ক্ষেত্র বিশেষে আগুনের রঙ ভিন্ন ভিন্ন হয় কেন? যেমনঃ গ্যাসের চুলার আগুনের রঙ নীল, খড়ির চুলার আগুনের রঙ হলুদ আবার কামারের লোহা গলানো আগুনের রঙ লাল। - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

0 টি ভোট
1,015 বার দেখা হয়েছে
"পরিবেশ" বিভাগে করেছেন (120 পয়েন্ট)

1 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (43,950 পয়েন্ট)

আগুন হল আলো আর তাপ একসাথে। অক্সিজেন আর কোন জ্বালানী ( যেমন- কাঠ কিংবা পেট্রোলিয়াম তেল) উত্তপ্ত করলেই পাবেন আগুন। যে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় আগুন জ্বলে তাকে বলে দহন ( আমরা বলি ‘পোড়ানো’) । যখন যথেষ্ট তাপ থাকে তখনই অক্সিজেন আর জ্বালানীর বিক্রিয়ায় তৈরি হয় কার্বন ডাই অক্সাইড সহ অন্যান্য নানা গ্যাস। সাথে সাথে জ্বালানীর ভেতরের সঞ্চিত শক্তি বের হয়ে আসে আলো আর তাপ হয়ে। আর আমরা দেখি আগুন। এই তাপে কার্বন ডাই অক্সাইড আর অন্যান্য যেসব গ্যাস তৈরি হয় তারা উত্তপ্ত হয়। গরম হলে আয়তন বাড়ে। তখন ঘনত্ব কমে যায় বা গ্যাস হালকা হয়ে যায়। উঠতে থাকে উপরে। এই উত্তপ্ত গ্যাসের সাথেই উপরে উঠে যায় বেশিরভাগ তাপ।

আগুন স্বাভাবিক দৃষ্টিতে দেখলে হলুদ। কিন্তু নীল আগুন সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা বলছেন, গতানুগতিক হলুদ আগুনের শিখাতেও নীল বর্ণ তৈরি হয়। হলুদ রঙের জন্য দায়ী বিকিরিত ধুলিকণা। যদি অগুন জ্বলার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ অক্সিজেন না থাকে তাহলে জ্বালানীর সম্পূর্ণ দহনের ফলে এ ধরনের ধুলিকণা বা ধোঁয়া তৈরি হয়। আগুনের নীল রং নির্দেশ করে এতে কোনো ধোঁয়া নেই বা থাকলেও খুব সমান্য পরিমাণে আছে এবং জ্বালানী সুষমভাবে পুড়ছে।

image

ছবি গুগল

আগুনের রং কি হবে তা নির্ভর করে আগুন দ্বারা উৎপন্ন তাপের উপর। এটা বোঝার জন্য আমাদের জানতে হবে ব্ল্যাক বডি রেডিয়েশন এমিশন (Black Body Rediation Emission)। ব্ল্যাক বডি রেডিয়েশন এমিশন হল এক ইলেক্ট্রোম্যাগন এটিক রেডিয়েশন যা প্রত্যেক বস্তু থেকেই বের হয়। যখন তাপমাত্রা কম থাকে, যেমন আমাদের রুমের তাপমাত্রা তখন বস্তুর থেকে যে রেডিয়েশন বের হয় তা আমাদের দৃষ্টি সীমার মধ্যে থাকে না তাই আমরা তা দেখতে পারি না। অনেকটা লোহা গরম করার মত, গরম করার প্রথম দিকে স্পর্শ করলে বোঝা যাবে লোহা গরম কিন্তু রঙের কোন পরিবর্তন দেখা যায় না। কিন্তু যখন তাপমাত্রা বাড়তে থাকে তখন রেডিয়েশন আমাদের দৃষ্টি সীমার মধ্যে আসতে থাকে। আর তাই আমরা দেখি লোহা অনেক গরম হলে লাল/কমলা রঙের হয়ে যায়। আগুনও তাই। আগুন জ্বলার সময় পরিবেশের পার্টিকেল গুলকে পুড়াতে থাকে যার থেকে রেডিয়েশন বের হয় এবং তাপমাত্রা বাড়তে বাড়তে আগুনের রং হাল্কা লাল থেকে, গাঢ় লাল এবং কমলা হয়ে যায়। আর এই তাপমাত্রা আরও বাড়তে থাকলে আগুন কমলা রং থেকে নীল রং হয়ে যায়। এর এই কারণে উৎসের কাছে আগুনের রং নীল থাকে আর উৎস থেকে দুরে আগুন হলুদ বা লাল থাকে। বাসার চুলায় দেখলে আশা করি ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। এই হল আগুনের রং। যদিও আগুনের আরও অনেক রং হয়, সেটা অবশ্য কিছু নির্দিষ্ট রাসায়নিক বস্তুর সাথে বিক্রিয়ার ফলে। ক্যামিষ্ট্রি ল্যাবে অনেক রকমের আগুন দেখা যায়।

আগুনের তাপমাত্রা থাকে প্রায় ৭৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস কিন্তু ঠিক শিখার মধ্যে (core) ওই উষ্ণতা প্রায় ১৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ভাল করে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে মােমবাতির শিখায় নীলচে আভা ও শিখার বাইরে আগুনের রঙ অনেকটা লালাভ-কমলা।অর্থাৎ শিখার ভেতর থেকে বাইরের রঙ বেশ আলাদা। সুতরাং তাপমাত্রা আলাদা হলে আগুনের রঙ পাল্টে যাবে।মােটামুটি লালাভ আগুনের তাপমাত্রা ৫০০-১০০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, কমলা আগুনের তাপমাত্রা ১০০০-১২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, হলুদের বেলায় তা ১২০০-১৪০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর ১৪০০-১৫০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় আগুনের রঙ হয় সাদা।এর থেকেও বেশি তাপমাত্রায় (প্রায় ১৫০০-১৮০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) আবার নীলথেকে ক্রমশ বেগুনি রঙের আগুনের শিখা দেখা যায়। এই কারণেই আমরা বিভিন্ন বস্তু দহনে উৎপন্ন আগুনের বিভিন্ন রঙ দেখতে পাই।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

0 টি ভোট
3 টি উত্তর 751 বার দেখা হয়েছে
22 অক্টোবর 2021 "রসায়ন" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Mehedy Hasan (1,310 পয়েন্ট)
+11 টি ভোট
4 টি উত্তর 2,184 বার দেখা হয়েছে
22 অগাস্ট 2020 "বিবিধ" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন বিজ্ঞানের পোকা ৫ (123,400 পয়েন্ট)
+8 টি ভোট
2 টি উত্তর 1,456 বার দেখা হয়েছে
28 জানুয়ারি 2021 "বিবিধ" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন noshin mahee (110,340 পয়েন্ট)

10,863 টি প্রশ্ন

18,562 টি উত্তর

4,746 টি মন্তব্য

860,543 জন সদস্য

34 জন অনলাইনে রয়েছে
5 জন সদস্য এবং 29 জন গেস্ট অনলাইনে

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ পৃথিবী এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান রোগ রাসায়নিক #ask শরীর রক্ত আলো মোবাইল #science ক্ষতি চুল চিকিৎসা কী পদার্থবিজ্ঞান প্রযুক্তি সূর্য স্বাস্থ্য মাথা প্রাণী গণিত মহাকাশ বৈজ্ঞানিক #biology পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান গরম খাওয়া #জানতে শীতকাল ডিম বৃষ্টি চাঁদ কেন কারণ কাজ বিদ্যুৎ রং রাত শক্তি উপকারিতা সাপ লাল মনোবিজ্ঞান আগুন গাছ খাবার সাদা মস্তিষ্ক আবিষ্কার শব্দ দুধ উপায় হাত মাছ মশা ঠাণ্ডা ব্যাথা বাতাস ভয় স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন কালো উদ্ভিদ পা মন কি বিস্তারিত রঙ পাখি গ্যাস সমস্যা বাচ্চা মেয়ে বৈশিষ্ট্য মৃত্যু হলুদ বাংলাদেশ সময় ব্যথা চার্জ অক্সিজেন দাঁত ভাইরাস আকাশ গতি কান্না বিড়াল আম
...