অ্যান্টম্যান এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

0 টি ভোট
394 বার দেখা হয়েছে
"তত্ত্ব ও গবেষণা" বিভাগে করেছেন (2,760 পয়েন্ট)

1 উত্তর

0 টি ভোট
করেছেন (2,760 পয়েন্ট)
 
সর্বোত্তম উত্তর

মার্ভল সুপার হিরোদের মধ্যে অন্যতম একজন স্কট ল্যাঙ (Scott Lang); যিনি Ant-man নামে বিখ্যাত। তার স্পেশাল পাওয়ার হচ্ছে তিনি চাইলেই পরমাণুর মতো ক্ষুদ্র বা বিল্ডিং এর মতো বিশাল আকার ধারণ করতে পারেন। ল্যাঙ এর এই স্পেশাল পাওয়ার এর পিছনে দায়ী বায়োফিজিস্ট হ্যাঙ্ক পিম (Hank pym) এর তৈরি স্পেশাল স্যুট। এখন কথা হচ্ছে এমনটা বাস্তব জীবনে এমনটা  হওয়া কি সম্ভব? এর পিছনে আদৌও কোনো বিজ্ঞান কি আছে বা এর ভিত্তি -ই বা কি?

এসব কিছুর এক কথায় উত্তর হচ্ছে পিম পার্টিক্যাল বা পিম কণা। “পিম কণা হচ্ছে সাব এটমিক পার্টিকেল বা সহজ বাংলায় আণুবীক্ষণিক যেকোনো কণা যারা নিজেদের মধ্যে সংযোগ ঘটায়। যেমন ইলেকট্রন, নিউট্রন, ফোটন বা আলফা কণার মধ্যে " #MarvelEntertainment_101

আসুন আরেকটু গভীরে যাই, প্রথমেই এজন্য দরকার কোয়ান্টাম ম্যাকানিক্সের সাহায্য। কোয়ান্টাম ম্যাকানিক্সের অন্যতম ভিত্তি নিলস বোরের (Niels Bohr) পরমানুর মডেল (ব্যাচ'২১ এর যেটা অ্যাসাইনমেন্ট আর বাকীদের বুঝার সুবিধার্থে কমেন্টে চিত্র)। এই পরমাণু মডেল অনুযায়ী কোনো একটি অরবিটাল এর ইলেকট্রন বিভব শক্তি নির্ভর করে এর বোর ব্যাসার্ধ এবং ভরের উপর। অর্থাৎ আপনি যদি শক্তির পরিমাণ একই রেখে ভর বাড়াতে চান আপনাকে তাহলে অবশ্যই বোর ব্যাসার্ধ কমাতে হবে।

এখন আসি এই মডেল কিভাবে ল্যাঙ এর সুপার পাওয়ার এর ক্ষেত্রে কাজ করে। আমাদের ক্ষেত্রে দেহের যত ইলেকট্রনগুলো আছে তারা সবাই পরস্পরকে বিকর্ষণ করে যার কারণে দেহের সকল পরমাণুর মধ্যে একটা দূরত্বের ভারসাম্য থাকে কিন্তু যদি কোনো ভাবে বোর ব্যাসার্ধ হ্রাস পায় তাহলে পরমাণু তাদের নিউক্লিয়াসে একত্রিত হওয়ার জন্য আরও জায়গা পাবে! খাটি বাংলায় সাইজে ছোট হওয়া যাবে।আর যদি বোর ব্যাসার্ধ বাড়ানো যায় তাহলে বড়! আর এই পিম পার্টিকেল এর কাজই হচ্ছে বোর ব্যাসার্ধ নিয়ন্ত্রণ করে ল্যাঙকে তার প্রয়োজন মতো আকার দেওয়া (রেফারেন্সঃ Tales to astonish)

এটাতো গেল কিভাবে সুট কাজ করে তার ব্যাখ্যা কিন্তু এখানে একটা জটিলতা থেকে যায় যে, ল্যাঙ বা ওয়াসপ যখন আকারে অনেক ছোট হয়ে যায় তখন তাদের একটি বায়ুমন্ডলীয় ঘনত্ব অতিক্রম করতে হয় যা মাউন্ট এভারেস্ট এর চুড়ার মতো প্রেশার দেয়।এইরকম প্রেশারে যে কেউ-ই মারা যাবে! তাহলে ল্যাঙ শ্বাস নেয় কিভাবে? 

এইরকম সিচুয়েশন নিয়ে ৩টি থিওরি প্রচলিত আছে -

থিওরি ১ঃ কমিকবুক ও মারভেল এন্টারটেইনমেন্ট ১০১ অনুযায়ী পিম পারটিক্যাল মেন্টাল হেলথ এর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ, তাই স্যুট এর সাথে আলাদা স্পেশাল মাস্ক ও হেলমেট দেওয়া হয়। এখানে অনুমান করা হয় যে,তার মাস্ক এর সাথে নিজস্ব অক্সিজেন সাপ্লাই কিংবা শ্বাস চালানোর মত ডিভাইস আছে, যার কারণে তিনি নিজে যখন ছোট হয়ে যান তখন তার সাথে থাকা অক্সিজেন সাপ্লাই এর  ভিতরে থাকা অক্সিজেন অনু গুলোও সে অনুপাতে ছোট হয়ে যায় (pym particle fact)। তবে কমিকে এই অক্সিজেন  সাপ্লাই নিয়ে আলাদা স্পষ্ট কিছু বলার নেই  এটা মুভি ওয়াল্ডের থিওরি 

থিউরি ২ঃ অনেকের মতে বা ফ্যান থিওরি অনুযায়ী পিম পারটিক্যাল  দিয়ে ছোট হলে তারা মাইক্রোভার্সে যায়, যেখানে সব কিছু তাদের তুলনায় ছোট(মানে অক্সিজেন অনু সহ প্রয়োজনীয় সব)। এখন এটা কতটা স্ট্রং লজিক তা আপনারাই বিবেচনা করুন এবং কমেন্টে জানান! 

থিওরি ৩ঃ
ভার্জিনিয়া টেকের ছাত্র ম্যাক্স মিকেল- স্টাইটস "অ্যান্টম্যান এন্ড দ্যা ওয়াস্প: মাইক্রোস্কেল রেসপিরেশন অ্যান্ড মাইক্রোফ্লুইড টেকনোলজি" শিরোনামের এক গবেষণা পত্রে সেই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। অ্যান্টম্যান এর মাইক্রোস্কেল শ্বাস প্রশ্বাস যখন অ্যান্ট ম্যান কোয়ান্টাম লেভেলে পৌঁছে যায় তখন কিভাবে শ্বাস প্রশ্বাস নিয়ে তার গবেষণার জন্য, মিকেল- স্টাইটস বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং এর সহযোগী অধ্যাপক অ্যানি স্টেপলস এর সাথে যোগ দেন। অ্যানির গবেষণাগারে অধ্যয়ন করা হয়েছিল প্রকৃতিতে কিভাবে তরল প্রবাহিত হয় তার উপর। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পোকা মাকড় প্রকৃতি থেকে তরল ও গ্যাস অনেক দক্ষতার সাথে সরাতে পারে। কিভাবে করে? যদি বিজ্ঞানীরা এবং প্রকৌশলীরা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পোকামাকড় কিভাবে শ্বাস নেয় তা জানতে পারেন এবং সেই প্রক্রিয়া অনুধাবন করতে পারেন তবে তা কাজে লাগিয়ে মাইক্রোফ্লুইড প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা সহজ হবে। 

এখন তাহলে তো একটা বিষয় ক্লিয়ার যে অ্যান্টম্যানের স্যুট বানানো গেলেই তার সুপার পাওয়ার পাওয়া যাবে,আর স্যুট বানাতে গেলে লাগবে পিম পারটিক্যাল। বাস্তব জীবনে পিম পারটিক্যাল এর অস্তিত্ব এখনো নেই! তবে আপনি যদি এমন কিছু বানাতে সক্ষম হোন যা বোর ব্যাসার্ধ কমাতে বাড়াতে পারবে তাহলে সেটাই হবে পিম পারটিক্যাল। 

তবে স্যুট বানাতে পারলেই কিন্তু ঝামেলা কমবে না বরং সাফল্যের সাথে স্যুট বানানোর পর আরেক বিচিত্র সমস্যার সমাধান করতে হবে সেটা হচ্ছে ডেনসিটি -গ্র‍্যাভিটি গ্যাপ সলভ!

পদার্থবিজ্ঞানের মতে যদি কোনো একটি বস্তু অনেক দ্রুত সংকুচিত হয়,তাহলে তাত্ত্বিক ভাবে মহাকাশে একটি গর্ত ছিড়ে ফেলবে এবং ব্ল্যাক হোল তৈরি হবে।যখন কতগুলো পরমাণুর মধ্যে জায়গা কমে বা ব্যাসার্ধ কমে তখন একটি অপেক্ষাকৃত শূন্যতা সৃষ্টি করবে যা ব্ল্যাক হোল এর মুল বীজ হিসেবে কাজ করবে,আর এই ব্ল্যাক হোল পৃথিবীকে গ্রাসও করতে পারে! 

এখন এই বিশাল বিচিত্র সমস্যার সমাধান কিভাবে করা যায় তা নিয়ে আপনাদের মতামত জানান এবং এই স্যুটের পিছনের এত্ত এত্ত সায়েন্স গুলো জেনে কেমন লাগলো তা-ও জানাতে ভুলবেন না!

লেখকঃ নাদিয়া ইসলাম। Science Bee 

#ant_man #mcu #marvel #superheroes

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+1 টি ভোট
1 উত্তর 288 বার দেখা হয়েছে

10,722 টি প্রশ্ন

18,365 টি উত্তর

4,730 টি মন্তব্য

240,686 জন সদস্য

36 জন অনলাইনে রয়েছে
1 জন সদস্য এবং 35 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Ayon Ratan Agni

    390 পয়েন্ট

  2. Al Moyaj Khondokar

    210 পয়েন্ট

  3. Vuter Baccha

    150 পয়েন্ট

  4. Hasan rafi

    140 পয়েন্ট

  5. Mehedi_Bknowledge

    110 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী চোখ রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #ask চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি প্রাণী স্বাস্থ্য বৈজ্ঞানিক মাথা গণিত মহাকাশ পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি #science বিজ্ঞান #biology খাওয়া শীতকাল গরম কেন #জানতে ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা মাছ মস্তিষ্ক শব্দ ঠাণ্ডা ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন গ্রহ রসায়ন তাপমাত্রা উদ্ভিদ কালো কি বিস্তারিত রঙ পা পাখি গ্যাস মন সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত আম বিড়াল কান্না নাক
...