মহাকাশযান তৈরি ও গবেষণা নিয়ে কাজ করা বাংলাদেশের প্রথম সারির কোম্পানি ধূমকেতু এক্সপ্লোরেশন টেকনলজিস লিমিটেড ( ধূমকেতুএক্স ) সম্প্রতি ঢাকার স্বনামধন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাথে একটি MoU চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে প্রথম কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ধূমকেতুএক্স এর সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।
প্রতিষ্ঠাকালের পর থেকেই একের পর এক মাইল ফলক স্পর্শ করা ধূমকেতু এক্সপ্লোরেশন গত ২৫ জুন ২০২৫ তারিখে ধূমকেতুএক্স টিম ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে উপস্থিত হন।

MoU চুক্তি স্বাক্ষর আনুষ্ঠানিকতায় ড্যাফোডিলের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট এর পক্ষ থেকে ছিলেনঃ
ড. মোঃ ইমরান মাহমুদ, প্রফেসর এবং হেড ডিপার্টমেন্ট অফ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং।
মোঃ সোহেল আরমান শুভ, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ডিপার্টমেন্ট অফ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ল্যাব ইনচার্জ, ডাটা সায়েন্সল্যাব ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি।

মাশরুফা তাসনিম এশা, লেকচারার ডিপার্টমেন্ট অফ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ল্যাব ইনচার্জ, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি রোবোটিক্স ল্যাব।
ধূমকেতুএক্স এর পক্ষ থেকে ছিলেনঃ
মোঃ নাহিয়ান আল রহমান অলি, ফাউন্ডার এবং সিইও (ধুমকেতুএক্স)।
মোঃ হানজালা রহমান মুন্না, হেড অফ ম্যানেজমেন্ট (ধুমকেতুএক্স)।
রকেট্রি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ছিলেনঃ
মোঃ আসিফ হাসান অভি, কো-ফাউন্ডার এবং লিড অরগানাইজার (রকেট্রি বাংলাদেশ)।
খন্দকার শাহাব উদ্দিন তনয়, ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর এবং শিক্ষার্থী ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (রকেট্রি বাংলাদেশ)।

এর পূর্বে ধুমকেতুএক্স দেশের প্রথম কোম্পানি হিসেবে প্রোটোটাইপ সাউন্ডিং রকেট “পুটিমাছ-০১” রকেট উৎক্ষেপণ করে। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের মে মাসে ময়মনসিংহে বাংলাদেশের প্রথম সাব অরবিটাল রকেট তথা প্রথম মহাকাশযান “বিদ্রোহী” প্রদর্শনী করে ধুমকেতুএক্স।
MoU চুক্তির দিন ধূমকেতুএক্স এর ফাউন্ডার এবং সিইও মোঃ নাহিয়ান আল রহমান অলি, ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীদের রকেট বিজ্ঞান এবং এভিওনিক্স নিয়ে আগ্রহী করে তুলতে এবং গবেষণার লক্ষ্যে রকেট্রি বাংলাদেশের HPR সার্টিফাইড একটি লেভেল-১ এর রকেট উপহার হিসেবে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
উক্ত রকেটটি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা গবেষণার মাধ্যমে উন্নতিকরণ এবং রকেটটি উৎক্ষেপণের কাজে সম্পৃক্ত হতে পারবে।

এছাড়াও বাংলাদেশের এরোস্পেস প্রযুক্তিতে নতুন সফটওয়্যার এবং রকেট ইন্ডাস্ট্রিতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে ভবিষ্যতে কাজ করার ব্যাপারে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা কীভাবে অবদান রাখতে পারবে তা নিয়ে বিষদ আলোচনা হয়।
আলোচনা পর্বে ড. ইমরান মাহমুদ (অধ্যাপক ও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান) মতামত রাখেনঃ
আমাদের ডিপার্টমেন্ট সবসময় নতুনত্ব ও উদ্ভাবনের প্রতি উন্মুক্ত, এবং এই সমঝোতা স্মারক (MoU) অ্যাকাডেমিক জ্ঞানকে বাস্তব জীবনের প্রয়োগে রূপান্তর করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই চুক্তি আমাদের শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য রকেট প্রযুক্তি, ড্রোন টেকনোলজি, অ্যারোস্পেস সিস্টেম, স্যাটেলাইট ইঞ্জিনিয়ারিং এবং প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির মতো অগ্রগামী ক্ষেত্রে সরাসরি কাজ করার পথ প্রশস্ত করবে।

এছাড়াও মোঃ সোহেল আরমান শুভ (অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ডিপার্টমেন্ট অফ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং) এর মতে,
DhumketuX-এর সঙ্গে এই সহযোগিতা একটি ভবিষ্যতপ্রবণ ক্ষেত্রের দ্বার উন্মোচন করেছে, যেখানে এআই ও অ্যারোস্পেস একত্রিত হচ্ছে। আমাদের অ্যাকাডেমিক দক্ষতার সঙ্গে বাস্তবমুখী গবেষণা ও উন্নয়ন (R&D) মিলিয়ে, আমাদের শিক্ষার্থীরা শুধু শেখার সুযোগই পাচ্ছে না, বরং তারা বাস্তব অবদান রাখতেও পারবে।
মাশরুফা তাসনিম এশা (লেকচারার ডিপার্টমেন্ট অফ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং) জানান,
এই চুক্তির ফলে এরোস্পেস এর সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন এমবেডেড সিস্টেম এর ডেভেলপমেন্ট এবং ড্রোন বিষয়ক গবেষণার ক্ষেত্রে ডিআইইউ এর শিক্ষার্থীরা অভিজ্ঞজনদের পরামর্শ নিয়ে আরো বেশি দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে।
এই MoU চুক্তি অনুযায়ী ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট ধুমকেতুএক্স কে ল্যাব ফ্যাসিলিটি এবং রিসার্চ ফ্যাসিলিটি দিয়ে সহযোগিতা করবে।

নানান চড়াই-উতরাই পেরিয়ে এগিয়ে যাওয়া ধূমকেতু এক্সপ্লোরেশন টেকনোলজিস লিমিটেডকে নিয়ে দেশের প্রযুক্তিপ্রেমিদের মাঝে রয়েছে উৎফুল্লতার ছাপ। তাই ধুমকেতুএক্সের প্রতি বিজ্ঞান ও গবেষণা নিয়ে আগ্রহ পোষণ করা মানুষের আশাও রয়েছে অনেক। ধূমকেতু এক্স এর অগ্রযাত্রা নিয়ে সায়েন্স বী নিউজ টিমের পূর্বে প্রকাশিত একটি ইন্টারভিউতে উঠে এসেছিল ধূমকেতু এক্স এর কর্ণধার নাহিয়ান আল রহমান ওলি’র গল্প।
দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতি নিয়ে স্বপ্নদ্রষ্টা এসব মানুষ ও প্রতিষ্ঠান গুলোর কাঁধে যেমনি দায়িত্বও রয়েছে অনেক তেমনি বৃহৎ পরিসরে তথা রাষ্ট্রীয় ভাবে তাদের সহায়তাও অতীব জরুরি।
অদূর ভবিষ্যতে এসব প্রতিষ্ঠানের এগিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে দেশের তরুণদের হাত ধরে প্রযুক্তিগত উন্নতির মাইল ফলক স্পর্শ করার স্বপ্ন বাস্তবায়িত হোক।
নিজস্ব প্রতিবেদক / জুম্মান আল সিয়াম














