ক্যান্সার কেন হয়? ক্যান্সার কোষ কি? এর চিকিৎসা কি? - ScienceBee প্রশ্নোত্তর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রশ্নোত্তর দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগতম! প্রশ্ন-উত্তর দিয়ে জিতে নিন পুরস্কার, বিস্তারিত এখানে দেখুন।

+14 টি ভোট
1,303 বার দেখা হয়েছে
করেছেন (220 পয়েন্ট)

3 উত্তর

+7 টি ভোট
করেছেন (71,000 পয়েন্ট)

বিশ্বের সমস্ত প্রাণীর শরীর অসংখ্য ছোট ছোট কোষের মাধ্যমে তৈরি। এই কোষগুলো একটা নির্দিষ্ট সময় পরপর মারা যায়। এই পুরনো কোষগুলোর জায়গায় নতুন কোষ এসে জায়গা করে নেয়। সাধারনভাবে কোষগুলো নিয়ন্ত্রিতভাবে এবং নিয়মমতো বিভাজিত হয়ে নতুন কোষের জন্ম দেয়। সাধারনভাবে বলতে গেলে যখন এই কোষগুলো কোনও কারণে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়তে থাকে তখনই ত্বকের নিচে মাংসের দলা অথবা চাকা দেখা যায়। একেই টিউমার বলে। এই টিউমার বিনাইন বা ম্যালিগন্যান্ট হতে পারে। ম্যালিগন্যান্ট টিউমারকেই ক্যান্সার বলে। বিস্তারিতভাবে বলতে গেলে, অনিয়ন্ত্রিতভাবে বিভাজনক্ষম হয়ে বৃদ্ধি পাওয়া কলাকে নিওপ্লাসিয়া (টিউমার) বলে, এবং সেরকম ক্রিয়া যুক্ত কোষকে নিওপ্লাস্টিক কোষ বলে। নিওপ্লাস্টিক কোষ আশেপাশের কলাকে ভেদ করতে না পারলে তাকে বলে নিরীহ বা বিনাইন টিউমার। বিনাইন টিউমর ক্যান্সার নয়। নিওপ্লাসিয়া কলা ভেদক ক্ষমতা সম্পন্ন হলে তাকে ম্যালিগন্যান্ট টিউমার বা ক্যান্সার, এবং তার অনিয়ন্ত্রিত বিভাজনক্ষম ভেদক ক্ষমতাযুক্ত কোষগুলিকে ক্যান্সার কোষ বলে। অনেক ক্যান্সার প্রথমে বিনাইন টিউমার হিসাবে শুরু হয়, পরে তার মধ্যেকার কিছু কোষ পরিবর্তিত (ট্রান্সফর্মেসন) হয়ে ম্যালিগন্যান্ট(অর্থাৎ ভেদক ক্ষমতাযুক্ত) হয়ে যায়। তবে বিনাইন টিউমার ক্যান্সারে পরিবর্তিত হবেই তার কোন স্থিরতা নেই। কিছু বিনাইন টিউমার সদৃশ ব্যাধি আছে যাতে ক্যান্সার হওয়া অবশ্যম্ভাবী - এদের প্রি-ক্যান্সার বলে। নামে বিনাইন অর্থাৎ নিরীহ হলেও বিনাইন টিউমারও চাপ দিয়ে আশেপাশের কলার ক্ষতি করতে পারে। মেটাস্ট্যাসিস হলো ক্যান্সারের একটি পর্যায়, যাতে ক্যান্সার কোষগুলি অন্যান্য কলাকে ভেদ করে ও রক্তলসিকাতন্ত্র (Lymphatic System) ইত্যাদির মাধ্যমে দূরবর্তী কলায় ছড়িয়ে যায়।

করেছেন (10,200 পয়েন্ট)
অসাধারণ!
+1 টি ভোট
করেছেন (1,990 পয়েন্ট)

ক্যান্সার বা টিউমার কাকে বলে?

সাধারণত জনগণের মাঝে ক্যান্সার বা টিউমার নিয়ে নানা বিভ্রান্তি আছে। টিউমার বা চাকা হলো শরীরের যে কোনো অংশের অপ্রয়োজনীয় ও অস্বাভাবিক এবং নিয়ন্ত্রণহীন বৃদ্ধি পাওয়াকে বুঝায়।
এই টিউমার বা চাকা দুই প্রকারের

১। বিনাইন বা ভালাবোলা টিউমার
২। মেলিগন্যান্ট বা বিপজ্জনক টিউমার
এই শেষোক্ত টিউমারকে ক্যান্সার বলা হয়।

টিউমার বা ক্যান্সার কেন হয়?

অধিকাংশ টিউমার বা ক্যান্সার কেন হয় তা এখনো জানা যায়নি। তবে কিছু কিছু কারণের জন্য দায়ী বলে প্রমাণিত হয়েছে।
টিউটমার/ক্যান্সারের কারণগুলো

ক) বংশগত/জেনেটিক
বাবা, মা, খালা এদের মধ্যে থাকলে তাদের সন্তানদের হতে পারে বা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি যেমন ব্রেস্ট ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার।
খ) ধূমপান
বিভিন্ন ধরনের ধরনের ক্যান্সার হয় তার মধ্যে ফুসফুসের ক্যান্সার তাদের অন্যতম।
গ) পান, জর্দা সাদা পাতা, গুল ইত্যাদি ওরাল ক্যান্সার বা জিহŸার ক্যান্সার করে।
ঘ) বিনাইন টিউমার বা ভালাবোলা টিউমার? অনেক দিন পর্যন্ত শরীরে থাকলে যে কোনো সময় ক্যান্সার হতে পারে। বেশির ভাগ কোলন ক্যান্সার এভাবেই হয়ে থাকে।
ঙ) রেডিয়েশন
কোনো জায়গায় রেডিয়েশন দিলে বা সূর্য রশ্মির ত্বকের ক্যান্সার করে থাকে। যেমন চেরনোবিল এবং জাপানের নাগাসাকির পারমাণবিক বিস্ফোরণের অনেক বছর পর এখনো সেখানে অনেকেই ক্যান্সার আক্রান্ত হচ্ছে।
চ) পাথর/স্টোন
যেমন কিডনি, পিত্তথলির পাথর ক্যান্সার সৃষ্টি করে।
ছ) ক্রনিক ইনফেকশন
জরায়ুর সার্ভিক্স বা বোনের ক্রমিক ইনফেকশন থেকে জরায়ু ও বোনের ক্যান্সার হয়।
জ) রাসায়নিক বা কেমিক্যাল এজেন্ট
যেমন- এনিলিন ডাই মূত্রথলির ক্যান্সার সৃষ্টি করে।
খাদ্যে ব্যবহৃত ফরমালিন এসিড/পচন রোধ পদার্থ স্টমাক বা পাকস্থলীর ক্যান্সার করে চুলের কলব স্ক্রিন/ত্বকের ক্যান্সার করে।

৩। ক্যান্সারের উপসর্গগুলো কী কী?

-অনেক দিন ধরে শরীরের কোনো অংশের চুপচাপ উপদ্রবহীনভাবে ছোট একটি টিউমারের হঠাৎ পরিবর্তন।
-চাকা হঠাৎ বড় হচ্ছে, ব্যাখ্যা হচ্ছে, আপনাকে সতর্ক হতে হবে এবং ক্যান্সার কি না নিশ্চিত হতে হবে।
-শরীরের ছোট একটি তিল হঠাৎ বড় হচ্ছে, গাঢ় কালো রং হচ্ছে, চুলকাচ্ছে কিংবা বিøডিং হচ্ছেÑ সতর্ক হতে হবে।
-ক্রনিক কাশি ভালো হচ্ছে না, হচ্ছে ৪ সপ্তাহের বেশি হয়ে গিয়েছে। সতর্ক হোন ফুসফুসের ক্যান্সার হতে পারে।
-হঠাৎ করে খাবারের রুচি হচ্ছে না, অল্প খেলেই পেট ভরে যাচ্ছে। ওজন কমে যাচ্ছে, বয়স ৪০ বছরের অধিক সতর্ক হোন পাকস্থলীর ক্যান্সার হতে পারে।
-মলদ্বার দিয়ে রক্ত যাচ্ছে, ব্যথা হচ্ছে শরীর দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। কিংবা মলত্যাগের অভ্যাসের হঠাৎ পরিবর্তন হয়েছে, সতর্ক হোন রেকটাম বা ক্লোন ক্যান্সার হতে পারে।
-হঠাৎ গলার শব্দ পরিবর্তন হয়েছে, গলায় বা বগলে চাকা সতর্ক হোন এবং চেকআপ করান।
-মহিলাদের বয়সের কারণে মাসিক বন্ধ হয়ে গেছে (মেনুপোজ) নতুন করে আবার বিøডিং হচ্ছে সতর্ক হোন। জরায়ুর ক্যান্সার হতে পারে।
-ব্রেস্টে চাকা, বয়স ৪০ বছর কিংবা তার ওপরে সতর্ক হোন।
-হাড়ে ব্যথা, ফুলা, হঠাৎ পড়ে গিয়ে ফ্র্যাকচার হয়েছে সতর্ক হোন।
-পোড়া ঘা ভালো হওয়ার পর আবার হয়েছে, শুকাচ্ছে না সতর্ক হোন স্কিনের ক্যান্সার হতে পারে।

৪। রোগ নির্ণয়
উল্লিখিত উপসর্গগুলো দেখা দিলে আপনাকে অবশ্যই জরুরি ভিত্তিতে ক্যান্সার বিশেষঙ্গ সার্জন বা যে কোনো সার্জনের শরণাপন্ন হতে হবে।
ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষাই রয়েছেÑ এর মধ্যে সবচেয়ে সঠিক ইনভেস্টিগেশন হলোÑ বায়োপসি।

৫। রোগের চিকিৎসা
যে কোনো ধরনের টিউমার হলেই এটাকে অপারেশন করতে হবে।
টিউমারটি যদি বিনাইন হয় এবং যদি সম্পূর্ণভাবে ফেলে দেয়া হয় তাহলে ভয় নেই এবং আবার হওয়ার সম্ভাবনা নেই। বায়োপসিতে যদি ক্যান্সার ধরা পড়ে তবে সে ক্ষেত্রে সার্জারি হচ্ছে সবচেয়ে উত্তম চিকিৎসা। সেই সঙ্গে অন্যান্য সহায়ক চিকিৎসাও লাগতে পারে যেমন-

# যন্ত্রের সাহায্যে সেক (রেডিওথেরাপি)
# কেমোথেরাপি
# হরমোনথেরাপি ইত্যাদি
৬। ক্যান্সার প্রতিরোধ কিভাবে করা যায়।
-বেশি বেশি ফলমূল, শাকসবজি খেতে হবে, কারণ এগুলোতে ক্যান্সার প্রতিরোধ এনজাইম আছে।
-ধূমপান/অ্যালকোহল পরিত্যাগ করতে হবে।

মেয়েদের ক্ষেত্রে কিছু রিস্ক ফ্যাক্টর আছে যেগুলো পরিহার করতে হবে-
১। অল্প বয়সে বিয়ে
২। অল্প বয়সে সন্তান ধারণ এবং বেশি সন্তান ধারণ এবং
৩। একাধারে বহু দিন জš§ নিরোধক বড়ি খাওয়া বন্ধ করতে হবে ইত্যাদি।
-৪০ বছর বা অধিক মহিলাদের ব্রেস্ট নিজেদেরই মাঝে মধ্যে পরীক্ষা করতে হবে কোনো
টিউমার বা চাকা আছে কি না দেখার জন্য।
-পুরুষদের ক্ষেত্রে সারকামসেকশন বা মুসলমানি একটি উপকারী চিকিৎসা পদ্ধতি যা পেনিস বা
লিঙ্গ ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য অত্যন্ত কার্যকরী পদক্ষেপ।
-পুরুষ ও মহিলাদের ক্ষেত্রে বহুগামিতা পরিহার করতে হবে। তা না হলে এইডস এবং ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রোগ হতে পারে। মনে রাখবেন- ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে সম্পূর্ণ নিরাময় হয়ে যায়।

লেখক- ডা. এমএ হাশেম ভূঁইয়া: জেনারেল ও কলোরেক্টাল সার্জন, অধ্যাপক, সার্জারি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল।

+1 টি ভোট
করেছেন (8,670 পয়েন্ট)

বিশ্বের সমস্ত প্রাণীর শরীর অসংখ্য ছোট ছোট কোষের মাধ্যমে তৈরি। এই কোষগুলো একটা নির্দিষ্ট সময় পরপর মারা যায়। এই পুরনো কোষগুলোর জায়গায় নতুন কোষ এসে জায়গা করে নেয়। সাধারনভাবে কোষগুলো নিয়ন্ত্রিতভাবে এবং নিয়মমতো বিভাজিত হয়ে নতুন কোষের জন্ম দেয়। সাধারনভাবে বলতে গেলে যখন এই কোষগুলো কোনও কারণে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়তে থাকে তখনই ত্বকের নিচে মাংসের দলা অথবা চাকা দেখা যায়। একেই টিউমার বলে। এই টিউমার বিনাইন বা ম্যালিগন্যান্ট হতে পারে। ম্যালিগন্যান্ট টিউমারকেই ক্যান্সার বলে।[১] বিস্তারিতভাবে বলতে গেলে, অনিয়ন্ত্রিতভাবে বিভাজনক্ষম হয়ে বৃদ্ধি পাওয়া কলাকে নিওপ্লাসিয়া (টিউমার) বলে, এবং সেই রকম ক্রিয়া যুক্ত কোষকে নিওপ্লাস্টিক কোষ বলে। নিওপ্লাস্টিক কোষ আশেপাশের কলাকে ভেদ করতে না পারলে তাকে বলে নিরীহ বা বিনাইন টিউমার। বিনাইন টিউমর ক্যান্সার নয়। নিওপ্লাসিয়া কলা ভেদক ক্ষমতা সম্পন্ন হলে তাকে ম্যালিগন্যান্ট টিউমার বা ক্যান্সার, এবং তার অনিয়ন্ত্রিত বিভাজনক্ষম ভেদক ক্ষমতাযুক্ত কোষগুলিকে ক্যান্সার কোষ বলে। অনেক ক্যান্সার প্রথমে বিনাইন টিউমার হিসাবে শুরু হয়, পরে তার মধ্যেকার কিছু কোষ পরিবর্তিত (ট্রান্সফর্মেসন) হয়ে ম্যালিগন্যান্ট (অর্থাৎ ভেদক ক্ষমতাযুক্ত) হয়ে যায়। তবে বিনাইন টিউমার ক্যান্সারে পরিবর্তিত হবেই তার কোন স্থিরতা নেই। কিছু বিনাইন টিউমার সদৃশ ব্যাধি আছে যাতে ক্যান্সার হওয়া অবশ্যম্ভাবী - এদের প্রি-ক্যান্সার বলে। নামে বিনাইন অর্থাৎ নিরীহ হলেও বিনাইন টিউমারও চাপ দিয়ে আশেপাশের কলার ক্ষতি করতে পারে। মেটাস্ট্যাসিস হলো ক্যান্সারের একটি পর্যায়, যাতে ক্যান্সার কোষগুলি অন্যান্য কলাকে ভেদ করে ও রক্ত, লসিকাতন্ত্র (Lymphatic System) ইত্যাদির মাধ্যমে দূরবর্তী কলায় ছড়িয়ে যায়। স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর যদি আমরা ধুমপান করি তাহলে অন্যথায় এটি নাও হতে পারে ।ক্যান্সারের কারণ ঠিক কি কারণে ক্যান্সার হয় সেটা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে সাধারণ কিছু কারণ খুঁজে পাওয়া গেছে। বয়স সাধারণত বয়স যত বাড়তে থাকে ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও তত বাড়তে থাকে, কারণ এ সময়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। এক হিসেবে দেখা যায় যত মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় তাদের শতকরা ৭০ ভাগেরই বয়স ৬০ বছরের ওপর। খাবার এবং জীবনযাপনের ধারা খাবার এবং জীবনযাপনের ধারার সাথে ক্যান্সারের গভীর সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছে গবেষকরা। যেমন, ধুমপান বা মদ্যপানের সাথে ফুসফুস, মুখ ও কণ্ঠনালীর এবং যকৃৎ বা লিভারের ক্যান্সারের যোগাযোগ রয়েছে। তেমনই ভাবে পান-সুপারি, জর্দা, মাংস, অতিরিক্ত লবণ, চিনি ইত্যাদি খাবারের সাথেও ক্যান্সারের যোগসূত্র রয়েছে। যারা সাধারণত শারীরিক পরিশ্রম কম করে তাদের মধ্যেও ক্যান্সারের প্রবণতাটা বেশি। পারিবারিক ইতিহাস ক্যান্সারের সাথে জিনগত সম্পর্ক রয়েছে বলেও প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই কারণে পরিবারের কারো যদি ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা থাকে তাহলে অন্যদেরও ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকখানি বেড়ে যায়। পরিবেশ এবং পেশাগত কারণ রাসায়নিক পদার্থের সাথে ক্যান্সারের অনেক বড় একটা সম্পর্ক রয়েছে। যেমন, জমেসোথেলিওমিয়া-তে (এক ধরনের দূর্লভ ক্যান্সার, এতে ফুসফুসের চারপাশ এবং পেটের দিকের কোষগুলো আক্রান্ত হয়) আক্রান্তদের ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই এসবেস্টস ধাতুর সংস্পর্শে আসার কারণে এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন। সাধারণত জাহাজ তৈরির শিল্পের সাথে যারা জড়িত তাদের এই ধাতুর সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনাটা বেশি থাকে। এই কারণেই অনেক দেশে এই ধাতুর ব্যবহার নিষিদ্ধ। একইভাবে রঙের কারখানা, রাবার বা গ্যাসের কাজে যারা নিয়োজিত তারা এক ধরনের বিশেষ রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে আসার কারণে মুত্রথলির ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। পরবর্তীতে অনেক দেশে এসব রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহারও নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। পরিবেশগত কারণের অন্যতম একটা হচ্ছে সূর্য। রোদে বেশিক্ষণ থাকার কারণে ত্বকের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তেজস্ক্রিয়তার কারণেও বিভিন্ন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। ক্যান্সারের সাধারণ লক্ষণ মানবদেহে যে সকল স্থানে ক্যান্সার ধরা পড়েছে তা হল প্রস্টেট গ্রন্থি, স্তন, জরায়ু, অগ্ন্যাশয়, রক্তের ক্যান্সার, চামড়ায় ক্যান্সার ইত্যাদি। একেক ক্যান্সারের জন্য একেক ধরনের লক্ষণ বা উপসর্গ থাকে। তবে সাধারণ কিছু লক্ষণ হচ্ছে: খুব ক্লান্ত বোধ করা ক্ষুধা কমে যাওয়া শরীরের যে কোনজায়গায় চাকা বা দলা দেখা দেয়া দীর্ঘস্থায়ী কাশি বা গলা ভাঙা মলত্যাগে পরিবর্তন আসা (ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য কিংবা মলের সাথে রক্ত যাওয়া) জ্বর, রাতে ঠান্ডা লাগা বা ঘেমে যাওয়া অস্বাভাবিকভাবে ওজন কমা অস্বাভাবিক রক্তপাত হওয়া ত্বকের পরিবর্তন দেখা যাওয়া মানসিক অস্বস্তি[৩] ক্যান্সারের চিকিৎসা ক্যান্সারের চিকিৎসায় বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। অস্ত্রোপচার যে জায়গাটি ক্যান্সার আক্রান্ত হয় সেটির ক্যান্সার আক্রান্ত কোষগুলো এবং তার আশেপাশের কোষগুলোকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কেটে সরিয়ে ফেলা হয়। ক্যান্সার যদি অল্প একটু জায়গা জুড়ে থাকে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে তাহলে এ ধরনের চিকিৎসা দেয়া হয়। রেডিওথেরাপি নিয়ন্ত্রিতভাবে শরীরের অংশবিশেষে তেজস্ক্রিয় রশ্মি প্রয়োগ করে সেই জায়গার কোষগুলোকে ধ্বংস করে ফেলা হয়। কেমোথেরাপি এই ব্যবস্থায় ক্যান্সার কোষকে ধ্বংস করতে অ্যান্টি-ক্যান্সার (সাইটোটক্সিক) ড্রাগস বা ওষুধ ব্যবহার করা হয়। ৫০টিরও বেশি ধরনের কেমিওথেরাপি ওষুধ রয়েছে। এগুলোর কোনকোনটা ট্যাবলেট বা ক্যাপসুল হিসেবে খেতে হয়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ওষুধগুলোকে স্যালাইনের সাথে বা অন্য কোনভাবে সরাসরি রক্তে দিয়ে দেয়া হয়। রক্তের সাথে মিশে এই ওষুধগুলো শরীরের যেখানে যেখানে ক্যান্সার কোষ রয়েছে সেখানে গিয়ে ক্যান্সার কোষগুলোকে ধ্বংস করার চেষ্টা করে। হরমোন থেরাপি শরীরের কিছু হরমোনের মাত্রা পরিবর্তন করার মাধ্যমে এই চিকিৎসা করা হয়। শরীরের বৃদ্ধির সাথে হরমোনের একটা সম্পর্ক রয়েছে। কোন কোন ক্যান্সার এই হরমোনের মাধ্যমে প্রভাবিত হয়। ফলে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি কমিয়ে ক্যান্সারকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে হরমোন থেরাপি ব্যবহৃত হয়। সহায়ক চিকিৎসা ক্যান্সারের শারীরিক চিকিৎসার পাশাপাশি রোগীদের মানসিক চিকিৎসার ব্যাপারে এখন জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর রোগীরা বেশ মানসিক কষ্টের মধ্যে দিয়ে যান, অনেকে মানসিকভাবে ভেঙ্গেও পরেন। এই কারণে অনেক সময়ে তাদের অবস্থা বেশি গুরুতর না হলেও অনেকে দ্রুত মারা যান। ফলে তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের সেবা দেয়ার ব্যবস্থা করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা এবং উন্নত দেশগুলোতে এ ধরনের সেবা দেয়ার জন্য বিভিন্ন সংগঠন কাজও করে যাচ্ছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ক্যান্সার আক্রান্তদের একটি গ্রুপ গঠন করা, যেখানে তারা নিজেদের অভিজ্ঞতা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করতে পারেন। এর পাশাপাশি যোগ, মেডিটেশন ইত্যাদির মাধ্যমেও রোগীদের মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার শিক্ষা দেয়া হয়। এর পাশাপাশি মানসিক স্বস্তির জন্য কেউ যদি ধর্মীয় বা সামাজিক কোন কাজে নিয়োজিত হতে চান সে ব্যাপারেও তাদেরকে উৎসাহ দেয়া হয়। অন্যান্য চিকিৎসা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে আরো শক্তিশালী করে তোলে এ ধরনের ওষুধ তৈরির ব্যাপারে এখন গবেষণা চলছে। এছাড়াও ক্যান্সারের ভ্যাকসিন তৈরির ব্যাপারে চেষ্টা চলছে। কিন্তু এখনো এগুলো একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে।

সম্পর্কিত প্রশ্নগুচ্ছ

+1 টি ভোট
1 উত্তর 4,960 বার দেখা হয়েছে
+10 টি ভোট
1 উত্তর 166 বার দেখা হয়েছে
0 টি ভোট
1 উত্তর 378 বার দেখা হয়েছে
+1 টি ভোট
1 উত্তর 148 বার দেখা হয়েছে
28 ফেব্রুয়ারি 2021 "স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা" বিভাগে জিজ্ঞাসা করেছেন Martian (93,090 পয়েন্ট)
+30 টি ভোট
2 টি উত্তর 477 বার দেখা হয়েছে
05 মার্চ 2019 জিজ্ঞাসা করেছেন RakibHossainSajib (32,140 পয়েন্ট)

10,727 টি প্রশ্ন

18,372 টি উত্তর

4,730 টি মন্তব্য

241,735 জন সদস্য

41 জন অনলাইনে রয়েছে
1 জন সদস্য এবং 40 জন গেস্ট অনলাইনে
  1. Ayon Ratan Agni

    390 পয়েন্ট

  2. Ahnaf_Tahmid

    330 পয়েন্ট

  3. Al Moyaj Khondokar

    210 পয়েন্ট

  4. Vuter Baccha

    150 পয়েন্ট

  5. Hasan rafi

    140 পয়েন্ট

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্মুক্ত বিজ্ঞান প্রশ্নোত্তর সাইট সায়েন্স বী QnA তে আপনাকে স্বাগতম। এখানে যে কেউ প্রশ্ন, উত্তর দিতে পারে। উত্তর গ্রহণের ক্ষেত্রে অবশ্যই একাধিক সোর্স যাচাই করে নিবেন। অনেকগুলো, প্রায় ২০০+ এর উপর অনুত্তরিত প্রশ্ন থাকায় নতুন প্রশ্ন না করার এবং অনুত্তরিত প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রতিটি উত্তরের জন্য ৪০ পয়েন্ট, যে সবচেয়ে বেশি উত্তর দিবে সে ২০০ পয়েন্ট বোনাস পাবে।


Science-bee-qna

সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ট্যাগসমূহ

মানুষ পানি ঘুম পদার্থ - জীববিজ্ঞান এইচএসসি-উদ্ভিদবিজ্ঞান এইচএসসি-প্রাণীবিজ্ঞান পৃথিবী চোখ রোগ রাসায়নিক শরীর রক্ত আলো মোবাইল ক্ষতি চুল কী #ask চিকিৎসা পদার্থবিজ্ঞান সূর্য প্রযুক্তি প্রাণী স্বাস্থ্য বৈজ্ঞানিক মাথা গণিত মহাকাশ পার্থক্য এইচএসসি-আইসিটি #science বিজ্ঞান #biology খাওয়া গরম শীতকাল কেন #জানতে ডিম চাঁদ বৃষ্টি কারণ কাজ বিদ্যুৎ রাত রং উপকারিতা শক্তি লাল আগুন সাপ মনোবিজ্ঞান গাছ খাবার সাদা আবিষ্কার দুধ উপায় হাত মশা মাছ ঠাণ্ডা মস্তিষ্ক শব্দ ব্যাথা ভয় বাতাস স্বপ্ন গ্রহ তাপমাত্রা রসায়ন উদ্ভিদ কালো কি বিস্তারিত রঙ পা মন পাখি গ্যাস সমস্যা মেয়ে বৈশিষ্ট্য হলুদ বাচ্চা সময় ব্যথা মৃত্যু চার্জ অক্সিজেন ভাইরাস আকাশ গতি দাঁত আম হরমোন বিড়াল কান্না
...