আমরা ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন গল্প বা কাহিনী শুনে থাকি। এসবের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী; টাইম ট্রাভেল থেকে শুরু করে টেলিপোর্টেশন বা কোয়ান্টাম টেলিপোর্টেশন! আবার, এসব বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী নিয়ে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন সিনেমাও। তবে, আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কল্পকাহিনী গুলোর অধিকাংশকেই অবাস্তব বা বাস্তবে সম্ভব না বলেই বিশ্বাস করি। কিন্তু সত্য হলো, বর্তমানে বিজ্ঞান এরকম অনেক অসম্ভব বিষয় নিয়ে কাজ করছে এবং আংশিক সফলতাও পেয়েছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি বিষয় হলো টেলিপোর্টেশন।
টেলিপোর্টেশন বলতে কোন বস্তু বা মানুষকে খুব দ্রুত এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরকে বুঝায়। এখানে অনেকের টেলিপোর্টেশন এবং ট্রান্সপোটের্শন বিষয় দুইটি একই মনে হতে পারে। মূলত, টেলিপোর্টেশন আর ট্রান্সপোটের্শনের প্রধান পার্থক্য হলো দূরত্ব।
টেলিপোর্টেশনের ক্ষেত্রে বিশাল বিশাল দূরত্ব কোনো ব্যাপারই না। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশাল বিশাল দূরুত্ব অল্প সময়ে অতিক্রম করা যাবে এবং ভবিষ্যতে আমরা হয়ত বিভিন্ন গ্রহেও মানুষ বা কোন বস্তু টেলিপোর্ট করতে সক্ষম হব।
অনেকদিন ধরেই একদল গবেষক এই টেলিপোর্টেশন নিয়ে গবেষণা করে আসছিলেন। তবে, তারা মানুষ বা কোনো ধরনের পণ্য টেলিপোর্টেশন নিয়ে কাজ করছেন না। তারা কাজ করছেন কোয়ান্টাম টেলিপোর্টেশন নিয়ে, যা ভবিষ্যতে আমাদের হয়ত সবচেয়ে সুরক্ষিত এবং দ্রুত কোয়ান্টাম ইন্টারনেট উপহার দিতে পারে।
এই গবেষণারই একটি দল কিছু কোয়ান্টাম তথ্য ৪৪ কিলোমিটার দূরত্বে প্রেরণ করেছেন বা বলা যায় স্থানান্তরে সক্ষম হয়েছেন। গন্তব্যে পৌছানোর পর তথ্যটি ৯০ শতাংশ নির্ভুল পাওয়া যায়। পদার্থ বিজ্ঞানীরা এই ফলাফল দেখে খুব খুশি হয়েছেন এবং তারা আশাবাদী যে ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তিটি বিশ্ব যোগাযোগের সংজ্ঞাকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যেতে পারে। এই কোয়ান্টাম ডাটা প্রেরণ করা হয় ফাইবার অপটিক্স ব্যবহার করে, যা বর্তমানে ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।
কোয়ান্টাম প্রযুক্তিতে কিউবিট (qubit) ব্যবহার করা হয়। এই কিউবিট গুলো এমন ভাবে মিশ্রিত অবস্থায় থাকে, যা কিনা আলাদা করা অসম্ভব। ৪৪ কিলোমিটার দূরত্বে কোয়ান্টাম তথ্য টেলিপোর্ট করার এই বিষয়টি তৈরি করেছে নতুন রের্কড। তাছাড়া, কতটুকু দূরত্বে তথ্য গুলো পাঠানো যেতে পারে সে ব্যাপারে নতুন সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে এর মাধ্যমে।
গবেষক দলটি বলেন, যখন প্রথমবারেই কোয়ান্টাম ইন্টারনেট ব্যবহার করে এত বেশি দূরত্বে তথ্য প্রেরণ সক্ষম হয়েছে, তখন কোয়ান্টাম ইন্টারনেট একটি শহর পর্যায় নিয়ে আসতে হলে আমাদের আরও কিছু বছর কাজ করতে হবে।
কোয়ান্টাম টেলিপোর্টেশন ভবিষ্যতে আমাদের উপহার দিতে পারে অসাধারণ কিছু, যা আমাদের শোনা বৈজ্ঞানিক গল্প বা কল্পকাহিনীকে করে তুলতে পারে বাস্তব!
আল আমিন/ নিজস্ব প্রতিবেদক
তথ্যসূত্রঃ slashgear.com
আরো বিস্তারিতঃ ন্যাচার, রিসার্চগেট
+1
+1
+1
+1
3
+1
+1
+1