মানুষের মলের রং হলুদ কেন? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

0 টি ভোট
7,173 বার দেখা হয়েছে
"জীববিজ্ঞান" বিভাগে করেছেন (15,280 পয়েন্ট)

2 উত্তর

+1 টি ভোট
করেছেন (2,760 পয়েন্ট)

চমৎকার প্রশ্ন!!

মলের রঙ হলুদ হওয়ার কারণ হলো মলে উপস্থিত স্টারকোবিলিনোজেন নামক বর্ণহীন পদার্থ, যা বায়ুর সংস্পর্শে হলুদ বর্ণের স্টারকোবিলিনে পরিণত হয়।

কিন্তু আমরা যা কিছুই খাই না কেন, মলের রং বেশিরভাগ সময়ে হলুদই কেন হয়, কেন বেগুনি, নীল, লাল, গোলাপি হয় না সেটা জানতে হলে আমাদেরকে জানতে হবে স্টারকোবিলিন কিভাবে তৈরি হয়।

আপনারা জানেন পিত্ত বা Bile-এর কথা। সেই যে সান্দ্র, সবুজাভ-হলুদ, ঈষৎ ক্ষারীয় (pH 7-8) তরল, যা লিভারের কোষ/হেপাটোসাইট দ্বারা ক্ষরিত হয় এবং পিত্তথলিতে সাময়িকভাবে সঞ্চিত থাকে। পিত্তের অন্যতম উপাদান হলো পিত্তরঞ্জক যার মধ্যে প্রধান হচ্ছে বিলিরুবিন (অন্যান্য উপাদানের মধ্যে পিত্তলবণ, প্রোটিন, কোলেস্টেরল, ফসফোলিপিড, বাইকার্বনেট এগুলো উল্লেখযোগ্য)।

এই বিলিরুবিনের পরিপাকজাত পদার্থই হলো মলে উপস্থিত স্টারকোবিলিনোজেন এবং মূত্রে উপস্থিত ইউরোবিলিনোজেন। কীভাবে তৈরি হয় এই বিলিরুবিন?

লোহিত রক্তকণিকার জীবদ্দশা সাঙ্গ হওয়ার পর তার হিমোগ্লোবিন RE কোষের ভেতরে "হিম" এবং "গ্লোবিন" নামক অংশে ভেঙে যায়। কিছু লোহিত কণিকা রক্তের মধ্যে থাকা অবস্থাতেই ভেঙে যায় এবং ওর মধ্যে থাকা হিমোগ্লোবিন (কখনো হ্যাপ্টোগ্লোবিন দ্বারা, কখনো বা হিমোপেক্সিন দ্বারা) স্থানান্তরিত হয় RE কোষে। গ্লোবিন শেষপর্যন্ত দেহের অ্যামাইনো অ্যাসিডের ভাণ্ডারে প্রবেশ করে। কিন্তু হিম?? তার ভাগ্যে কী ঘটে?? এবার তাহলে চলুন কয়েকটি সহজ ধাপে জেনে নিই হিম থেকে বিলিরুবিন এবং তারপর বিলিরুবিন থেকে স্টারকোবিলিনোজেন তৈরির গল্প।

  1. প্রথম ধাপ: "হিম অক্সিজিনেজ" উৎসেচকের ক্রিয়ায় হিম পরিণত হয় আয়রন, বিলিভার্ডিন এবং কার্বন মনোক্সাইডে।
  2. দ্বিতীয় ধাপ: বিলিভার্ডিন বিজারিত হয়ে তৈরি করে বিলিরুবিন।
  3. তৃতীয় ধাপ: অদ্রাব্য বিলিরুবিন, অ্যালবুমিনের সাথে সংযুক্ত হয়ে দ্রবণীয় বিলিরুবিন-অ্যালবুমিন কমপ্লেক্স তৈরি করে যা রক্তরসের মধ্যে ঘুরে বেড়াতে থাকে। অ্যালবুমিনের ইয়াব্বড় সাইজের কারণে এই কমপ্লেক্সটি বৃক্কের গ্লোমেরুলার ফিল্টারকে অতিক্রম করতে পারে না।
  4. চতুর্থ ধাপ: হেপাটোসাইট বা লিভারের কোষগুলি এই বিলিরুবিন-অ্যালবুমিন কমপ্লেক্সকে আত্মসাৎ করে, এবং ওর ভেতরেই অ্যালবুমিন অপসারিত হয়ে যায় বিলিরুবিন থেকে। বিলিরুবিন সাময়িকভাবে যুক্ত হয় লিগ্যান্ডিন নামক সাইটোপ্লাজমীয় প্রোটিনের সাথে।
  5. পঞ্চম ধাপ: এইটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এইবারে বিলিরুবিন, গ্লুকোরোনাইল ট্রান্সফারেজ নামক উৎসেচকের সাহায্যে গাঁটছড়া বাঁধে গ্লুকোরোনিক অ্যাসিডের সাথে; এবং তৈরি হয় দুইপ্রকার দ্রবণীয় যৌগ বিলিরুবিন মনোগ্লুকোরোনাইড আর বিলিরুবিন ডাইগ্লুকোরোনাইড।
  6. ষষ্ঠ ধাপ: উপরোক্ত যৌগগুলি পিত্তের মধ্যে দ্রবীভূত হয় এবং লিভার থেকে সেই পিত্ত বের হয়ে আসে। অবশেষে সেই পিত্ত খাবারের সাথে মিশে চলে যায় ক্ষুদ্রান্ত্রে।
  7. অপেক্ষার শেষ ধাপ, সপ্তম ধাপ:: এই পর্যায়ে বৃহদন্ত্রের ব্যাক্টেরিয়াগুলি বিলিরুবিনকে ইউরোবিলিনোজেনে (অত্যন্ত দ্রাব্য যৌগ) পরিণত করে। কিছুটা ইউরোবিলিনোজেন এন্টারোহেপাটিক পোর্টাল সংবহনে প্রবেশ করে। কিছুটা অংশ পোর্টাল সংবহন থেকে বেরিয়ে সাধারণ সংবহনে প্রবেশ করে এবং কিডনি মারফত বেরিয়ে যায়। বাতাসের সংস্পর্শে এটি জারিত হয়ে গিয়ে ইউরোবিলিন তৈরি করে। আর বেঁচে যাওয়া ইউরোবিলিনোজেন, (পরিপাকনালীর ভেতরে পড়ে থাকা) বিজারিত হয়ে বর্ণহীন স্টারকোবিলিনোজেন যৌগ তৈরি করে যা মলের সাথে নির্গত হয়। কিন্তু মলত্যাগের সময়ে বা মলত্যাগের পরে, বাতাসের সাথে সংস্পর্শের ফলে বর্ণহীন স্টারকোবিলিনোজেন পরিণত হয় রঙিন স্টারকোবিলিনে -- যা মলের হলুদ বা বাদামী রঙের জন্য দায়ী।
©️Enakshi Saha
 
+1 টি ভোট
করেছেন (54,280 পয়েন্ট)
কারণ আমাদের মূত্রে ইউরোক্রোম নামক এক ধরনের রঞ্জক পদার্থ থাকে। যার উপস্থিতিতে মূত্রের রং হলুদ হয়।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+4 টি ভোট
4 টি উত্তর 709 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
1 উত্তর 385 বার দেখা হয়েছে
15 মার্চ 2022 "জীববিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন R Atiqur (43,930 পয়েন্ট)
+2 টি ভোট
2 টি উত্তর 721 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
2 টি উত্তর 518 বার দেখা হয়েছে

10,761 টি প্রশ্ন

18,429 টি উত্তর

4,739 টি মন্তব্য

253,803 জন সদস্য

36 জন অনলাইনে রয়েছে
0 জন সদস্য এবং 36 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Ayesha Akter

    160 পয়েন্ট

  2. Zeet Baral 1

    140 পয়েন্ট

  3. Md Abu Mostafa

    130 পয়েন্ট

  4. Sheikh Zimraan Bin W

    120 পয়েন্ট

  5. Raha

    120 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী চোখ রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত #ask আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী চিকিৎসা #science পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত বৈজ্ঞানিক মহাকাশ পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি #biology বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে কেন ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক শব্দ ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা কি বিস্তারিত রঙ মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত আম হরমোন বাংলাদেশ বিড়াল
...