৫৩৬ খ্রিস্টাব্দকে কেন ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ বছর বলা হয়? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

0 টি ভোট
306 বার দেখা হয়েছে
"পরিবেশ" বিভাগে করেছেন (3,220 পয়েন্ট)

1 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (3,220 পয়েন্ট)
ইতিহাসের সবচেয়ে খারাপ বছর হোল ৫৩৬ খ্রিষ্টাব্দ।

একদিন  বা  দু’দিন  নয়,  দীর্ঘ  ১৮ মাস
সূর্যের দেখা পায়নি বিশ্ববাসী। রহস্যময়
এক  কুয়াশা  ঢেকে  রাখে  সূর্যকে। এর
ফলে চারদিক  হয়ে পড়ে ঘন অন্ধকার!

বিশেষ করে ইউরোপ, মধ্য প্রাচ্য এবং এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল রহস্যজনকভাবে কুয়াশাচ্ছন্ন ছিল দীর্ঘ এই সময়ে। দিনের বেলা কুয়াশা সূর্যকে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। এ কারণে সূর্য না ওঠায় শীতের প্রকোপ বেড়ে যায়।

৩-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার প্রচণ্ড ঠান্ডা উপেক্ষা করে মানুষের বেঁচে থাকা দুষ্কর হয়ে ওঠে ওই সময়কালে। কৃষিকাজে ব্যাঘাত ঘটায় মানুষ না খেয়ে মারা যেতে থাকে। আক্ষরিক অর্থে এই কঠিন সময়কালকে মানুষ অন্ধকার যুগ হিসেবে অভিহিত করে।

বর্তমানে গবেষকরা সেই কুয়াশার রহস্য ভেদ করেছেন। প্রত্নতাত্ত্বিকরা এই রহস্যময় কুয়াশার কারণ হিসেবে জানিয়েছেন, ৫৩৬ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম দিকের আইসল্যান্ডে আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরণের ঘটনা। তখন উত্তর গোলার্ধে ছাই ছড়িয়ে পড়ে এবং কুয়াশা তৈরি হয়।

১৮১৫ সালে মাউন্ট তম্বোরার মতো অগ্নুৎপাত বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরণ। তখনও বেশ কয়েকমাস চারদিক কুয়াশাচ্ছন্ন ছিল। ধারণা করা হয়, ৫৩৬ খ্রিষ্টাব্দের বিস্ফোরণটিও এরকমই হয়েছিল। যার ফলে বৈশ্বিক জলবায়ুতে প্রভাব ফেলে এবং দুর্ভিক্ষের কারণ হয়।

১৮ মাস সূর্য না ওঠার বিষয়টি নিয়ে বাইজানটাইন ঐতিহাসিক প্রোকোপিয়াস লিখেছিলেন, দীর্ঘ ১৮ মাস সূর্যের আলো চাঁদের মতো হয়ে ছিল। অন্ধকার যেন কাটছিলোই না। মাঠভরা ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। মানুষ ঠান্ডায় ঘর থেকে বের হতেও পারছিল না। চারদিকে শুধু কুয়াশা আর কুয়াশা। না খেয়ে ঘরে ঘরে মানুষ মরে যাচ্ছিল। কারো আর্তনাদ শোনার মতো কেউ ছিল না।

১৯৯০ এর আগ পর্যন্ত ‘অন্ধকার যুগটি’ নিয়ে তেমন কেউ মাথা ঘামায়নি। অতঃপর বেশকিছু গবেষণা চলে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক এবং এন্টিওকিটি পেপারের সহ-লেখক মাইকেল ম্যাককর্মিক বলেছেন, ১৮৫৩ সালে যে আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল, তারপর গবেষকরা আয়ারল্যান্ডের গাছগুলো পরীক্ষা করেন। তারা সর্বত্রই আগ্নেগিরির ছাই দেখতে পান। তাদের ধারণা ৫৩৬ সালেও একই ঘটনার জেরে বিশ্ববাসী সূর্যের দেখা পায়নি।

এটি সত্যিই একটি দুর্দান্ত পরিবর্তন ছিল জলবায়ুর। আর বিষয়টি এক রাতের মধ্যেই ঘটেছিল, ম্যাককর্মিক এমনটিই লিখেছিলেন। রোমান রাজনীতিবিদ ক্যাসিওডোরাস লিখেছিলেন, আমরা দুপুরেও নিজেদের ছায়া দেখতে পারতাম না। সূর্যের রং হয়ে গিয়েছিল নীল। চাঁদের দেখাও মেলেনি। গ্রীষ্মকালও আসেনি। দীর্ঘ ১৮ মাস শুধু শীত আর শীত। কনকনে ঠান্ডায় না খেয়ে অনেকেই মুত্যুবরণ করেন।

ম্যাককর্মিকের মতে, ইতিহাসের সবচেয়ে খাবার বছর ছিল ৫৩৬ খ্রিষ্টাব্দ। কারণ তখন বেঁচে থাকা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। মাইন ইউনিভার্সিটির আর্থ ও জলবায়ু বিজ্ঞানের অধ্যাপক এবং পুরাকীর্তির গবেষণাপত্রের আরেক সহ-লেখক আন্দ্রেই কোরবাতভ বলেছেন, এখন পর্যন্ত আবিষ্কারকৃত আগ্নেয়গিরির বিস্ফোরণ ঘটনার রহস্য অজানা। ৫৩৬ খ্রিষ্টাব্দের কুয়াশার কারণ হিসেবে আমরা আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরণের ছাইকেই দোষারোপ করছি। ভয়ংকর ওই আগ্নেয়গিরি বিস্ফোরণের ফলেই সূর্য ছাইয়ে ঢেকে যায়।

এর ঠিক কয়েক বছর পরেই ৫৪১ খ্রিষ্টাব্দে বুবোনিক প্লেগ ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বে। রোমান সাম্রাজ্য থেকে শুরু করে মিশর-ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে মহামারি প্লেগ। অন্ধকার যুগ এবং প্লেগের ভয়াবহতার কারণে প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ মারা যায় ৫৩৬ থেকে শুরু করে ৫৪১ খ্রিষ্টাব্দ সময়কাল পর্যন্ত।     

সূত্র...ক্রনিকাল 536 এডি

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+7 টি ভোট
2 টি উত্তর 424 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
2 টি উত্তর 249 বার দেখা হয়েছে
25 জুন 2021 "পরিবেশ" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন মেহেদী হাসান (141,850 পয়েন্ট)
+2 টি ভোট
2 টি উত্তর 220 বার দেখা হয়েছে
30 এপ্রিল 2024 "পরিবেশ" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Ahnaf_Tahmid (7,800 পয়েন্ট)
0 টি ভোট
1 উত্তর 314 বার দেখা হয়েছে
19 অক্টোবর 2021 "বিবিধ" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Md. SH Shimanto (670 পয়েন্ট)

10,834 টি প্রশ্ন

18,537 টি উত্তর

4,746 টি মন্তব্য

842,737 জন সদস্য

13 জন অনলাইনে রয়েছে
0 জন সদস্য এবং 13 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. M_Hamza

    180 পয়েন্ট

  2. f8betvin

    100 পয়েন্ট

  3. bet5455

    100 পয়েন্ট

  4. 23winhow

    100 পয়েন্ট

  5. proestimating

    100 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ পৃথিবী এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল #science ক্ষতি চুল কী চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত মহাকাশ বৈজ্ঞানিক পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান গরম খাওয়া #জানতে শীতকাল ডিম বৃষ্টি চাঁদ কেন কারণ কাজ বিদ্যুৎ রং রাত শক্তি উপকারিতা সাপ লাল আগুন গাছ মনোবিজ্ঞান খাবার সাদা মস্তিষ্ক আবিষ্কার দুধ উপায় হাত শব্দ মাছ মশা ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন কালো উদ্ভিদ পা মন কি বিস্তারিত রঙ পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য বাচ্চা হলুদ বাংলাদেশ সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি কান্না দাঁত বিড়াল আম
...