্যজনক মনে হলেও এর পেছনের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাটা কিন্তু খুবই সহজ।

আমাদের দেহের সবখানেই অসংখ্য স্নায়ু রয়েছে যেগুলো মস্তিষ্ক ও দেহের অন্যান্য অংশের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করতে থাকে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞএস এম সিয়াম হাসান বলেন, "বসা বা শোয়ার সময় সেসব স্নায়ুর কোনো একটিতে চাপ পড়লে দেহের ঐ অংশে রক্ত চলাচলকারী শিরার ওপরও চাপ পড়ে। ফলে শরীরের ঐ অংশে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়। এর ফলে ঝি ঝি ধরতে পারে।"

স্নায়ুতে চাপ পড়ার ফলে শরীরের ঐ অংশ থেকে যেসব তথ্য মস্তিষ্কে পৌঁছানোর কথা ছিল, তা বাধাগ্রস্থ হয়। একইসাথে স্নায়ুগুলোও হৃৎপিণ্ড থেকে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পাওয়া থেকে বিরত থাকে যেহেতু রক্ত সরবরাহকারী শিরার ওপর চাপ পড়ে।

এরকম পরিস্থিতি থেকে যখন চাপ অপসারিত হয়, তখন একসাথে প্রচুর পরিমাণ রক্ত অঙ্গ প্রত্যঙ্গে প্রবাহিত হয় এবং একসাথে প্রচুর পরিমাণ তথ্য মস্তিষ্কে প্রবাহিত হতে শুরু করে।

এই 'ঝি ঝি ধরা' অনুভূতিটিকে তিন ধাপে বিভক্ত করা যায়।

প্রথমত, চাপ প্রয়োগ হওয়ার মিনিট খানেক পর তিন থেকে চার মিনিটের জন্য স্থায়ী হওয়া অস্বস্তিকর অনুভূতি, যেটিকে 'কমপ্রেশন টিঙ্গলিং' বলা হয়।

এই অনুভূতিকে অনেকে এমনভাবে বর্ণনা করেছেন যেন, তাদের 'চামড়ার ভেতরের অংশে পিপড়া দৌড়াদৌড়ি করছিল।'

দ্বিতীয় ধাপটি সাধারণত শুরু হয় দশ মিনিট পর। এই ধাপে হাতে বা পায়ে অসাড়তা বোধ হয় এবং যতক্ষণ স্নায়ুর ওপর চাপ থাকে ততক্ষণ এই অনুভূতি থাকে।

তৃতীয় ও শেষ ধাপটি শুরু হয় চাপ অপসারণ করার পর। এই অংশটিকেই ইংরেজিতে 'পিনস অ্যান্ড নিডলস' বলা হয়।

প্রথম দুই ধাপের তুলনায় এই ধাপটি অপেক্ষাকৃত বেশি যন্ত্রণাদায়ক, তবে সাধারণত এই ধাপে যন্ত্রণা বা ব্যাথার চেয়ে ভিন্ন ধরণের উত্তেজনা বোধ করে বলেই জানিয়েছেন অধিকাংশ মানুষ।

কিছুটা ব্যথা বা যন্ত্রণার অনুভূতি থাকলেও তার পুরোটাই শারীরিক।

এই অনুভূতি কিছুক্ষণের মধ্যেই স্তিমিত হয়ে গেলেও ঠিক কোন জায়গায় এই অনুভূতির সূচনা হয়েছিল বা কোথায় শেষ হয়, সেটি নির্দিষ্টভাবে বলতে পারে না মানুষ।

ঝি ঝি ধরলে সাময়িকভাবে অসাড় হয়ে যাওয়া অঙ্গটি টানটান করে রাখলে সাধারণত কিছুক্ষণের মধ্যে দ্রুত ঐ অঙ্গ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায়।

- সংগৃহীত

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

0 টি ভোট
1 উত্তর 462 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
1 উত্তর 1,325 বার দেখা হয়েছে
19 ডিসেম্বর 2021 "রসায়ন" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন sabina yasmin (130 পয়েন্ট)
+12 টি ভোট
2 টি উত্তর 1,785 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
1 উত্তর 6,703 বার দেখা হয়েছে
27 ফেব্রুয়ারি 2021 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hojayfa Ahmed (135,480 পয়েন্ট)

10,775 টি প্রশ্ন

18,461 টি উত্তর

4,743 টি মন্তব্য

269,087 জন সদস্য

83 জন অনলাইনে রয়েছে
1 জন সদস্য এবং 82 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Tazriyan

    190 পয়েন্ট

  2. Eyasin

    110 পয়েন্ট

  3. NWKEmelia419

    100 পয়েন্ট

  4. BrunoBourass

    100 পয়েন্ট

  5. IsisSuter34

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা শব্দ মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত কান্না আম হরমোন বাংলাদেশ
...