চেহারা ফরসা করার কার্যকরী উপায় কী? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+3 টি ভোট
6,764 বার দেখা হয়েছে
"স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে করেছেন (1,630 পয়েন্ট)

1 উত্তর

+3 টি ভোট
করেছেন (2,000 পয়েন্ট)

জন্মগতভাবে আমরা একেকজন একেক ধরনের গায়ের রং পাই। কেউবা ফর্সা, কেউবা শ্যামলা। গায়ের রং চাপা হলে তা নিয়ে মন খারাপ করেন অনেকেই। আরেকটু উজ্জ্বল ত্বক পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা থাকে তাদের। আবার জন্মগতভাবে ফর্সা ত্বক পেয়েও ধুলোবালি আর রোদের কারণে তা হারাতে বসেন অনেকেই।যদিও ফর্সা মানেই সুন্দর তা নয় তবুও আমারা সবাই চাই ত্বকটা একটু ফর্সা আর উজ্জ্বল হোক। মনে মনে সবারই এই ইচ্ছাটাও থাকে। তাই আমারা সবাই অনেক প্যাক অনেক ক্রিম ট্রাই করি ত্বক ফর্সা আর উজ্জ্বল করার জন্য। তবে যুগ যুগ ধরে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক উজ্জ্বল আর ফর্সা করার এই প্রচেষ্টা অনেক বেশি কার্যকর হয়েছে।কেবল নারীরা নন, পুরুষেরাও এখন সমান আগ্রহী সুন্দর ও আকর্ষণীয় চেহারা পেতে।সৌন্দর্য সেটাই যা একদম প্রাকৃতিক । অনেকেই মনে করেন মেকআপ ছাড়া বুঝি প্রতিদিন সুন্দর দেখানো সম্ভব নয়। ধারণাটি একেবারেই ভুল। অল্প কয়েকটি কাজ করলে প্রতিদিন সকাল থেকেই আপনাকে দেখাবে সুন্দর ও প্রাণবন্ত। সৌন্দর্যের তারিফ করবে সবাই। আর এসবের পেছনে অনেকটা সময় বা অর্থ কিছুই ব্যয় করতে হবে না।

ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বক উজ্জ্বল আর ফর্সা করার উপায়


(১) গুঁড়া দুধ ও লেবুর রসের হোয়াইটেনিং ফেস প্যাক

একটি পাত্রে ১ চা চামচ গুঁড়া দুধ, ২ চা চামচ লেবুর রস আর ১/২ চা চামচ মধুর সাথে মিশিয়ে নিতে হবে। এবার পুরো মুখে ১০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। ত্বক পরিষ্কার হয়ার সাথে সাথে আগের তুলনায় অনেকটা উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। সব ধরনের ত্বকেই এই প্যাক ব্যবহার করা যাবে। লেবুতে থাকা প্রাকৃতিক ব্লিচিং উপাদান মধু আর দুধের সাথে মিশে ত্বক ফর্সা করে তুলতে সাহায্য করে। প্যাকটি তৈরি করে তেমন কোন বাড়তি ঝামেলাও নেই আর উপাদানগুলো প্রত্যেকের রান্নাঘরেই কমবেশি থাকে।আরেকটি কথা নিয়মিত এই প্যাক লাগালে ত্বকে ব্রনের সমস্যাও দূর হবে।


(২) টক দই আর ওট মিলের স্কিন হোয়াইটেনিং মাস্ক

সারারাত ১ টেবিল চামচ ওট মিল ভিজিয়ে রেখে সকালে এটি পেস্ট করে এর সাথে ১ টেবিল চামচ টক দই মিশিয়ে মাস্ক তৈরি করুন। এটি নিশ্চিতভাবে ত্বক ফর্সা করে। নিয়মিত ব্যবহারে অবশ্যই ভাল ফল পাবেন। ড্রাই টু নরমাল ত্বকের জন্য এই প্যাক বেশ উপকারি।


(৩) আলুর খোসার স্কিন হোয়াইটেনিং ফেস প্যাক

লেবুর রসের মত আলুর খোসায় ব্লিচিং উপাদান আছে । আলু খোসার পেস্ট নিয়মিত ত্বকে লাগান। নিয়মিত ব্যবহারে ত্বক উজ্জ্বল আর ফ্রেশ হবে। সব ধরনের তকেই এই প্যাক ব্যবহার করা যাবে।


(৪) হলুদ আর টমেটোর ফেস প্যাক

উজ্জ্বল ত্বক পেতে এক চিমটি হলুদ, ১ চা চামচ টমেটো বা লেবুর রসের সাথে মিশিয়ে মুখের ত্বকে লাগান নিয়মিত। অবশ্যই ত্বক ফর্সা হবে। আমরা কমবেশি সবাই জানি টমেটো ত্বকের কাল দাগ দূর করতে কতোটা কার্যকরী। টমেটোর ব্লিচিং উপাদান আর হলুদের ভেষজ উপাদান ত্বক ফর্সা করতে একসাথে কাজ করে। স্বাভাবিক থেকে তৈলাক্ত এবং শুষ্ক ত্বকে এই ফেস প্যাকটি ব্যবহার করা যাবে।


(৫) আমন্ড অয়েল ফেস প্যাক

আপনি ৪-৫ টি আমন্ড সারারাত ভিজিয়ে রেখে এটি গুঁড়া করে পেস্ট তৈরি করে এর সাথে বাটার মিল্ক বা মালাই মিশিয়ে এই প্যাক ত্বকে লাগান। ১০ -১২ মিনিট এই প্যাক ত্বকে রাখুব এরপর কিছুক্ষণ স্ক্রাব করে ত্বক ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন প্যাকটি ত্বকে উজ্জ্বলতা এনে দিতে দারুণভাবে কাজ করেছে। এই প্যাক আপনার ত্বক নরম করবে, ত্বকের মৃত কোষ দূর করবে আর ত্বক হবে উজ্জ্বল। তবে আপনি যদি মালাই ব্যবহার করতে না চান তাহলে মধু বা টক দইও ব্যবহার করতে পারেন। 


(৬) বেসনের ফেস প্যাক

বেসন সব সময় আমাদের ত্বকের রঙ উজ্জ্বল করে ত্বককে তরুণ রাখতে সাহায্য করে। বেসনের সাথে বাটার মিল্ক মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে মুখে লাগান আর শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। তৈলাক্ত ত্বকে এই ফেশ প্যাক ব্যবহার করা যাবে না।


(৭) পুদিনা পাতার ফেস প্যাক

পুদিনা পাতায় বিদ্যমান অ্যাসট্রিজেন্ট ত্বকে পুস্টি যোগানোর সাথে সাথে ত্বকে উজ্জ্বল করে তুলে। ১৫ থেকে ২০ টি পুদিনা পাতা পেস্ট করে এটি মুখে লাগান এবং পুরো মুখে পেস্টটি লাগিয়ে ১০—১৫ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বককে টান টান করবে আর ত্বকের ছোট ছোট পোর ঢেকে দেবে।পুদিনা পাতায় অ্যালার্জি থেকে থাকলে এই প্যাকটি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।


(৮) কলার ফেস প্যাক

একটি পাত্রে পরিমান মতো কলা, ১ চা চামচ মধু আর ১ টেবিল চামচ টক দই মিশিয়ে নিয়মিত ত্বকে লাগান। এই প্যাকটি সান টান দূর করে ত্বক ফর্সা করে তুলবে। সব ধরনের ত্বকের সাথে মানানসই এই ফেস প্যাক।


(৯) চন্দনের ফেস প্যাক

আপনার ত্বক যদি তৈলাক্ত হয় তবে চন্দনের গুড়ার সাথে পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগান। আপনার ত্বকে যতটুকু পরিমানে লাগে ততটুকু নিবেন। আপনার ত্বক প্রাকৃতিকভাবেই ফর্সা হবে এতে। এই প্যাক আপনার ত্বক শুধু উজ্জ্বলই করবে না আপনাকে দেখতেও অনেক ফ্রেশ লাগবে।


(১০)পেঁপে আর ডিমের মাস্ক

পেঁপে আর ডিম একসঙ্গে ব্যবহার করলে ত্বকের রঙ আস্তে আস্তে ফর্সা হচ্ছে আর হালকা হবে। তার সঙ্গে আসছে একটা সুন্দর উজ্জ্বল ভাব। ডিমের প্রোটিন ত্বককে টানটান রাখবে। এর সঙ্গে দই যখন যোগ হবে তখন তা আপনার স্কিনকে ভিতর থেকে পরিষ্কার করবে।৩ চামচ পেপের রস, ২ চামচ দই, ৪ চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনিগার, ৩ চামচ আমন্ড অয়েল, গ্লিসারিন ও একটি ডিমের সাদা অংশ নিন। গ্লিসারিন আর ডিম ছাড়া বাকি সবকটি উপকরণ একটি পাত্রে নিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। একটা ঘন পেস্ট মতো তৈরি হবে। সেটা এবার ফ্রিজে রেখে দিন ঘণ্টা দুয়েকের মতো। তারপর বের করে তাতে দিন গ্লিসারিন আর ডিমের সাদা অংশ। খুব ভালো করে মেশান। এবার এই পেস্ট মুখে মাখুন আর রেখে দিন প্রায় ২০ থেকে ২৫ মিনিট। তারপর হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।



রূপচর্চায় খাদ্যাভ্যাসে যা যা গুরুত্ব

ত্বক সুস্থ রাখতে প্রয়োজন সুষম খাদ্যাভ্যাস।প্রতিটি খাদ্য উপাদান গ্রহণ করতে হবে পরিমাণমতো।প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় শর্করা, আমিষ, স্নেহজাতীয় পদার্থ, ভিটামিন, খনিজ উপাদান ও পানি রাখতে হবে সঠিক পরিমাণে। কোনো খাদ্য উপাদান ত্বক বা চুলের জন্য উপকারী বলে সেই উপাদানটি অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করা যেমন ঠিক নয়, তেমনি কোনো একটি খাদ্য উপাদান দৈনন্দিন চাহিদার চেয়ে কম পরিমাণে গ্রহণ করাও উচিত নয়।

১.উজ্জ্বল ত্বকের জন্য চাই আমিষজাতীয় খাবার। মাছ, মাংস, ডিম, বিভিন্ন ধরনের বাদাম, দুধ ও দুধের তৈরি খাবার থেকে আমিষ পাওয়া যায়।

২.ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড দেহের ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে। মাছের তেল ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের ভালো উৎস।

৩.সুস্থ ত্বকের জন্য আরেকটি প্রয়োজনীয় উপাদান ভিটামিন এ। রঙিন শাকসবজি ও ফলমূলে রয়েছে ভিটামিন এ।

৪.ত্বকের কোষগুলোর জন্যও জিংক প্রয়োজন। গম, যবসহ বিভিন্ন শস্যকণায় মিলবে জিংক।

৫.ত্বকের জন্য আরও একটি প্রয়োজনীয় উপাদান হলো ভিটামিন সি। লেবু, আমড়া, পেয়ারাসহ বিভিন্ন টক ফলে পাবেন প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি।

চেহারার উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে যা যা করা যাবেনা

  •  মুখ কখনও সাবান দিয়ে ধুবেন না।
  •  ত্বকের ধরণ বুঝে ফেইস ওয়াশ কিনুন।
  •  মুখে কোনদিন ব্লিচ করবেন না। ব্লিচ মুখের জন্য খুবই ক্ষতিকর।
  •  দুপুর বেলার রোদ এড়িয়ে চলুন।
  •  ধূমপানও আপনার মুখের ত্বকের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।


ত্বক ফর্সা রাখার এই কয়েকটি উপায় আপনি নিয়মিত মেনে চললে আপনিও পেতে পারেন অত্যন্ত সুন্দর ও উজ্জ্বল ত্বক। আশা করি এই টিপস গুলো আপনার কাজে লাগবে।

করেছেন (1,630 পয়েন্ট)
+1
অনেক অনেক ধন্যবাদ!

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+10 টি ভোট
2 টি উত্তর 3,852 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
1 উত্তর 141 বার দেখা হয়েছে
20 ডিসেম্বর 2021 "তত্ত্ব ও গবেষণা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন বিলাস পাল (4,210 পয়েন্ট)
+1 টি ভোট
1 উত্তর 805 বার দেখা হয়েছে
19 জুন 2021 "পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন মেহেদী হাসান (141,820 পয়েন্ট)

10,720 টি প্রশ্ন

18,363 টি উত্তর

4,729 টি মন্তব্য

240,141 জন সদস্য

50 জন অনলাইনে রয়েছে
1 জন সদস্য এবং 49 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Ayon Ratan Agni

    390 পয়েন্ট

  2. Al Moyaj Khondokar

    210 পয়েন্ট

  3. Vuter Baccha

    150 পয়েন্ট

  4. Mehedi_Bknowledge

    110 পয়েন্ট

  5. Monojit Das

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী চোখ রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #ask চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি প্রাণী স্বাস্থ্য বৈজ্ঞানিক মাথা গণিত মহাকাশ পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি #science বিজ্ঞান #biology খাওয়া শীতকাল গরম কেন #জানতে ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা মাছ মস্তিষ্ক শব্দ ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস গ্রহ স্বপ্ন রসায়ন তাপমাত্রা উদ্ভিদ কালো কি বিস্তারিত রঙ পা পাখি গ্যাস মন সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত আম বিড়াল কান্না নাক
...