আমরা ছোট বেলা থেকেই জেনে আসছি সূর্য সৌরজগৎ–এর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থান করে। সূর্যের চারদিকে গ্রহগুলো ঘুরছে কিছু গ্রহাণু, কিছু উল্কাপিন্ড এবং যাত্রাপথে থাকা ধূমকেতুদের সাথে নিয়ে। আবার গ্রহগুলিও তাদের নিজেদের কক্ষপথে নিজেরাই ঘুরছে। অনেকটা লাটিম যেভাবে করে ঘুরে সেইরকম।
“সমস্ত কিছু সৌরজগতের ভরকেন্দ্রকে কেন্দ্র করে ঘুরে, সূর্য নিজেও এ কাজ করে,” টুইট করে এই বার্তাটি দেন জেমস ও’ডনগুয়ে, যিনি জাপানিজ স্পেস এজেন্সির একজন গ্রহ বিষয়ক বিজ্ঞানী।
ভরকেন্দ্রকে বলা হয় ব্যারিসেন্টার, যে বিন্দুতে কোন একটা বস্তু সাম্যবস্থায় থাকে। বিন্দুটির চারদিকে কোন একটা বস্তুর ভর সমানভাবে বন্টিত থাকে। যেমন আমাদের মানবদেহের ক্ষেত্রে আমাদের নাভিকে মানবদেহের ভরকেন্দ্র বলা হয়ে থাকে। মানবদেহের মতো সৌরজগতেরও একটা ভর কেন্দ্র রয়েছে। যেটি অবস্থিত সূর্যের একদম কেন্দ্রবিন্দুতে।

ব্যাপারটিকে আরেকটু বুঝিয়ে বলতে গেলে, আমাদের গ্রহ নক্ষত্র গুলো ব্যারিসেন্টারের চারদিকে মিলিয়ন মিলিয়ন কিলোমিটার ঘুরছে, কখনো কখনো এই ভরকেন্দ্রেকে ওভারল্যাপ করে, কখনো কখনো ভরকেন্দ্র থেকে দূরে সরে যায়। সেজন্য ভরকেন্দ্র একেক সময় একেক জায়গায় হয়।

এটার জন্য অনেকটাই দায়ী বৃহস্পতির মধ্যাকর্ষণ বল। আমরা জানি বৃহস্পতি সবথেকে বড় গ্রহ। পুরো সৌরজগতের 92.8 ভাগ ভর সূর্যের রয়েছে। বৃহস্পতির বাকি 0.2 ভাগ রয়েছে। এই অল্প ভরদিয়েই বৃহস্পতি নিজের দিকে সূর্যকে আলতো করে টানছে।
জেমস আরো বলেন, “সূর্য আসলে বৃহস্পতির চারদিকে কিঞ্চিৎ ঘুরছে।”
পুরো সৌরজগতের সকল গ্রহ এবং তাদের উপগ্রহের নিজস্ব ভরকেন্দ্র রয়েছে। নিজস্ব ভরকেন্দ্রের চারদিকে তারা নৃত্যরত অর্থাৎ নিজেদের কক্ষপথের চারিদিকে নিজেরা ঘূর্ণায়মান।
যদিও বামন গ্রহ প্লুটোর ভরকেন্দ্র তার বাইরে অবস্থান করে। অন্যদের সাথে প্লুটোর এই পার্থক্য বিদ্যমান।
এই ভরকেন্দ্র দিয়ে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা নতুন গ্রহ আবিষ্কার করতে পারেন। কোন সিস্টেমের অদৃশ্য ভর থেকে থাকলে এই প্রক্রিয়াটি চালানো হয়। তবে সৌরজগতের গ্রহগুলো সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরে এতে কোন সন্দেহ নেই। রিসার্চাররা ভরকেন্দ্র ব্যাপারটি সামনে এনেছেন ব্যাপারটিকে আরও নিখুঁতভাবে বর্ণনা করতে।
গোলাম কিবরিয়া/ নিজস্ব প্রতিবেদক
+1
1
+1
+1
+1
+1
1
+1
+1