বিজ্ঞানীদের লক্ষ্য আকাশচুম্বি বলে শুনেছি। কিন্তু আজকাল বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানীদের প্রসার অতিক্রম করেছে মহাকাশকেও। বিজ্ঞান চলে গেছে সৌরজগতের বাইরে।
ইউনিভার্স পেরিয়ে ধারনা দিয়েছে মাল্টিভার্সের। কিন্তু এবারের অভিযান সূর্যকে স্পর্শ করা।শুনতে অবাক লাগলেও এবং গুজব বলে মাথাব্যাথা না থাকলেও এ কথা অনস্বীকার্য NASA এবার অসম্ভব ধারনার বাধটা নিশ্চই ভেঙে দেবে।
কেননা প্রথমবারের মত পৃথিবীর মানুষ সূর্যে স্পেসক্রাফট রোবট পাঠাচ্ছে যা পৃথিবী থেকে ৪০ লক্ষ মাইল দূরে অবস্থিত সূর্যের চারপাশে ঘুড়তে ঘুড়তে সূর্যের বহিস্তর (করোনা) স্পর্শ করে সূর্য কীভাবে কাজ করে তা জানার চেষ্টা করবে।
রোবটটির নাম পার্কার সোলার প্রব (Parker Solar Probe)। এর নামকরন করা হয় এস্ট্রোফিজিসিস্ট Eugene Parker এর নাম অনুসারে। এটি তৈরি করতে নাসার খরচ হয়েছে প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার।
এটি উৎক্ষেপণ করা হবে বাংলাদেশের সময় আগামীকাল (১২ আগস্ট, ২০১৮) দুপুর ১ টা থেকে ২ টার মধ্যে। কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে
এটি সূর্যকে অতিক্রম করে সূর্যকে স্পর্শ করতে লাগবে আরো ৭ বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালে রোবটটি সূর্যের কাছে পৌছাবে।
কেন? মহাকাশযানটির গতি কি খুবই স্লো? মোটেই না। ইউনাইটেড লঞ্চ এলাইয়েন্স ডেল্টা ফোর (United Launch Alliance Delta IV Heavy Rocket) রকেটে করে রোবটটি পাঠানো হচ্ছে।
এ রকেটটির গতি হবে 430000 Miles Per Hour. এই গতিতে ছুটে গেলে অ্যামেরিকার নিউ ইয়র্ক থেকে জাপানের টোকিওতে যেতে লাগবে এক মিনিটেরও কম সময়।
প্রশ্ন – ১ II সূর্যের আশেপাশে এ Parker Solar Probe টিকে থাকবে কীভাবে?
উত্তরঃ সূর্যের উপরিভাগের তাপমাত্রা প্রায় ৯৯৪০.৭৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট। তার উপর অতিমাত্রার তেজস্ক্রীয় রশ্নির বিকিরন।
এতটা জটিল পরিবেশে Parker Solar Probe কীভাবে টিকে থাকবে এ প্রশ্নটা করা স্বাভাবিক।
তাপ এবং তাপমাত্রার মধ্যে পার্থক্য কি? তাপমাত্রা হচ্ছে একটা তাপীয় কণা (ধরে নাও গরম কোন কণা) কত দ্রুত তাপশক্তি পরিবহন করছে।তাপ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হয় কিন্তু আমরা সেই তাপ কেবল তখনই অনুভব করতে পারব যখন কোন একটা তাপীয় বস্তুর সংস্পর্শে আসবো।
সূর্যের তাপ আমাদের বায়ুমন্ডলে পৌছে বায়ুকণাগুলোকে উত্তপ্ত করে বলেই সূর্যের তাপ আমরা অনুভব করতে পারি।বিষয়টাকে আরো পরিস্কার করতে একটা উদাহরন দিই, আমরা যখন রান্নাঘরে যেয়ে হাড়িতে করে পানি গরম করি তখন সে হাড়ির আশেপাশে (স্পর্শ না করে) হাত নাড়ালে সামান্য তাপ অনুভব করি।
কিন্তু যদি আমরা সেই গরম পানির মধ্যে হাত ঢুকিয়ে দিই তবে আগের তুলনায় অনেক বেশি তাপ অনুভব করব (ভুলেও চেষ্টা করবেনা)।
এর কারন হচ্ছে তাপীয় বস্তু ছাড়া তাপ অনুভব করা যায় না।
সূর্যের আশেপাশে কোন কণা কিংবা বায়ুস্তর নেই। এ কারনে সূর্যের তাপ ছড়ালেও Parker solar Probe তা অনুভব করবে কম।
এক্ষেত্রে Parker Solar Probe এর Heat Shield মাত্র ২৫০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রা অনুভব করবে।
প্রশ্ন – ২ II তবে কি Probe এর কোন ক্ষতিই হবে না?
উত্তরঃ অবশ্যই হবে। তবে ক্ষতির গতি হবে খুবই ধীর। এক সময় অনেক আদর যত্ন আর আবেগ দিয়ে তৈরী করা Solar Probe টি ক্ষতিগ্রস্ত হতে হতে নিস্তেজ হয়ে যাবে।
কিন্তু ততদিনে সূর্য্যের উপরে চালানো পরীক্ষা সফল হয়ে যাবে।
এ কথা বলতে বলতেই আবেগপ্রবন হয়ে পড়ছিলেন নিকি ফক্স।
Join Science bee official group Science Bee Family
