মাথা ব্যাথার কারণ ও এর থেকে মুক্তির উপায় কী? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+1 টি ভোট
1,503 বার দেখা হয়েছে
"স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে করেছেন (141,820 পয়েন্ট)

2 উত্তর

+1 টি ভোট
করেছেন (141,820 পয়েন্ট)
নির্বাচিত করেছেন
 
সর্বোত্তম উত্তর

মাথা ব্যাথার কারণ ও মুক্তির উপায়:

​​​​
মাথাব্যথার ধরন বুঝে নির্ণয় করা সম্ভব কেন ও কী কারণে এ সমস্যা হচ্ছে। খুব পরিচিত দুটি কারণ হলো মাইগ্রেন আর টেনশন। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই টেনশন টাইপ হেডেক। ১১ শতাংশের জন্য দায়ী মাইগ্রেন। ধূমপান, মদ্যপান, মাদকাসক্তি, অনিয়মিত ও অতিরিক্ত ঘুমের ওষুধ সেবন, রোদ বা অতিরিক্ত গরম আবহাওয়া, অতিরিক্ত শারীরিক-মানসিক পরিশ্রম, ক্ষুধার্ত থাকা, মানসিক চাপ ইত্যাদি মাথাব্যথার কারণ। কাজেই এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে সবার আগে এসব অভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে।

মাইগ্রেনঃ

নারীরাই মাইগ্রেনে বেশি ভোগেন। সাধারণত ১৫ থেকে ১৬ বছর বয়স থেকে মাইগ্রেনের লক্ষণ দেখা দেয়। স্থায়ী হয় ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত। মাইগ্রেনে মাথাব্যথার লক্ষণগুলো হলো:

• মাথার যেকোনো একপাশে ব্যথা হয়। একবার একপাশে ব্যথা হলে পরের বার অন্য পাশেও ব্যথা হতে পারে।

• চার ঘণ্টা থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যথা স্থায়ী হতে পারে।

• মাথার দুই পাশের রক্তনালি বা রগ টনটন করছে বলে মনে হওয়া।

• ব্যথার তীব্রতায় কোনো কাজই ঠিকভাবে করা যায় না।

• আলো বা শব্দে ব্যথার তীব্রতা বেড়ে যায়।

• ব্যথার সঙ্গে বমিভাব বা বমি হতে পারে।

• ব্যথা শুরুর আগে চোখের সামনে আলোর নাচানাচি, আঁকাবাঁকা লাইন ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

• অন্ধকারে শুয়ে থাকলে ব্যথার তীব্রতা কমে।

টেনশন টাইপ মাথা ব্যথাঃ

মাথার মাংসপেশির সংকোচনের কারণে এ মাথাব্যথা হয়। এ ধরনের ব্যথার উপসর্গগুলো হলো:

• মাথাজুড়ে ব্যথা হয়।

• মাথা চেপে ধরে আছে—এমন অনুভূতি হওয়া।

• মাইগ্রেনের মতো ততটা তীব্র ব্যথা হয় না।

• এ ধরনের মাথাব্যথা কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

• দুশ্চিন্তা, পারিবারিক বা পেশাগত কিংবা মানসিক চাপের সঙ্গে এই ব্যথার সম্পর্ক আছে।

কী করবেনঃ

মাথাব্যথা থেকে তাৎক্ষণিক পরিত্রাণ পেতে বিভিন্ন ব্যথানাশক ওষুধ, যেমন প্যারাসিটামল ইত্যাদি সেবন করা যেতে পারে। ব্যথানাশক ওষুধের সঙ্গে অবশ্যই পেপটিক আলসাররোধী ওষুধ খেতে হবে। অতিরিক্ত ব্যথানাশক ওষুধ সেবনেও মাথাব্যথা হতে পারে। এ সমস্যাকে বলে মেডিসিন ওভার ইউজ হেডেক। তাই খুব প্রয়োজন না হলে ঘন ঘন ব্যথানাশক ওষুধ না খাওয়াই ভালো। চিকিৎসকের পরামর্শে দীর্ঘমেয়াদি কিছু ওষুধ সেবনে এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব।

ক্রেডিট: প্রথমে আলো
(অধ্যাপক, ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস ও হাসপাতাল)

0 টি ভোট
করেছেন (1,990 পয়েন্ট)

মাথাব্যথা কী ও কেন?

মাথা ও ঘাড় বরাবর ব্যথাই মাথাব্যথা নামে পরিচিত। ব্রেইন ও হাড়ের আবরণ তার চারপাশের রক্তনালি, নার্ভ তাদের আবরণ, মাথার চামড়ার নিচের মাংসপেশি, চোখ, সাইনাস, কান ও ঘাড়ের মাংসপেশির ইত্যাদির প্রদাহ এবং টানই মূলত মাথাব্যথার প্রধান কারণ। 

চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্রায় দেড়শ প্রকারের মাথাব্যথা রয়েছে। প্রতিটি মাথাব্যথার আলাদা আলাদা সুনির্দিষ্ট কারণ রয়েছে। এখানে উল্লেখযোগ্য যে অনেকের ভুল ধারণা রয়েছে মাথাব্যথা মানেই হাইপ্রেশার বা ব্রেইনের ক্যানসার। আসলে সেটা সত্য নয়। 

হাইপ্রেশারের মাথা জাতীয় কোনো লক্ষণ সাধারণত পাওয়া যায় না। তাই হাইপ্রেশারকে বলা হয় সাইলেন্ট কিলার। আর ব্রেইনের নিজস্ব কোনো পেইন ফাইবার নেই। তাই ব্রেইন তার নিজের ব্যথা নিজে বুঝতে পারে না। ব্রেইনের ভেতর টিউমার হলে তার প্রধান লক্ষণ যে ব্যথা এটা ঠিক নয়।

মাথার একেক পাশে ব্যথার একেকটা কারণ। যেমন মাইগ্রেনের ব্যথা সাধারণত মাথার এক দিকে হয়। আবার টেনশন টাইপ ব্যথা হয় সাধারণত পুরো মাথা জুড়ে। ক্লাস্টার মাথাব্যথা হয় চোখের ভেতর আর সাইনাস প্রদাহের জন্যে সাইনাস ব্যথা হয় নাকের পাশ বরাবর ও কপালের ভেতর। 

টেনশন টাইপ হেডেক:

সবচেয়ে বেশি মাথাব্যথার নাম হলো টেনশন টাইপ হেডেক (TTH) ।  টি.টি. এইচ. সারা মাথাজুড়ে হয় এবং খুব একটা তীব্র না হলেও সারাক্ষণ থাকে। মনে হয় কে যেন একটা রশি বা গামছা দিয়ে পুরো মাথাটা শক্ত করে বেঁধে দিয়েছে। চলাফেরায় এ ব্যথা বাড়ে না। সকালের দিকে এই ব্যথা কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর তীব্রতা বাড়তে থাকে। ক্লান্তি, অবসাদ, ঘুমের ব্যঘাত এই ব্যথা বেড়ে যায়।

মাইগ্রেন

দ্বিতীয় যে মাথাব্যথা হলো মাইগ্রেন। ছেলেদের থেকে মেয়েরা এতে বেশি ভুগে। সাধারণত মাথা একপাশে এ ব্যথা অনুভুত হয়।  এটি টি.টি. এইচ এর মতো সারাক্ষণ চিনচিন করে নয় বরং থেমে থেমে হয় এবং সেটা তীব্র থেকে তীব্রতর। 

মনে হয়, কে যেন কিছুক্ষণ পর পর হাতুড়ি দিয়ে পিটাচ্ছে মাথা বরাবর। আলোয় ও শারীরিক পরিশ্রমে এ ব্যথা বাড়ে তাই রোগী চুপচাপ অন্ধকার ঘরে শুয়ে থাকতে ভালোবাসে। কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েকদিন পর্যন্ত মাইগ্রেন পেইন থাকতে পারে। কিছুটা জেনেটিক বলে পরিবারের কারো থাকলে মাইগ্রেন হবার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

ক্লাস্টার হেডেক

সাধারণত চোখ বরাবর এ ব্যথা হয়। একটা নির্দিষ্ট সময় হয়, এবং দিনে কয়েকবার হয়। ক্লাস্টার হেডেক এ চোখ লাল হয়, চোখ দিয়ে পানি পড়ে, চোখের দৃষ্টিতেও  সামান্য ব্যঘাত হয়। দিনে রাতে একটা নির্দিষ্ট সময় পর পর হয়, নির্দিষ্ট সময় নিয়ে থাকে তাই একে ক্লাস্টার হেডেক বলে।

সাইনাস

নাকের দু’পাশের হাড়ে ও কপালের হাড়ের ভেতর ছোট ছোট কিছু ফাঁকা জায়গা থাকে। এগুলোকে সাইনাস বলে। এতে বাতাস থাকে এবং এই বাতাস ব্রেইনের ভারের সাম্যতা রাখে। 

হাড়ের ভেতর এসব সাইনাসের আবরণে প্রদাহ হলে বাতাস ও সর্দি জমে থাকে। এর ফলে সাইনাসগুলো বরাবর তীব্র ব্যথা হয়। এটাই সাইনুসাইটিস ব্যথা নামে সাইনাস হেডেক নামে পরিচিত। এ ব্যথার সঙ্গে সর্দি হাঁচি কাশি থাকে।

ক্রনিক ডেইলি হেডেক

মাসের প্রতিদিনই চিন চিন করে মাথাব্যথা হওয়াকে ক্রনিক ডেইলি হেডেক বলে। 

মেয়েদের শরীরের হরমোনের তারতম্যের জন্যে প্রায়ই মাথাব্যথা হয়। একে হরমোনাল হেডেক বলে। সাধারণত মাসিকের সময় বা আগে পরে ইস্ট্রোজেন হরমোন কমে যায় বলে এই ব্যথা হয়। তাছাড়া গর্ভাবস্থায় ও হরমোনের তারতম্যের জন্যে মাথাব্যথা হয়।

সেক্সুয়েল হেডেক

স্বামী-স্ত্রীর মিলনের সময় বা আগে ও পরে মাথাব্যথা হতে পারে। এর নাম সেক্সুয়াল হেডেক।  সাধারণত প্রচণ্ড এক্সারশনে এ ব্রেইনে রক্তচাপ বেড়ে গিয়ে এ ধরনের  ব্যথা হয়। এ ব্যথা খুব একটা তীব্র হয় না। এবং সেরে যায় কিছুক্ষণের মধ্যে।

তবে শারীরিক মিলনে হঠাৎ যদি কখনও তীব্র মাথাব্যথা হয় সেই সঙ্গে বমি ভাব, খিচুনি অজ্ঞান হয়ে যাওয়া তবে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে, কারণ রক্তনালির ত্রুটির (এনিউরিজম/ম্যালফরমেশন) জন্যে এ ব্যথা তীব্রতর হয় এবং এ থেকে অনেক সময় স্ট্রোক হয়ে মৃত্যু হতে পারে। 

এক্সারশন ছাড়া স্বামী-স্ত্রীর মিলনে ছন্দপতন থাকলেও অনেক সময় মাথাব্যথা হয়। সাধারণত মেয়েদের এ ব্যথা বেশি হয়। এ ব্যথাকে খুব একটা গুরুত্ব দেয়া হয় না। অথচ স্বামী-স্ত্রীর শুধুমাত্র মিলনের ছন্দপতনে ধীরে ধীরে সম্পর্কে ফাটল ধরে এবং ডিভোর্স হয়ে যায়।

অতিরিক্ত চা বা কফি পানে যেমন মাথাব্যথা হয় তেমনি অনেক সময় চা বা কফি পান থেকে বিরত  থাকলেও মাথাব্যথা হয়। 

কখনও কখনও কোনো কারণ ছাড়াই মাথাব্যথা হয়। কেবল মন খারাপ থাকলেও মাথাব্যথা হয়। একে সাইকোজেনিক পেইন বলে এবং এ সাইকোলজিকেল পেইনের সাইকোলজিক্যাল কারণ থাকে। সাইকিয়াট্রিক কাউনসেলিং ব্যতীত কখনোই এই ব্যথা সারার নয়।

দুই.

মাথাব্যথা অবহেলা করা ঠিক নয়। মামুলি কারণে যেমন মাথাব্যথা হয় তেমন অনেক বড় রকমের অসুখ-বিসুখের জন্যেও মাথাব্যথা হয়। তাই মাথাব্যথা কারণ সঠিকভাবে নিরুপণ, পুরোপুরি হিস্ট্রি নেয়া এবং যথাযথ চিকিৎসার জন্যে অবশ্যই মাথাব্যথাকে গুরুত্ব দিতে হবে।

লেখক: ডা. সাঈদ এনাম

মেম্বার, আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+9 টি ভোট
3 টি উত্তর 1,293 বার দেখা হয়েছে
17 অক্টোবর 2020 "জীববিজ্ঞান" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন M M Hossain Raghib (900 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
2 টি উত্তর 289 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
1 উত্তর 326 বার দেখা হয়েছে
27 ডিসেম্বর 2021 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Ismot Rahman (28,740 পয়েন্ট)

10,720 টি প্রশ্ন

18,363 টি উত্তর

4,729 টি মন্তব্য

240,196 জন সদস্য

52 জন অনলাইনে রয়েছে
0 জন সদস্য এবং 52 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Ayon Ratan Agni

    390 পয়েন্ট

  2. Al Moyaj Khondokar

    210 পয়েন্ট

  3. Vuter Baccha

    150 পয়েন্ট

  4. Mehedi_Bknowledge

    110 পয়েন্ট

  5. Monojit Das

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী চোখ রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #ask চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি প্রাণী স্বাস্থ্য বৈজ্ঞানিক মাথা গণিত মহাকাশ পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি #science বিজ্ঞান #biology খাওয়া শীতকাল গরম কেন #জানতে ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা মাছ মস্তিষ্ক শব্দ ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস গ্রহ স্বপ্ন রসায়ন তাপমাত্রা উদ্ভিদ কালো কি বিস্তারিত রঙ পা পাখি গ্যাস মন সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত আম বিড়াল কান্না নাক
...