দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আমেরিকার ‘ম্যানহাটন প্রকল্প’ ছিল পরমাণু বোমা তৈরির গোপনতম এক উদ্যোগ। এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে সেন্ট লুইস শহরের উত্তরে একটি গ্রামীণ এলাকায়, কোল্ডওয়াটার ক্রিক নামে একটি উপনদীর পাশে ফেলে রাখা হয় ইউরেনিয়াম পরিশোধনের তেজস্ক্রিয় বর্জ্য। কিন্তু এই ভয়ংকর বিষাক্ততার কথা সরকার স্বীকার করা হয় ১৯৮০-এর দশকের শেষ দিকে। বহুদিন পর, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা ওই এলাকার কাছাকাছি থাকা মানুষদের স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখেছেন, শিশুকালে তেজস্ক্রিয়তার সংস্পর্শে থাকা মানুষের পরবর্তীতে ক্যান্সারের ঝুঁকি ছিলো অত্যন্ত বেশি।

গবেষক দলটি ৪,২০৯ জন ব্যক্তির তথ্য বিশ্লেষণ করে, যাঁরা শৈশবে কোল্ডওয়াটার ক্রিকের আশেপাশে বসবাস করতেন। দেখা গেছে, মোট অংশগ্রহণকারীদের ২৪ শতাংশ-ই জীবনের কোনো এক সময় ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন। আবার তাদের মধ্যে ৩০ শতাংশ বসবাস করতেন কোল্ডওয়াটার ক্রিক থেকে এক কিলোমিটারের কম দূরত্বে। এই দূরত্বের মধ্যে বসবাসকারীদের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি ছিল ৪৪ শতাংশ বেশি। গবেষকরা এটাও বলছেন, যেহেতু যারা ক্যান্সারে মারা গেছেন তারা এই গবেষণায় অন্তর্ভুক্তই হতে পারেননি, তাই প্রকৃত চিত্র হতে পারে আরও ভয়ংকর।
গবেষকদের মতে আগের যেসব গবেষণায় কোল্ডওয়াটার ক্রিক ও ক্যান্সারের মধ্যে সম্পর্ক অস্বীকার করা হয়েছিল, সেগুলো ছিল ত্রুটিপূর্ণ। কারণ, সেগুলো মূলত আধুনিক সময়ের বাসিন্দাদের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। তারা শৈশবে ওই এলাকায় থাকেননি। নতুন গবেষণাটি প্রথমবার সেইসব মানুষের তথ্য বিশ্লেষণ করেছে, যারা শিশুকালে এই তেজস্ক্রিয়তায় পরিপূর্ণ এলাকায় বড় হয়েছে। তবে এটিকে কেবল ক্ষতিপূরণের বিষয় হিসেবে দেখছেন না, বরং ভবিষ্যতের জন্য সতর্কবার্তা হিসেবেও তুলে ধরেছেন গবেষকেরা।
আনিকা রহমান মৌ
তথ্যসূত্রঃ- এনপিএস.গভ
+1
+1
+1
+1
+1
+1
+1