আমাদের বিশাল মহাকাশের পুরোটা জুড়েই রয়েছে হরেক রকম রহস্য। এর মধ্যে কিছু কিছু রহস্যের সমাধান বিজ্ঞানীরা বহু প্রচেষ্টার পর করতে সক্ষম হলেও, এখনো অজানা রয়ে গেছে এর একটি বিশাল অংশ।
মহাকাশ সম্পর্কে কৌতূহল আমাদের অনেকের মধ্যেই রয়েছে। উন্নত দেশগুলোতে এই কৌতূহল মেটানোর সুযোগ থাকলেও বাংলাদেশে তা ছিল। কিন্তু শীঘ্রই বাংলাদেশের মহাকাশপ্রেমিদের জন্য আসছে সুসংবাদ।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় তৈরি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম স্পেস অবজারভেটরি “বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্পেস অবজারভেটরি সেন্টার“। ২১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে দূরবীন দিয়ে মহাকাশ পর্যবেক্ষণের জন্য কেন্দ্রটি সমস্ত আধুনিক সুবিধাসহ স্থাপন করা হচ্ছে। প্রকল্পটি ১৯ ই জানুয়ারী জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিলের (এসিএনইসি) কার্যনির্বাহী কমিটির অনুমোদন পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশিষ্ট লেখক অধ্যাপক জাফর ইকবাল স্যার সবার আগে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় একটি মহাকাশ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের ধারণাটি জনগণের নজরে আনেন। তিনি ব্যাখ্যা করেছিলেন যে নিরক্ষীয় অঞ্চল, ক্যান্সারের ট্রপিক এবং ক্যাপ্রিকর্ণ ট্রপিক– তিনটি কাল্পনিক রেখা যা পৃথিবীকে পূর্ব থেকে পশ্চিমে ঘিরে রেখেছে। এই অঞ্চলে চারটি দ্রাঘিমা রেখার সাথে একটি ছেদ রয়েছে যা ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় উত্তর থেকে দক্ষিণে ঘিরে রেখেছে যা স্পেস অবজারভেটরি স্থাপনের জন্য একটি আদর্শ অবস্থান হিসাবে বিবেচনা করা যায়। তার পরামর্শ অনুযায়ী বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এই প্রকল্পের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে।
প্রকল্পের প্রস্তাব অনুযায়ী মহাকাশ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রটি ১০ একর জমিতে নির্মিত হবে এবং এতে একটি ৫ তলা বহুতল ভবন থাকবে যাতে প্রতিফলক দূরবীনের ব্যবস্থা থাকবে। অবজারভেটরি টাওয়ারটির উচ্চতা ১০০ মিটার রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
প্রকল্পের প্রস্তাবনায় বিদেশে ১১ জন কর্মকর্তাকে ভ্রমণ ও প্রশিক্ষণের জন্য এক কোটি ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পটি সুষ্ঠ ভাবে কার্যকর করা সম্ভব হলে প্রথমবারের মত বাংলাদেশে তৈরি হতে যাচ্ছে মহাকাশ পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র যা ভবিষ্যতে আমাদের দেশকে মহাকাশ গবেষণার দিক দিয়ে এক ধাপ এগিয়ে যেতে সহায়তা করবে। আশা করা যাচ্ছে, ২০২৩ সালের মাঝেই বাংলাদেশের প্রথম স্পেস অবজারভেটরি এর নির্মাণ কাজ শেষ হবে ও তা সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।