মানসিক রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতায়ন বাড়ানো যায় কিভাবে? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+3 টি ভোট
214 বার দেখা হয়েছে
"স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে করেছেন (7,450 পয়েন্ট)

2 উত্তর

+2 টি ভোট
করেছেন (7,450 পয়েন্ট)
রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা সব মানুষের মধ্যে কমবেশি রয়েছে। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা হলো বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ও মানসিক রোগের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করার একটি প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, যা মানুষের জৈবিক গঠন, মানসিক গঠন ও সামগ্রিক মনোদৈহিক প্রক্রিয়ার ভেতর অন্তর্নিহিত থাকে। মানুষ যেহেতু শরীর ও মনের পারস্পরিক সমন্বয়, সেহেতু আমাদের মধ্যে শারীরিক ও মানসিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একই সঙ্গে কাজ করে।

মারাত্মক ছোঁয়াচে, প্রাণঘাতী হওয়ায় নতুন করোনাভাইরাস আমাদের স্বাভাবিক জীবন ও জীবনব্যবস্থাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। করোনাভাইরাস প্রতিরোধের জন্য মানসিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই ভাইরাস আমাদের শুধু শারীরিক দিক দিয়ে আক্রমণ করছে না, বরং মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত করে ফেলছে।

বর্তমান সময়ে আমাদের মধ্যে খুব সংগত কারণেই নানা ধরনের উদ্বেগ, ভয়ভীতি, বিষণ্নতা, শূন্যতা ইত্যাদি নেতিবাচক চিন্তা ও আবেগ কাজ করছে। এই সব নেতিবাচক অনুভূতি, আবেগ ও চিন্তাকে এড়িয়ে না চলে, প্রত্যাখ্যান না করে, এগুলোর সঙ্গে একাত্মতা জ্ঞাপন না করে এবং সর্বোপরি কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত না করে বরং তৃতীয় পক্ষ হিসেবে এগুলোকে নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষণ করা ও সহ্য করার ক্ষমতা তৈরি করতে হবে।

মানসিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একজন মানুষকে মানসিক চাপ, ভয়, অনিশ্চয়তা, হীনমন্যতা ও নেতিবাচক চিন্তাধারার বিরুদ্ধে টিকে থাকতে শক্তি দেয় এবং মনের ওপর এগুলোর নেতিবাচক প্রভাব কমিয়ে এনে মানসিক ভারসাম্য নিশ্চিত করে।

মানসিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য যা করা যেতে পারে:

১. পরিস্থিতি দেখে পলায়নপর হবেন না কিংবা এড়িয়ে যাবেন না
আমরা সাধারণত যেকোনো ধরনের বেদনাদায়ক ও কষ্টদায়ক উদ্দীপক এবং পরিবেশ থেকে মুক্তি চাই কিংবা এড়িয়ে যেতে চাই। পলায়নপর এই প্রবণতা অনেক সময় নেতিবাচক ফলাফল বয়ে আনে। কারণ, বাস্তবতা যতই প্রতিকূল হোক না কেন, তাকে অস্বীকার করে সেখান থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। বরং উল্টো বিভিন্ন মানসিক দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। তাই বর্তমান করোনা সংকটকে এড়িয়ে না গিয়ে বরং চলমান জীবনের একটা অংশ হিসেবে স্বীকার করে নিতে হবে প্রথমেই। সেখান থেকে একটি ইতিবাচক অর্থ তৈরি করার মাধ্যমে আমরা মানসিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারি।

২. কোনো ধরনের আবেগকে নিজের আত্মপরিচয়ের অংশ মনে করবেন না
অনিশ্চয়তার কারণে আমাদের মধ্যে ভয়, উদ্বিগ্নতা কাজ করবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই সব ভয় ও উদ্বিগ্নতাকে নিজের ব্যক্তিত্বের এবং আত্মপরিচয়ের অংশ মনে করবেন না। অর্থাৎ, বিদ্যমান ভয় ও উদ্বিগ্নতা মানেই আপনি নন। এই ধরনের ভয় ও উদ্বিগ্নতা হলো পূর্ব অভিজ্ঞতাবিহীন ও অনিশ্চিত পরিস্থিতির প্রতি আপনার শরীর ও মনের স্বয়ংক্রিয়, ক্ষণস্থায়ী ও স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। তাই এগুলোকে মন থেকে দূর করার চেষ্টা না করে শান্তভাবে মেনে নিতে হবে এবং সেগুলোর ওপর কোনো ধরনের ব্যক্তিগত অর্থ আরোপ না করে নিজেকে আনন্দদায়ক বা বাড়ির দৈনন্দিন কাজে ব্যস্ত রাখতে হবে। এতে বিদ্যমান ভয় ও উদ্বিগ্নতার প্রভাব ধীরে ধীরে কমে যাবে।

৩. নিজের অক্ষমতা স্বীকার করুন
এই সময় মনের মধ্যে বিপর্যয়মূলক বিভিন্ন চিন্তা আসতে পারে। যেমন: প্রিয় মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে কি না, চাকরি চলে যাবে কি না, পরিবার ও আত্মীয়স্বজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবে কি না। বিপর্যয়মূলক চিন্তা এলে সঙ্গে সঙ্গে আপনাকে এটাও চিন্তা করতে হবে যে আমাদের জীবনের সবকিছুই আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। সুতরাং এই অক্ষমতাটুকু অকপটে স্বীকার করে বিপর্যয়মূলক চিন্তাগুলোকে বাধা না দিয়ে বরং পরিবর্তনের স্বাভাবিক ইঙ্গিত হিসেবে সম্মান করার চেষ্টা করুন। এতে প্রিয় ও অপ্রিয় সবকিছুকে সাদরে গ্রহণ করার ক্ষমতা বাড়বে। একসময় দেখবেন বিপর্যয়মূলক চিন্তাগুলো আপনার মনের ভেতর বারবার ঘুরপাক খাওয়া নিজ থেকেই বন্ধ করে দেবে।

৪. অতীত কিংবা ভবিষ্যৎ নয়, বর্তমান নিয়ে ভাবুন
মানসিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর আরেকটি কার্যকর উপায় হলো নিজের মনকে অতীত ও ভবিষ্যতের দিকে না পাঠিয়ে বর্তমানের চলমান মুহূর্তের ভেতর ধরে রাখার চেষ্টা করা। এটা একটু কঠিন। কারণ, আমাদের মন সব সময় অতীত চিন্তা ও কিছুক্ষণ ভবিষ্যৎ চিন্তার ভেতর লাফালাফি করে। মন যখন অতীতের কোনো বিষয়ের প্রতি বেশি একাত্ম হয়ে যায়, তখন আমাদের ভেতর বিষণ্নতা তৈরি হয়। আর যখন ভবিষ্যতের প্রতি বেশি একাত্ম হয়ে যায়, তখন আমাদের ভেতর উদ্বিগ্নতা তৈরি হয়। মাত্রাতিরিক্ত অতীত ও ভবিষ্যতের চিন্তা অপরাধ বোধ ও আতঙ্ক তৈরি করে। তাই মানসিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য আমাদের মনকে সব সময় আমাদের দেহের ভেতর রাখতে হবে। কারণ, আমাদের দেহ সব সময় বর্তমানেই বাস করে।

যখন যে কাজটা করছি, তখন মনকে ঠিক ওই কাজের ভেতর আবদ্ধ রাখার চেষ্টা করতে হবে। এ ছাড়া নিজের শ্বাস-প্রশ্বাসের ওপর মনোযোগ রেখে অথবা শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় তলপেটের যে ওঠা-নামা হয়, সেটার প্রতি মনোযোগ রেখে প্রতিদিন সকালে, বিকেলে ও রাতে কমপক্ষে পাঁচ মিনিট করে ধ্যান করার চেষ্টা করুন। কারণ, ধ্যান আপনার মনকে বর্তমানের মধ্যে ধরে রাখার সক্ষমতা ধীরে ধীরে বাড়িয়ে দেয় এবং আপন মনের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানান দেয়।

৫. স্বজনদের সঙ্গে অকৃত্রিম বন্ধন তৈরি করুন
পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন ও পাড়া–প্রতিবেশীর সঙ্গে অকৃত্রিম বন্ধন তৈরি করা এবং বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ইতিবাচক সম্পর্ক মনকে সব সময় সতেজ রাখে এবং মনের পজিটিভ এনার্জি বাড়িয়ে দেয়।

যতটুকু সম্ভব মানুষকে আন্তরিকভাবে সাহায্য করার চেষ্টা করতে হবে। এতে মানুষের সঙ্গে মানুষের একাত্মতা বাড়ে। একাত্মতা মানুষের একাকিত্বের অনুভূতি দূর করতে সাহায্য করে।

৬. সৃজনশীল হোন
প্রতিদিন ছোটখাটো কোনো সৃজনশীল কাজ করার চেষ্টা করতে হবে। এতে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। পারিপার্শ্বিক চাপ মোকাবিলার কৌশল হিসেবে কোনো ধরনের মাদকদ্রব্য ও মাত্রাতিরিক্ত চা-কফি পান করা যাবে না। যেসব বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে চাপ তৈরি হচ্ছে, সেই সব উৎসকে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে চিহ্নিত করতে হবে। মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী যেসব উপাদান বর্তমানে মোকাবিলা করা সম্ভব, সেগুলোকে যৌক্তিক মন দিয়ে মোকাবিলা করতে হবে। আর যেসব উপাদানকে আপাতত নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, সেগুলো চিন্তার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে এবং এড়িয়ে চলতে হবে। এতে আপনার আত্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বাড়বে।

৭. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন
সঠিক সময়ে দৈনিক কমপক্ষে আট ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করতে হবে। কারণ, পর্যাপ্ত ঘুম মানসিক ও শারীরিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। নিয়মিত স্নান করা, নিজের কাপড়চোপড় নিজে ধোয়া, নিজের রুম নিজে পরিষ্কার করার অভ্যাস করতে হবে। বাড়ির কাজে অন্যকে সাহায্য করতে হবে, যা আপনার একটি দিনকে অর্থপূর্ণ করতে সাহায্য করবে। সেই সঙ্গে প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় পুষ্টিকর খাবার ও দেশি ফলমূল নিশ্চিত করতে হবে এবং অল্প সময়ের জন্য হলেও নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।

সব শেষে নিজের প্রতি, ভবিষ্যতের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির অনুশীলন করতে হবে। পৃথিবীর সমস্ত প্রাণ ও প্রকৃতিকে বন্ধু বলে মেনে নিতে হবে।

©️bbc
+2 টি ভোট
করেছেন (54,270 পয়েন্ট)
মানসিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একজন মানুষকে মানসিক চাপ, ভয়, অনিশ্চয়তা, হীনমন্যতা ও নেতিবাচক চিন্তাধারার বিরুদ্ধে টিকে থাকতে শক্তি দেয় এবং মনের ওপর এগুলোর নেতিবাচক প্রভাব কমিয়ে এনে মানসিক ভারসাম্য নিশ্চিত করে।

মানসিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য যা করা যেতে পারে:

১. পরিস্থিতি দেখে পলায়নপর হবেন না কিংবা এড়িয়ে যাবেন না

আমরা সাধারণত যেকোনো ধরনের বেদনাদায়ক ও কষ্টদায়ক উদ্দীপক এবং পরিবেশ থেকে মুক্তি চাই কিংবা এড়িয়ে যেতে চাই। পলায়নপর এই প্রবণতা অনেক সময় নেতিবাচক ফলাফল বয়ে আনে। কারণ, বাস্তবতা যতই প্রতিকূল হোক না কেন, তাকে অস্বীকার করে সেখান থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। বরং উল্টো বিভিন্ন মানসিক দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। তাই বর্তমান করোনা সংকটকে এড়িয়ে না গিয়ে বরং চলমান জীবনের একটা অংশ হিসেবে স্বীকার করে নিতে হবে প্রথমেই। সেখান থেকে একটি ইতিবাচক অর্থ তৈরি করার মাধ্যমে আমরা মানসিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারি।

২. কোনো ধরনের আবেগকে নিজের আত্মপরিচয়ের অংশ মনে করবেন না

অনিশ্চয়তার কারণে আমাদের মধ্যে ভয়, উদ্বিগ্নতা কাজ করবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই সব ভয় ও উদ্বিগ্নতাকে নিজের ব্যক্তিত্বের এবং আত্মপরিচয়ের অংশ মনে করবেন না। অর্থাৎ, বিদ্যমান ভয় ও উদ্বিগ্নতা মানেই আপনি নন। এই ধরনের ভয় ও উদ্বিগ্নতা হলো পূর্ব অভিজ্ঞতাবিহীন ও অনিশ্চিত পরিস্থিতির প্রতি আপনার শরীর ও মনের স্বয়ংক্রিয়, ক্ষণস্থায়ী ও স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। তাই এগুলোকে মন থেকে দূর করার চেষ্টা না করে শান্তভাবে মেনে নিতে হবে এবং সেগুলোর ওপর কোনো ধরনের ব্যক্তিগত অর্থ আরোপ না করে নিজেকে আনন্দদায়ক বা বাড়ির দৈনন্দিন কাজে ব্যস্ত রাখতে হবে। এতে বিদ্যমান ভয় ও উদ্বিগ্নতার প্রভাব ধীরে ধীরে কমে যাবে।

৩. নিজের অক্ষমতা স্বীকার করুন

এই সময় মনের মধ্যে বিপর্যয়মূলক বিভিন্ন চিন্তা আসতে পারে। যেমন: প্রিয় মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে কি না, চাকরি চলে যাবে কি না, পরিবার ও আত্মীয়স্বজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হবে কি না। বিপর্যয়মূলক চিন্তা এলে সঙ্গে সঙ্গে আপনাকে এটাও চিন্তা করতে হবে যে আমাদের জীবনের সবকিছুই আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। সুতরাং এই অক্ষমতাটুকু অকপটে স্বীকার করে বিপর্যয়মূলক চিন্তাগুলোকে বাধা না দিয়ে বরং পরিবর্তনের স্বাভাবিক ইঙ্গিত হিসেবে সম্মান করার চেষ্টা করুন। এতে প্রিয় ও অপ্রিয় সবকিছুকে সাদরে গ্রহণ করার ক্ষমতা বাড়বে। একসময় দেখবেন বিপর্যয়মূলক চিন্তাগুলো আপনার মনের ভেতর বারবার ঘুরপাক খাওয়া নিজ থেকেই বন্ধ করে দেবে।

৪. অতীত কিংবা ভবিষ্যৎ নয়, বর্তমান নিয়ে ভাবুন

মানসিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর আরেকটি কার্যকর উপায় হলো নিজের মনকে অতীত ও ভবিষ্যতের দিকে না পাঠিয়ে বর্তমানের চলমান মুহূর্তের ভেতর ধরে রাখার চেষ্টা করা। এটা একটু কঠিন। কারণ, আমাদের মন সব সময় অতীত চিন্তা ও কিছুক্ষণ ভবিষ্যৎ চিন্তার ভেতর লাফালাফি করে। মন যখন অতীতের কোনো বিষয়ের প্রতি বেশি একাত্ম হয়ে যায়, তখন আমাদের ভেতর বিষণ্নতা তৈরি হয়। আর যখন ভবিষ্যতের প্রতি বেশি একাত্ম হয়ে যায়, তখন আমাদের ভেতর উদ্বিগ্নতা তৈরি হয়। মাত্রাতিরিক্ত অতীত ও ভবিষ্যতের চিন্তা অপরাধ বোধ ও আতঙ্ক তৈরি করে। তাই মানসিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য আমাদের মনকে সব সময় আমাদের দেহের ভেতর রাখতে হবে। কারণ, আমাদের দেহ সব সময় বর্তমানেই বাস করে।

যখন যে কাজটা করছি, তখন মনকে ঠিক ওই কাজের ভেতর আবদ্ধ রাখার চেষ্টা করতে হবে। এ ছাড়া নিজের শ্বাস-প্রশ্বাসের ওপর মনোযোগ রেখে অথবা শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় তলপেটের যে ওঠা-নামা হয়, সেটার প্রতি মনোযোগ রেখে প্রতিদিন সকালে, বিকেলে ও রাতে কমপক্ষে পাঁচ মিনিট করে ধ্যান করার চেষ্টা করুন। কারণ, ধ্যান আপনার মনকে বর্তমানের মধ্যে ধরে রাখার সক্ষমতা ধীরে ধীরে বাড়িয়ে দেয় এবং আপন মনের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানান দেয়।

৫. স্বজনদের সঙ্গে অকৃত্রিম বন্ধন তৈরি করুন

পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন ও পাড়া–প্রতিবেশীর সঙ্গে অকৃত্রিম বন্ধন তৈরি করা এবং বজায় রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ইতিবাচক সম্পর্ক মনকে সব সময় সতেজ রাখে এবং মনের পজিটিভ এনার্জি বাড়িয়ে দেয়।

যতটুকু সম্ভব মানুষকে আন্তরিকভাবে সাহায্য করার চেষ্টা করতে হবে। এতে মানুষের সঙ্গে মানুষের একাত্মতা বাড়ে। একাত্মতা মানুষের একাকিত্বের অনুভূতি দূর করতে সাহায্য করে।

৬. সৃজনশীল হোন

প্রতিদিন ছোটখাটো কোনো সৃজনশীল কাজ করার চেষ্টা করতে হবে। এতে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। পারিপার্শ্বিক চাপ মোকাবিলার কৌশল হিসেবে কোনো ধরনের মাদকদ্রব্য ও মাত্রাতিরিক্ত চা-কফি পান করা যাবে না। যেসব বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে চাপ তৈরি হচ্ছে, সেই সব উৎসকে বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে চিহ্নিত করতে হবে। মানসিক চাপ সৃষ্টিকারী যেসব উপাদান বর্তমানে মোকাবিলা করা সম্ভব, সেগুলোকে যৌক্তিক মন দিয়ে মোকাবিলা করতে হবে। আর যেসব উপাদানকে আপাতত নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়, সেগুলো চিন্তার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে এবং এড়িয়ে চলতে হবে। এতে আপনার আত্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বাড়বে।

৭. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন

সঠিক সময়ে দৈনিক কমপক্ষে আট ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করতে হবে। কারণ, পর্যাপ্ত ঘুম মানসিক ও শারীরিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। নিয়মিত স্নান করা, নিজের কাপড়চোপড় নিজে ধোয়া, নিজের রুম নিজে পরিষ্কার করার অভ্যাস করতে হবে। বাড়ির কাজে অন্যকে সাহায্য করতে হবে, যা আপনার একটি দিনকে অর্থপূর্ণ করতে সাহায্য করবে। সেই সঙ্গে প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় পুষ্টিকর খাবার ও দেশি ফলমূল নিশ্চিত করতে হবে এবং অল্প সময়ের জন্য হলেও নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।

সব শেষে নিজের প্রতি, ভবিষ্যতের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির অনুশীলন করতে হবে। পৃথিবীর সমস্ত প্রাণ ও প্রকৃতিকে বন্ধু বলে মেনে নিতে হবে।

Source: Prothomalo

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+6 টি ভোট
2 টি উত্তর 358 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
3 টি উত্তর 181 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
1 উত্তর 117 বার দেখা হয়েছে
22 নভেম্বর 2021 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hojayfa Ahmed (135,480 পয়েন্ট)
+3 টি ভোট
1 উত্তর 156 বার দেখা হয়েছে
+5 টি ভোট
1 উত্তর 304 বার দেখা হয়েছে

10,720 টি প্রশ্ন

18,363 টি উত্তর

4,729 টি মন্তব্য

240,120 জন সদস্য

56 জন অনলাইনে রয়েছে
0 জন সদস্য এবং 56 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Ayon Ratan Agni

    390 পয়েন্ট

  2. Al Moyaj Khondokar

    210 পয়েন্ট

  3. Vuter Baccha

    150 পয়েন্ট

  4. Mehedi_Bknowledge

    110 পয়েন্ট

  5. Monojit Das

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী চোখ রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #ask চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি প্রাণী স্বাস্থ্য বৈজ্ঞানিক মাথা গণিত মহাকাশ পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি #science বিজ্ঞান #biology খাওয়া শীতকাল গরম কেন #জানতে ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা মাছ মস্তিষ্ক শব্দ ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস গ্রহ স্বপ্ন রসায়ন তাপমাত্রা উদ্ভিদ কালো কি বিস্তারিত রঙ পা পাখি গ্যাস মন সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত আম বিড়াল কান্না নাক
...