বিশ্বজুড়ে থামছেই না করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার স্রোত। হাঁচি, কাশি কিংবা স্পর্শ আছে এমন স্থান থেকেও প্রতিনিয়ত ছড়াচ্ছে এই মারাত্মক ভাইরাস। এই পরিস্থিতিতে নিজেকে সুস্থ রাখতে দরজার হাতল, লিফটের বোতাম, এটিএমের কি–প্যাডের মতো যেসব স্থান থেকে জীবাণু ছড়াতে পারে, তা স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
এসব জায়গার স্পর্শ এড়াতে যদি কোনো দরকারি টুল বা যন্ত্র পাওয়া যায়, তবে কেমন হয়? ঠিক এমন ভাবনা বেশ আগে থেকেই কষে রেখেছিলো যুক্তরাষ্ট্রের ১২ বছর বয়সী মিজান রুপান-টম্পকিনস নামের এক কিশোর। সে এমনই হুক বা আংটাসদৃশ একটি টুল তৈরি করেছে। মা-বাবার জন্য তৈরি তার এ বিশেষ নকশার ডিভাইসটি এখন অনলাইনে বিক্রি করা শুরু করেছে সে।
গুড নিউজ নেটওয়ার্কের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত এপ্রিল মাসে সানফ্রান্সিসকোতে করোনা মহামারি ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলে ১২ বছর বয়সী মিজান রুপান নিজেদের প্রয়োজনে থ্রিডি প্রিন্টার ব্যবহার করে হুকের মতো একটি ডিভাইসের প্রোটোটাইপ তৈরি করে। তার মা-বাবার হাতে দস্তানা দিয়ে দরজার হাতল ধরার সমস্যা দূর করতে নতুন উদ্ভাবন হিসেবে এ ডিভাইসের নকশা করে সে।
রুম্পকিনসন নামের এই ছোট্ট আবিষ্কারক তার নতুন ডিভাইসটির নাম দিয়েছে সেফ টাচ প্রো, যাতে হাতল ধরে টানার পাশাপাশি বোতাম চাপা বা কিবোর্ড ব্যবহারের সুযোগ আছে,এছাড়াও এর সাহায্য স্মার্টফোন ব্যাবহার করার জন্য রয়েছে বিশেষ টাচ সেনসেটিভ সার্ফেস যা শিগ্রই নতুন সংস্করণে যুক্ত করা হবে বলে জানায় সে।
আরও পড়ুনঃ ১। রক্তচাপজনিত নানা সমস্যা: আপনার রক্তচাপ যা বলছে আপনাকে |
সানফ্রান্সিসকো ভিত্তিক নিউজপোর্টাল কেটিভিউকে এক সাক্ষাৎকারে সে জানায়, এই যন্ত্রটি মূলত সে তার বাবা-মায়ের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে তৈরী করেছিলো, কিন্তু এর কার্যকারীতা দেখে অনেকেই তার সেফ টাচ প্রো ব্যবহারে আগ্রহ প্রকাশ করে। সে জানায় এটি সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব ভাবে তৈরী এবং এটি তৈরীর সময় যাতে যাতে ভাইরাস টিকতে না পারে, সে ব্যবস্থার কথাও মাথায় রাখতে হয়েছিল।’
মিজানের মতে সে এই যন্ত্রটি হুট করেই তৈরী করেনি বরং করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে সে যখন জানতে পারে এটি স্পর্শের মাধ্যমেও বিস্তার লাভ করছে তখন থেকেই এর প্রোটোটাইপ ডিজাইন করতে শুরু করে এবং এর জন্য সে বাজার গবেষণা করে এর চাহিদা সম্পর্কে আগে নিশ্চিত হয়েছে। সে প্রোটোটাইপ থেকে মূল ডিভাইসটির হালনাগাদ করে উদ্ভিদভিত্তিক প্লাস্টিক ব্যবহার করেছে, যা জীবাণুপ্রতিরোধী।
নিজের ওয়েবসাইটে মিজান এখন সেফ টাচ প্রো ডিভাইসটি ১৪ দশমিক ৯৯ মার্কিন ডলারে বিক্রি করছে। ইতিমধ্যে কয়েক শ ডিভাইস বিক্রি করেছে এবং প্রতিদিন কয়েক ডজনের জন্য ফরমাশ পাচ্ছে। www.safetouchprohandle.
অবশ্য মিজানের উদ্ভাবনী ক্ষমতার প্রমাণ এটাই প্রথম নয়। এর আগে নিজেই বিশেষ কম্পিউটার ও তাতে অ্যালেক্সার মতো নিজস্ব কৃত্রিম বুদ্ধিমান সফটওয়্যার ব্যবহার করে দেখিয়েছে। এ ছাড়া বয়স অনুমান করা রোবটও তৈরি করেছে সে।
তিন বছর ধরে হোমস্কুল কর্মসূচির অধীনে থাকা মিজান ভবিষ্যতে এভিয়েশন, অ্যারোনটিক্যাল ডিজাইন বা প্রযুক্তিতে ক্যারিয়ার গড়ার পরিকল্পনা করেছে।
এ এন এম নাঈম/ নিজস্ব প্রতিবেদক
তথ্যসূত্রঃ
১.https://www.
২.https://youtu.be/lm8xIImeByk
৩.https://www.goodnewsnetwork.