মানসিক রোগে আক্রান্ত হলে কি করতে হবে? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+3 টি ভোট
332 বার দেখা হয়েছে
"স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে করেছেন (7,450 পয়েন্ট)

2 উত্তর

+2 টি ভোট
করেছেন (54,270 পয়েন্ট)
মনোরোগ বিজ্ঞান বা মানসিক রোগ বিজ্ঞান (ইংরেজি: Psychiatry) হচ্ছে মানসিক রোগের চিকিৎসা বিষয়ক অধ্যয়ন। এই অধ্যয়নে মানসিক রোগের ব্যপ্তি, কারণ, নিদান, প্রতিকার ও প্রতিরোধের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। অন্যদিকে, মনোবিজ্ঞান বা মনস্তত্ত্ব (Psychology) বিষয়ে সাধারণত মনের (রোগবিহীন) বিষয়ে অধ্যয়ন করা হয়। মনোরোগ বিজ্ঞান অধ্যয়ন করে এই বিভাগের চিকিৎসা প্রদানকারীদেরকে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ (Psychiatrist) বলা হয়।

Psychiatry শব্দটি প্রথমে ব্যবহার করেছিলেন ১৮০৮ সালে জার্মান চিকিৎসক জোহান ক্রিস্টিয়ান রেইল (Johann Christian Reil)। Psychiatry শব্দটির আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে মানসিক রোগের ভেষজ চিকিৎসা।

সাধারণত মানসিক রোগ নির্ণয়ের জন্য রোগীর লক্ষণসমূহর বিষয় ও অন্যান্য প্রাসংগিক তথ্য আহরণ করা হয় ও মানসিক স্থিতির পরীক্ষণ (Mental Status Examination) করা হয়। কিছুক্ষেত্রে মনোবৈজ্ঞানিক পরীক্ষার (Psychoogical test) সহায়তা নেওয়া হয়। এইভাবে রোগ চিনে নেওয়ার পরে তার চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি যেমন ঔষধ, ব্যবহারিক চিকিৎসা, মনোবৈজ্ঞানিক চিকিৎসা, বৈদ্যুতিক মৃগী সৃষ্টি (Electro Convulsive Therapy, সংক্ষেপে ECT) ইত্যাদি বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।

সম্প্রতি বিশ্বে মানসিক রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রকাশ করেছে।

মানসিক রোগের লক্ষণ:

মানসিক রোগের লক্ষণ বিভিন্ন ধরণের হতে পারে। লক্ষণসমূ্হকে নিচে দেওয়া ধরণে আলোচনা করা যেতে পারে:

➢ চিন্তার ভ্রান্তি (Problems of Thought)

কিছু মানসিক রোগে রোগীর মনে অমূলক চিন্তা আসতে পারে, যাকে পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাখ্যা করা যায় না। এমন চিন্তার ভ্রান্তি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। যেমন, চিন্তার সংগতি না হওয়া, একটি ভুল চিন্তা মনে আসা ও সেইটিকে সত্যি বলে মেনে নেওয়া, মনে অমূলক চিন্তা আসতে থাকা ও সেই চিন্তার অমূলকতা জেনেও মন থেকে দূরীভূত করতে না পারা।

কয়েকটি উদাহরণ: অহেতুক সন্দেহবাতিকতা, যেমন কারো কোনো অপকার করা, কোনো রোগীকে অনুসরণ করে থাকা বলে ভাবা, পত্নী বা স্বামী অন্যের সাথে সম্বন্ধ স্থাপন করা বলে ভুল ভাবা, নিজের চিন্তা অন্য মানুষ জানতে পরে বলে ভাবা, কোনো শক্তি রোগীকে অনবরত নিয়ন্ত্রণ করে বলে ভাবা, একটি বিষয় বলতে আরম্ভ করে অন্য বিষয়ে চলে যাওয়া, কথার মধ্যে রয়ে যাওয়া ইত্যাদি।

➢ ইন্দ্রিয়ের ভ্রান্তি (Problems in Perception)

আমরা ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে বাইরের পৃথিবীর খবরাখবর রাখি এবং সেই মর্মেই আমাদের ব্যবহারের পরিবর্তন হয়ে থাকে। যেকোনো উৎসের খবর আমাদের ইন্দ্রিয় দ্বারা পাওয়াকে সংবেদ বা sensation বলা হয়। একটি সংবেদ আমাদের মস্তিষ্ক বিশ্লেষন করে ব্যাখ্যা করার পরে আমি বুঝতে পারি তার অর্থ কি, সেই প্রক্রিয়াটিকে বিভ্রম বা perception বলা হয়।

কিছু মানসিক রোগে রোগী উৎস না জেনেই কিছু বিভ্রম বা perception অনুভব করে। যেমন, কোনো কিছু কোন্ দিকে থাকা, বা গন্ধ পাওয়া, বা কোনো কিছুর দেখা পাওয়া ইত্যাদি। একে হ্যালুসিনেশন (hallucination) বলা হয়।

➢ আবেগের সমস্যা (Problems of Emotion)

সাধারণ মানুষ পরিস্থিতি সাপেক্ষে বিভিন্ন আবেগ অনুভব করে। কিন্তু কোনও একটা আবেগ মানুষ অনবরত অনুভব করতে পারে। যেমন বিষাদগ্রস্ততা, বা অতি মাত্রায় আনন্দ অনুভব করা, বা মানসিক চাপ অনুভব করা।

➢ বৈশ্লেষিক অপারগতা (Problems of Cognition)

আমরা যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে মস্তিষ্ককে একটি কম্পিউটারের মত করে ব্যবহার করি। পারিপার্শ্বিক থেকে আহরণ করা তথ্যকে মস্তিষ্কের স্মৃতিতে সঞ্চিত হয়ে থাকা তথ্যাবলীর সহায়তায় বিশ্লেষণ করে একটি সিদ্ধান্ত নেয়। এই গোটা প্রক্রিয়াটিকে বোধ বা Cognition বলা হয়। সঠিক বোধ বা Cognition-এর জন্য আমাদের ইন্দ্রিয়সমূহের সংবেদ (sensation), স্মৃতি (memory), মেধা (intelligence) ও ঐকান্তিকতার (attention and concentration) প্রয়োজন। এইকয়টিতে আসা অসুখসমূহ মানসিক রোগের লক্ষণ।

মানসিক রোগের চিকিৎসা পদ্ধতি:

বর্তমান মানসিক রোগের জন্য মূলত দুটি চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। ওষুধ ও অন্যান্য জৈবিক চিকিৎসা (biological therapy) ও মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা (psychotherapy)।

মানসিক রোগের জন্য বহুল ভাবে ওষুধের ব্যবহার করা হয়। অন্যান্য রোগের মতোই নিয়মিত ভাবে রোগীকে ওষুধ সেবন করতে হয়। কিছু অবস্থায় বৈদ্যুতিক পদ্ধতিতে রোগীর মস্তিষ্কে মৃগীর সৃষ্টি করে সুফল পাওয়া যায়। এই পদ্ধতিকে ECT (Electroconvulsive Therapy) বলা হয়। এর বাইরেও চুম্বকীয় ক্ষেত্র দ্বারা মস্তিষ্ককে শিহরিত করেও চিকিৎসা করা হয়।

মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা: কিছু মানসিক রোগে মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা ব্যবহার করা হয়। মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে রোগীর সাথে মনস্তত্ত্ববিদ (psychotherapist) আলোচনা করেন, এবং সেইসাথে রোগের লক্ষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা হয়। মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা কয়েক প্রকারের আছে। রোগ অনুসারে এই চিকিৎসা পদ্ধতির আলাদা আলাদা ধরণ প্রয়োগ করা হয়।

Source: Wikipedia
+1 টি ভোট
করেছেন (7,450 পয়েন্ট)

পৃথিবীজুড়ে মানসিক রোগের দুই ধরণের চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। তার একটি হচ্ছে কাউন্সেলিং বা পরামর্শ সেবা। আরেকটি ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহফুজা খানম বলছেন, ''কেউ মানসিক রোগে আক্রান্ত হলে মনোরোগবিদদের পরামর্শ নিতে পারেন। অনেক সময় কাউন্সেলিং থেরাপির মাধ্যমে সহজেই এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।''

''কিন্তু সেটা না হলে অবশ্যই মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সহায়তা নিতে হবে। তখন তারা ওষুধের মাধ্যমে রোগের চিকিৎসা করে থাকেন। প্রয়োজন ভেদে হাসপাতালে ভর্তি করেও চিকিৎসার দরকার হতে পারে।'' তিনি বলছেন।

তবে বাংলাদেশের সর্বত্র এখনো মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের সেবা পাওয়া যায় না। মূলত এই সেবাটি এখনো প্রধান শহরকেন্দ্রিক।

তবে মাহফুজা খানম পরামর্শ দিচ্ছেন, এখন অনেক বিশেষজ্ঞ অনলাইনে রোগী দেখছেন। এসব ক্ষেত্রে অনলাইনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া যেতে পারে।

সূত্র :বিবিসি

 

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+3 টি ভোট
2 টি উত্তর 294 বার দেখা হয়েছে
03 মার্চ 2021 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন EVAN (7,450 পয়েন্ট)
+3 টি ভোট
1 উত্তর 158 বার দেখা হয়েছে
+5 টি ভোট
1 উত্তর 304 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
1 উত্তর 119 বার দেখা হয়েছে
22 নভেম্বর 2021 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Hojayfa Ahmed (135,480 পয়েন্ট)
+6 টি ভোট
2 টি উত্তর 360 বার দেখা হয়েছে

10,723 টি প্রশ্ন

18,367 টি উত্তর

4,730 টি মন্তব্য

241,037 জন সদস্য

46 জন অনলাইনে রয়েছে
2 জন সদস্য এবং 44 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Ayon Ratan Agni

    390 পয়েন্ট

  2. Al Moyaj Khondokar

    210 পয়েন্ট

  3. Vuter Baccha

    150 পয়েন্ট

  4. Hasan rafi

    140 পয়েন্ট

  5. Mehedi_Bknowledge

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী চোখ রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #ask চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি প্রাণী স্বাস্থ্য বৈজ্ঞানিক মাথা গণিত মহাকাশ পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি #science বিজ্ঞান #biology খাওয়া শীতকাল গরম কেন #জানতে ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা মাছ মস্তিষ্ক শব্দ ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন গ্রহ রসায়ন তাপমাত্রা উদ্ভিদ কালো কি বিস্তারিত রঙ পা পাখি গ্যাস মন সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত আম বিড়াল কান্না নাক
...