চুম্বক কিসের তৈরি? এটা লোহাকে কেন আকর্ষণ করে? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+4 টি ভোট
2,552 বার দেখা হয়েছে
"তত্ত্ব ও গবেষণা" বিভাগে করেছেন (28,330 পয়েন্ট)

2 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (28,330 পয়েন্ট)

চুম্বক প্রকৃতির এক অন্যতম আশ্চর্য পদার্থ। চুম্বক কিসে তৈরি এটিকে দুভাবে ব্যাখ্যা করা যায়।

প্রথমত, প্রাকৃতিক চুম্বক

আমরা প্রাকৃতিক চুম্বকের সাথে অতি পরিচিত, পরিচিতি না থাকলে রেডিও, টিভি, স্পিকার ভাঙচুর করার আবেদন র‌ইল।

image

চিত্র: প্রাকৃতিক চুম্বক

এখন প্রশ্ন হলো, প্রাকৃতিক চুম্বক কিভাবে তৈরি হয়?

সেটা জানার আগে আমাদের ফেরোম্যাগনেটিক পদার্থ সম্বন্ধে কিছু জানতে হবে।

তাহলে ফেরোম্যাগনেটিক পদার্থ আসলে কি?

না, ফেরোম্যাগনেটিক পদার্থ হলো সেইসব পদার্থ যাদের বিজোড় ইলেকট্রন থাকে। আমরা সাধারণত জানি কোনো মৌলের পরমানুর একটি কক্ষকে দুটির বেশি ইলেকট্রন থাকতে পারে না, কিন্তু একটি ইলেকট্রন থাকতেই পারে, এরকম অবস্থা কে বিজোড় ইলেকট্রন অবস্থা বলে। যার বিজোড় ইলেকট্রনের সংখ্যা যত বেশি সে তত বেশি ফেরোম্যাগনেটিক হবে, যেমন- ম্যাঙ্গানিজ(বিজোড় ইলেকট্রন ৫ টি), লোহা(বিজোড় ইলেকট্রন ৪ টি), কোবাল্ট(বিজোড় ইলেকট্রন ৩ টি), নিকেল(বিজোড় ইলেকট্রন ২ টি) ইত্যাদি ইত্যাদি।

আবার, আমরা জানি যখন কোনো চার্জ পার্টিক্যাল মুভ করে, তখন তার কারনে একটি ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি হয়। ইলেকট্রন গুলো অবিরাম নিউক্লিয়াস কে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকে, যার ফলে একটি করে কক্ষ একটি করে কারেন্ট লুপ হিসেবে বিবেচিত হয়, সেই কারনেই একটি ম্যাগনেটিক ফিল্ডের অস্তিত্ব থাকে। যদি কোনো একটি কক্ষকে দুটি ইলেকট্রন থাকে তাহলে তাদের স্পিন বা ঘূর্ণন একেঅপরের বিপরীত হয়, যদি একটি ইলেকট্রনের স্পিন ঘড়ির কাঁটার দিকে হয়, তাহলে অপরটির স্পিন হবে ঘড়ির কাঁটার বিপরীতে। এরকম ক্ষেত্রে ইলেকট্রন দ্বারা সৃষ্ট ম্যাগনেটিক ফিল্ড ক্যানশেল হয়ে যায়, কিন্তু যদি বিজোড় ইলেকট্রন থাকে তাহলে ক্যানশেল হ‌ওয়ার কোনো সুযোগ থাকে না। তাহলে এখান থেকে বোঝা যাচ্ছে এইরকম পদার্থ গুলির মধ্যে একটি চুম্বক চুম্বক ভাব রয়েছে। স্পষ্টত‌ই চুম্বক তৈরি করতে গেলে ফেরোম্যাগনেটিক পদার্থের প্রয়োজন আছে। তবে আয়নের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য, কারন আয়ন মূলত তৈরি হয় এক বা একাধিক ইলেকট্রন বর্জন করে, সেহেতু বিজোড় ইলেকট্রন থাকা খুবই স্বাভাবিক।

পৃথিবী অবিরাম তার নিজ অক্ষের চারিদিকে ঘুরছে, তার সাথে পৃথিবীর মধ্যে বা উপরে থাকা সমস্ত পদার্থ‌ও ঘুরছে। যার পর্যবেক্ষিত ফলাফল পৃথিবীর নিজস্ব ম্যাগনেটিক ফিল্ড। পৃথিবীর অভ্যন্তরে এক উত্তপ্ত কোর বর্তমান,

image

image

চিত্র- পৃথিবীর কোর

যেখানে সমস্ত পদার্থ তরল অবস্থায় থাকে, ফেরোম্যাগনেটিক পদার্থ গুলিও তরল অবস্থায় থাকে, যখন অগ্নুৎপাতের সময়, ম্যাগমা লাভা আকারে নির্গত হয় তখন এই চার্জড আয়ন বা ফেরোম্যাগনেটিক পদার্থ গুলিও নির্গত হয় পরবর্তীতে এগুলি ঠান্ডা হয়, প্রাকৃতিক চুম্বক হিসেবে গৃহীত হয়।

এই তো গেল প্রাকৃতিক চুম্বক, এবার আসি কৃত্রিম চুম্বকে

কৃত্রিম চুম্বক, কে সাধারণত আমরা দুভাবে তৈরি করতে পারি।

তার আগে আমাদের একটি টার্মের সাথে পরিচিতি ঘটাতে হবে, যাকে বলে ডোমেন।

image

চিত্র- ডোমেন

উপরিউক্ত প্রথম চিত্রের ন্যায়, প্রত্যেক পদার্থের মধ্যে একাধিক ইলেকট্রন ক্ষেত্র থাকে যাকে এক একটি ডোমেন বলে, যেখানে ইলেকট্রন গুলো random ঘোরাঘুরি করে, যার ফলে নেট ম্যাগনেটিক ফিল্ড সর্বদা শূন্য হয়। কিন্তু কোনো বহিঃস্থ চুম্বক দ্বারা পদার্থটিকে একটি নির্দিষ্ট দিকে স্পর্শ করিয়ে প্রভাবিত করলে ইলেকট্রন গুলো একটি নির্দিষ্ট দিকে সুসজ্জিত হয়(দ্বিতীয় চিত্র), আর ইলেকট্রনের এভাবে কোনো নির্দিষ্ট দিকে সুসজ্জিত হ‌ওয়াই চুম্বকত্বের পরিচয়। এই সমগ্ৰ প্রকিয়া কে ম্যাগনেটাইজেশন বলে।

আরেকভাবে চুম্বক তৈরি করা যায়, যেটা আমরা কমবেশি সবাই আমাদের ছোটোবেলায় করেছি, এটি

image

চিত্র- ইলেক্ট্রোম্যাগনেট

যাকে পদার্থবিদ্যায় ইলেক্ট্রোম্যাগনেট বলা হয়, যাকে খুব সহজেই বর্ণনা করা যায় অ্যাম্পিয়ারের সূত্র দিয়ে।

image

image

অ্যাম্পিয়ারের সূত্র

খুব সহজ ভাষায় বলতে গেলে কোনো লুপের মধ্যে দিয়ে কারেন্ট গেলে ম্যাগনেটিক ফিল্ড তৈরি হয়, যা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটের জন্য দায়ী। মজার ব্যাপার এই যে, আমরা খুব সহজেই এই চুম্বকের চৌম্বকত্ব নিয়ন্ত্রন করতে পারি, তার পাক সংখ্যা (number of turns) বাড়িয়ে, আর প্রবাহমাত্রার মান বাড়িয়ে, যা খুব সহজেই অ্যাম্পিয়ারের সূত্র থেকে জানা যায়।

চুম্বক শুধু লোহাকেই নয়, তার মতো বেশিরভাগ ফেরোম্যাগনেটিক পদার্থ দের আকর্ষণ করে, কেন?

সেটা আমি পাঠকের হাতেই ছেড়ে দিলাম, আমি অবশ্য এই উত্তরেই উত্তর দিয়ে ফেলেছি।

*আমি খুব সংক্ষেপে বর্ণনা দিয়েছি, আরও অনেক কিছু বলার ছিল, কিন্তু না বলতে পারাই দুঃখিত। ক্ষমা করবেন।

- শাহিল

0 টি ভোট
করেছেন (5,210 পয়েন্ট)
আপনি যখন চুম্বক বরাবর লোহার টুকরো ঘষেন, তখন লোহার পরমাণুর উত্তর-সন্ধানী খুঁটি একই দিকে সারিবদ্ধ হয়। সারিবদ্ধ পরমাণু দ্বারা উত্পন্ন বল একটি চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে । লোহার টুকরো চুম্বক হয়ে গেছে। কিছু পদার্থ বৈদ্যুতিক প্রবাহ দ্বারা চুম্বকীয় হতে পারে।
ধন্যবাদ

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+2 টি ভোট
3 টি উত্তর 932 বার দেখা হয়েছে
23 জুন 2021 "পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Sabbir Ahmed Sajid (8,670 পয়েন্ট)
+2 টি ভোট
2 টি উত্তর 1,760 বার দেখা হয়েছে
+5 টি ভোট
3 টি উত্তর 852 বার দেখা হয়েছে
25 ফেব্রুয়ারি 2021 "পদার্থবিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hasan Rizvy Pranto (39,270 পয়েন্ট)
+2 টি ভোট
3 টি উত্তর 1,348 বার দেখা হয়েছে
+8 টি ভোট
2 টি উত্তর 932 বার দেখা হয়েছে

10,809 টি প্রশ্ন

18,512 টি উত্তর

4,744 টি মন্তব্য

561,910 জন সদস্য

61 জন অনলাইনে রয়েছে
11 জন সদস্য এবং 50 জন গেস্ট অনলাইনে

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ পৃথিবী এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত #ask আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #science চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি মাথা স্বাস্থ্য প্রাণী গণিত মহাকাশ বৈজ্ঞানিক পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান খাওয়া গরম শীতকাল #জানতে ডিম চাঁদ কেন বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং শক্তি উপকারিতা সাপ লাল আগুন মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মাছ মস্তিষ্ক মশা শব্দ ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন উদ্ভিদ কালো পা মন কি বিস্তারিত রঙ পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাংলাদেশ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি কান্না দাঁত বিড়াল আম
...