পূর্ব তিমুর কেন ইন্দোনেশিয়া থেকে আলাদা হয়ে গেছে? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+2 টি ভোট
419 বার দেখা হয়েছে
"বাংলাদেশ ও বিশ্ব" বিভাগে করেছেন (15,280 পয়েন্ট)

2 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (12,550 পয়েন্ট)

পূর্ব তিমুর ১৯৭৫ সালের ২৮ নভেম্বর পর্তুগাল থেকে নিজেকে স্বাধীন ঘোষণা করে, কিন্তু তার নয় দিন পরেই পূর্ব তিমুরকে আক্রমণ করে প্রতিবেশী ইন্দোনেশিয়া। তখন দেশটি ইন্দোনেশিয়ার একটি প্রদেশ হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হয়। পরবর্তী দুই-দশক সময়ে দখলদার ইন্দোনেশিয়ার শাসনে পরিস্থিতি শান্ত করার একটি কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছিল। যদিও ইন্দোনেশিয়া পূর্ব তিমুরের দখলের সময় অবকাঠামোগত ক্ষাতে যথেষ্ট পরিমাণে বিনিয়োগ করেছিল,কিন্তু তারপরও অসন্তুষ্টি ব্যাপক বিস্তার লাভ করে। ১৯৭৫ থেকে ১৯৯৯-এর মধ্যে সঙ্ঘাতে প্রায় ১০০,৮০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল (প্রায় ১৮,৬০০ হত্যাকাণ্ড এবং খিদে ও অসুস্থতায় মৃত্যূ আরও ৮৪,২০০), যার বেশিরভাগই ইন্দোনেশিয়ান দখলকালে ঘটেছিল।

৩০ শে আগস্ট ১৯৯৯, জাতিসংঘ-প্রস্তাবিত গণভোটে পূর্ব তিমুরের জনগণ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতায় ইন্দোনেশিয়া থেকে স্বাধীনতার পক্ষে ভোট দিয়েছিল। গণভোটের সাথে সাথেই পূর্ব তিমুরের স্বাধীনতাবিরোধী মিলিশিয়ারা - ইন্দোনেশিয়ান সামরিক বাহিনী দ্বারা সংগঠিত ও সমর্থিত হয়ে- ব্যাপক জ্বালাও-পোড়াও শুরু করে। মিলিশিয়ারা প্রায় ১,৪০০ জন তিমোরিকে হত্যা করেছিল এবং ৩০০,০০০ লোককে শরণার্থী হিসাবে পশ্চিম তিমুরের দিকে ঠেলে দেয়। এই আক্রমণে দেশের বেশিরভাগ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। ১৯৯৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ইন্টারন্যাশনাল ফোর্স ফর ইস্ট তিমুর (ইন্টারফেট) পূর্ব তিমুরে মোতায়েন করা হয় যার মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে সহিংসতার অবসান ঘটিয়েছিল। জাতিসংঘ-পরিচালিত একটি অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের পর ২০ ই মে ২০০২ তারিখে পূর্ব তিমুর আন্তর্জাতিকভাবে একটি স্বতন্ত্র দেশ হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে।

0 টি ভোট
করেছেন (33,350 পয়েন্ট)
ওই এলাকায় পোর্তুগিজ উপনিবেশের কারণে আলাদা সংস্কৃতি ছিল। পরে একসময় সুযোগ পেয়ে ইন্দোনেশিয়া ওই দেশ দখল করে নেয়।

আক্রমণের শুরু থেকেই ইন্দোনেশিয়া বর্বরতার আশ্রয় নেয়। তাদের সেনাবাহিনী ইস্ট তিমোরের বিভিন্ন শহরে ঠাণ্ডা মাথায় হাজার হাজার মানুষকে খুন করে। মহিলাদের ধর্ষন করে খুন করা হয়। শিশুদের ট্রাকে করে নিয়ে গিয়ে পাহাড়ের ওপর থেকে ছুড়ে ফেলা হয়।

ইন্দোনেশিয়ার অন্য অংশের মত ইস্ট তিমোরে ইসলামী প্রভাব ছিল না। ওখানকার মানুষ মূলত অ্যানিমিস্ট ছিলেন। ইন্দোনেশিয়ার নিয়ম অনুযায়ী একমাত্র একেশ্বরবাদী ধর্মকেই মান‍্যতা দেওয়া হত। সেজন্য দলে দলে তিমোরের লোকজন খ্রিস্টান ক‍্যাথোলিক ধর্ম গ্রহণ করে।

বিদ্রোহীদের দমনের জন্য ইন্দোনেশিয়া ডেমোগ্রাফি বদলের চেষ্টা করে। জাভা ও বালি থেকে হিন্দু মুসলমান গরিব চাষিদের সেখানে জমি দেওয়া হয়। কিন্তু তাদের অনেকে বিদ্রোহী ও স্থানীয় লোকজনের হাতে মারা যায়।

ইন্দোনেশিয়া পোর্তুগিজ ভাষা নিষিদ্ধ করে বাহাসা ইন্দোনেশিয়ার প্রচলন করে। সাধারণ মানুষকে বিদ্রোহী বলে সন্দেহ হলে হত্যা, গণহত্যা করা হত। অনেকেই হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যেতেন।

ইন্দোনেশিয় সেনারা ওই এলাকায় বহু মহিলাকে যৌনদাসীতে পরিনত করে। অনেককে জবরদস্তি "বিয়ে" দেওয়া হয়। এর পুরোটা ইন্দোনেশিয়া সরকারের অনুমতিতে চলে। সেনাবাহিনীর কাছে এরকম স্থানীয় মহিলাদের রেজিস্টার থাকত, যাদের যে কোন সময় যৌন নির্যাতনের জন্য ডেকে পাঠানো হত। লক্ষ লক্ষ মানুষ পরিবার বাঁচাতে গিয়ে নিহত হন। স্থানীয় জনসংখ্যা যাতে না বাড়ে, সেজন্য forced sterilization করা হয়।

শুধু তাই নয়, ব্রিটিশ সরকার বাংলায় যেভাবে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ করেছিল, তেমনি ইস্ট তিমোরের জনতাকে ধ্বংস করতে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ করা হয়। ইস্ট তিমোরের লোকজন দুর্গম এলাকায় লুকিয়ে পড়ে। তখন ইন্দোনেশিয়ার সরকার রাসায়নিক অস্ত্রের ব‍্যবহার করে ওই এলাকার ফসল নষ্ট করে দেয়। যখন খিদের জ্বালায় মানুষ সমতলে নেমে আসত, তখন তাদের হত্যা করা হত। এছাড়া প্রচুর মানুষকে বিভিন্ন ক‍্যাম্পে রাখা হয় সেখানেও অনেকে মারা যান। বাকিদের অন‍্যত্র বসবাসের অযোগ্য জায়গায় পাঠানো হয়।

ইন্দোনেশিয়ার সরকারের আরেকটি অপরাধ হল তিমোরের দম্পতিদের থেকে সন্তান কেড়ে নিয়ে তাদের ইন্দোনেশিয়ার দম্পতিদের হাতে দেওয়া। সেই সঙ্গে গেরিলা বিদ্রোহীদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যাওয়ার সময় ৫০-৮০হাজার মানুষকে হিউম্যান শিল্ড হিসেবে নিয়ে যাওয়া হয়।

এরপর ধীরে ধীরে এই নির্যাতনের কথা আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় প্রকাশিত হয়। ইন্দোনেশিয়ার সরকারও একের পর এক ম‍্যাসাকার করে ব‍্যাকফুটে চলে যায়। অবশেষে রাষ্ট্রপুঞ্জের সহায়তায় গণভোটের মাধ্যমে পূর্ব তিমোর স্বাধীন হয়। তবে ভোটের পরপরই ইন্দোনেশিয়াপন্থীরা, যারা ডেমোগ্রাফি চেঞ্জের কারণে ওখানে এসেছিল, তারা ফের গণহত্যা চালায়।অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা সহ পশ্চিমা দেশগুলোর চাপে অবশেষে ইন্দোনেশিয়া পূর্ব তিমোর থেকে সৈন্য সরিয়ে নেয়।এরপরও সেখানে রাজনৈতিক গন্ডগোল লেগে রয়েছে। তবে ধীরে ধীরে দেশটি উন্নতি করছে। তাদের সমাজও খ্রীস্টান ধর্মের গোঁড়ামি ছেড়ে অনেক উদার হচ্ছে।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+8 টি ভোট
5 টি উত্তর 500 বার দেখা হয়েছে
09 নভেম্বর 2020 "প্রাণিবিদ্যা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Md.Mahfuz (2,930 পয়েন্ট)
+1 টি ভোট
1 উত্তর 695 বার দেখা হয়েছে
+2 টি ভোট
4 টি উত্তর 1,032 বার দেখা হয়েছে

10,826 টি প্রশ্ন

18,535 টি উত্তর

4,745 টি মন্তব্য

841,931 জন সদস্য

23 জন অনলাইনে রয়েছে
1 জন সদস্য এবং 22 জন গেস্ট অনলাইনে

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান চোখ পৃথিবী এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান রোগ রাসায়নিক শরীর #ask রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল #science কী চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি মাথা স্বাস্থ্য প্রাণী গণিত মহাকাশ বৈজ্ঞানিক পার্থক্য #biology এইচএসসি-আইসিটি বিজ্ঞান গরম খাওয়া #জানতে শীতকাল ডিম বৃষ্টি চাঁদ কেন কারণ কাজ বিদ্যুৎ রং রাত শক্তি উপকারিতা সাপ লাল আগুন গাছ মনোবিজ্ঞান খাবার সাদা মস্তিষ্ক আবিষ্কার দুধ উপায় হাত শব্দ মাছ মশা ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন তাপমাত্রা গ্রহ রসায়ন কালো উদ্ভিদ পা মন কি বিস্তারিত রঙ পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য বাচ্চা হলুদ বাংলাদেশ সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি কান্না দাঁত বিড়াল আম
...