• লেটেস্ট
  • ট্রেন্ডিং
  • সবগুলো
শিউলি ফুল

শিউলি ফুল

জুন ৩, ২০২৪
ধূমকেতুএক্স Science bee science news

মহাকাশ গবেষণায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়; ধূমকেতুএক্স ও ডিআইইউ চুক্তিবদ্ধ

জুন ২৭, ২০২৫
সায়েন্স বী’র সাত বছর: বিজ্ঞান চর্চার এক অসাধারণ যাত্রা

সায়েন্স বী’র সাত বছর: বিজ্ঞান চর্চার এক অসাধারণ যাত্রা

জুন ৪, ২০২৫
কার্বন science bee science news

কার্বন ফাইবার পুনর্ব্যবহারের নতুন পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি আবিষ্কার

মে ১৬, ২০২৫
স্পেস science bee science news

বাংলাদেশের প্রথম স্পেস রকেট; প্রদর্শিত হলো ময়মনসিংহে

মে ১৪, ২০২৫
ক্যান্সার science bee science news

কোরিয়ান বিজ্ঞানীদের ক্যান্সার নিরাময়ের যুগান্তকারী পদ্ধতির আবিষ্কার

মে ১৩, ২০২৫
আমার চোখে ঢাকা; নগর নিয়ে নাগরিকের ভাবনা 

আমার চোখে ঢাকা; নগর নিয়ে নাগরিকের ভাবনা 

মে ৪, ২০২৫
সভ্যতার ভিত্তিপ্রস্তর-লোহা এর অতীত থেকে ভবিষ্যত

সভ্যতার ভিত্তিপ্রস্তর-লোহা এর অতীত থেকে ভবিষ্যত

এপ্রিল ১৭, ২০২৫
ইলেকট্রন কে ত্রিমাত্রিক কাঠামোতে বন্দী করলেন গবেষকেরা: কোয়ান্টাম জগতে নবসম্ভাবনা

ইলেকট্রন কে ত্রিমাত্রিক কাঠামোতে বন্দী করলেন গবেষকেরা: কোয়ান্টাম জগতে নবসম্ভাবনা

এপ্রিল ১০, ২০২৫
নাহিয়ান আল রহমান অলি: স্বপ্ন, সংগ্রাম ও সাফল্যের এক মহাকাশ অভিযাত্রী

নাহিয়ান আল রহমান অলি: স্বপ্ন, সংগ্রাম ও সাফল্যের এক মহাকাশ অভিযাত্রী

এপ্রিল ৯, ২০২৫
স্টেম সেল থেরাপি, চিকিৎসাবিজ্ঞানে এক নতুন আশার আলো

স্টেম সেল থেরাপি, চিকিৎসাবিজ্ঞানে এক নতুন আশার আলো

এপ্রিল ৮, ২০২৫
চিনি Science bee science news

চিনি: সু-স্বাস্থ্যের সবচেয়ে বড় অন্তরায়

এপ্রিল ৪, ২০২৫
জিনোমের মধ্যে পাওয়া গেল ৯৫ টি অঞ্চল যা PTSD এর সাথে জড়িত

জিনোমের মধ্যে পাওয়া গেল ৯৫ টি অঞ্চল যা PTSD এর সাথে জড়িত

মার্চ ৩০, ২০২৫
ব্লগে লিখুন
প্রশ্ন করুন
মঙ্গলবার, জুলাই ৮, ২০২৫
বিজ্ঞান সংবাদ
  • টপিকস
    • জীববিজ্ঞান
    • পদার্থবিজ্ঞান
    • রসায়ন
  • ২১ শতক
  • প্রযুক্তিNew
  • স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা
    • করোনাভাইরাস
  • মহাকাশবিজ্ঞান
  • পরিবেশ
  • অন্যান্য
    • ফ্যাক্ট চেক
    • উদ্যোগ
    • তারুণ্য
    • ক্যাম্পাস টাইম
    • টিপস
    • দেশান্তর
    • বইয়ের দুনিয়া
    • ইতিহাস
    • আত্মউন্নয়ন
    • গেমস এন্ড সফটওয়্যার
হোম
কাঙ্ক্ষিত রেজাল্ট পাওয়া যায়নি
সবগুলো রেজাল্ট দেখুন
বিজ্ঞান সংবাদ
  • টপিকস
    • জীববিজ্ঞান
    • পদার্থবিজ্ঞান
    • রসায়ন
  • ২১ শতক
  • প্রযুক্তিNew
  • স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা
    • করোনাভাইরাস
  • মহাকাশবিজ্ঞান
  • পরিবেশ
  • অন্যান্য
    • ফ্যাক্ট চেক
    • উদ্যোগ
    • তারুণ্য
    • ক্যাম্পাস টাইম
    • টিপস
    • দেশান্তর
    • বইয়ের দুনিয়া
    • ইতিহাস
    • আত্মউন্নয়ন
    • গেমস এন্ড সফটওয়্যার
কাঙ্ক্ষিত রেজাল্ট পাওয়া যায়নি
সবগুলো রেজাল্ট দেখুন
বিজ্ঞান সংবাদ

Home » শিউলি ফুল

শিউলি ফুল

জুন ৩, ২০২৪
in বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
শিউলি ফুল

সকালবেলা শিউলি উঠোন পরিষ্কারের সময় মিকির লাশ খুঁজে পায়। সে সাথে সাথে রাফিদ এর নাম ধরে চিৎকার করে উঠে। তার ডাক শুনে রাফিদ দৌড়ে সেখানে উপস্থিত হলো। কিন্তু এসে যা দেখলো তা দেখার জন্য সে মোটেও প্রস্তুত ছিল না।

মিকির মাথার খুলিটি কাঁটা এবং ভেতরে মগজের কোন চিহ্নটুকু নেই। এই বিভৎস দৃশ্য শিউলির সহ্য হচ্ছেনা। সে শক্ত করে রাফিদকে জড়িয়ে ধরে তার বুকে নিজের মুখটা গুঁজে রাখলো। অন্যদিকে রাফিদ একটি প্রাণহীন মূর্তির ন্যায় মিকির লাশের দিকে নিষ্পলক তাকিয়ে থাকে।

science bee science story শিউলি

মিকি রাফিদের পোষা কুকুর। আজ থেকে প্রায় ৯ বছর আগে মিকির সাথে রাফিদের প্রথম দেখা হয়। ঐ সময় রাফিদ বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। একদিন রাস্তা দিয়ে হাঁটার পথে সে একটি মজার দৃশ্য দেখতে পায়। একটি কুকুরছানা একটি ইঁদুরকে ধাওয়া করছে। ইঁদুরটি নিজেকে বাঁচাতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কুকুরটিছানাটিও নাছোড়বান্দা, সে ইঁদুরটিকে কোনোভাবেই পালাতে দিবে না। তবে দৌড়োবার সময় অসাবধানতাবশত হঠাৎ ছানাটি পাশের একটি নালায় গিয়ে পড়ে।

আরওপড়ুন

রাফিদ দ্রুত ছুটে যায় সেটিকে উদ্ধারের জন্য। নালা থেকে বের করে সে দেখতে পায় কুকুরছানাটির অবস্থা আশংকাজনক। তবে সময়মতো নিকটস্থ পশু চিকিৎসাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ায় কুকুরটি সেই যাত্রায় প্রাণে বেঁচে যায়। রাফিদ ভেটেরিনারির ছাত্র হওয়ায় বাকী চিকিৎসা সে নিজেই করবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়। কুকুরছানাটিকে সে ঘরে নিয়ে যায়। ‘মিকি মাউস’ এর নামানুসারে সে কুকুরটির নাম রাখে ‘মিকি’। এরপর থেকে প্রায় ৯ বছর তারা একসাথেই ছিল।

রাতের খাবার শেষে শিউলি বসে বসে টিভিতে হরর মুভি দেখছে। সাধারণত রাতের এসময় রাফিদও তার সাথে বসে টিভি দেখে। কিন্তু মিকির মৃত্যুর ২ সপ্তাহ হতে চললেও রাফিদ এখনও স্বাভাবিক হতে পারেনি। সে দিনের বেশিরভাগ সময় বাইরে এবং বাকি সময়টা ঘরের পাশে অবস্থিত তার ল্যাবে কাটিয়ে দেয়। শিউলি এগুলো নিয়ে চিন্তায় ছিল, এমন সময় তাকে চমকে দিয়ে রাফিদ তার সামনে কফি নিয়ে হাজির হয়।

“মিস শিউলি ফুল আপনার কফি।”

science bee science story শিউলি

শিউলি কিছুটা অপ্রস্তুতভাবে বলে, “তুমি! আমি আরও মনে করেছি তুমি আসবেনা।”

“দিনের পর দিন ল্যাব, কাজ এগুলো আর ভালো লাগছেনা। চিন্তা করলাম আমার স্ত্রীর সাথেও কিছুটা সময় কাটানো যাক।”

রাফিদের কথা শুনে শিউলির চোখে মুখে আনন্দের রেখা ফুটে উঠলো।

“তোমার কফি খাওয়া বন্ধ করা উচিত। এটা তোমার ঘুমে খারাপ প্রভাব ফেলে। একারণে তুমি দিনে ৫ ঘন্টাও ঠিকমতো ঘুমাতে পারোনা। ছোটবেলার এ বদঅভ্যাস না ছাড়তে পারলে বুড়োবেলায় গিয়ে এর খেসারত দিতে হবে,” রাফিদ বললো।

“তুমি কীভাবে জানো যে আমি ছোটবেলা থেকে কফিতে আসক্ত? বাবা বলেছেন নিশ্চয়।”

“নাহ তোমার মা বলেছেন।”

“আচ্ছা আমার কফি খাওয়া আমার ঘুমে ব্যাঘাত কীভাবে ঘটায়?”

এতোক্ষণ রাফিদের চেহারায় কিছুটা বিষন্নতার ছাপ ছিল। শিউলির কথা শুনে বিষন্নতার জায়গায় তার চেহারায় একটি কৌতুহলী ভাব চলে আসে।

“তুমি আসলেই জানতে চাও?”

” হ্যাঁ অবশ্যই। সেজন্যই তো জিজ্ঞাসা করলাম।”

এবার রাফিদ আর তার আগ্রহ লুকিয়ে রাখতে পারলোনা। সে একনাগারে বলা শুরু করলো,

“আমরা সারাদিন নানা কাজে ব্যস্ত থাকি। এসব কাজ করার জন্য আমরা শক্তি পাই Adenosine triphosphate বা ATP নামক পদার্থের ভাঙ্গনের ফলে। যখন ATP ভাঙ্গে তখন অ্যাডেনোসিন নামের একটি হরমোন তৈরি হয়। এই হরমোন সারাক্ষণ আমাদের দেহে তৈরি হতে থাকে।

science bee science story শিউলি

যখন এই হরমোনের পরিমাণ বেশি হয়ে যায়, তখন সেগুলো গিয়ে আমাদের মস্তিষ্কের মধ্যে থাকা কিছু রিসেপ্টরে গিয়ে আটকে যায়। অ্যাডেনোসিন শুধু সেসব রিসেপ্টরগুলোতেই আটকায় যেগুলো আমাদের জাগ্রত রাখতে প্রয়োজনীয় রাসায়নিক পদার্থগুলো ক্ষরণ করে।

অ্যাডেনোসিন আটকে থাকায় রিসেপ্টরগুলো আমাদের জাগ্রত থাকতে দরকারি পদার্থগুলো আর ক্ষরণ করতে পারেনা। ফলস্বরূপ আমাদের ঘুম আসে।”

“এই রিসেপ্টরটা কি জিনিস? ঠিক মনে পড়ছেনা,” শিউলি কফি খেতে খেতে বলল।

“রিসেপ্টরকে তুমি অনেকটা ডাক পিয়নের সাথে তুলনা করতে পারো। ডাকপিয়ন যেমন মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে চিঠি পৌঁছে দেয়, রিসেপ্টরও ঠিক একই ভাবে আমাদের দেহের নানা সংকেত যেমন: স্পর্শ, স্বাদ ইত্যাদি আমাদের মস্তিষ্কে পৌঁছে দেয়।”

science bee science story শিউলি

“ওহ।”

” আহ…আসল ঘটনা তো মাথা থেকে সরে গেলো। আমি কী নিয়ে বলছিলাম?” রাফিদ কিছুটা বিরক্তির স্বরে বলল।

” কফি খেলে ঘুম আসেনা কেন?” শিউলি আবার মনে করিয়ে দিলো।

“ওহ হ্যাঁ। অ্যাডেনোসিন নামক হরমোন…”

“ওইটা বলা শেষ।”

“ওহ আচ্ছা! সরি! তাহলে আমরা এখন কফিতে উপস্থিত উপাদান ক্যাফেইনের কথায় আসি। আশ্চর্যজনকভাবে ক্যাফেইনের আকার এবং অ্যাডেনোসিনের আকার প্রায় একই। ফলে ক্যাফেইন সহজেই অ্যাডেনোসিন নি:সরণকারী রিসেপ্টরগুলোকে ব্লক করে ফেলে।

science bee science story শিউলি

একারণে অ্যাডেনোসিন সময় মতো বেরোতে পারেনা। তাই আমাদের জাগ্রত রাখা রিসেপ্টরগুলোও বেশি সময় চলমান থাকে।  এভাবে ক্যাফেইন আমাদের মানে তোমাকে বেশিক্ষণ ধরে জাগিয়ে রাখে এবং তোমার ঘুমে ব্যাঘাত ঘটায়।”

“ওয়াও। তোমার লেকচারটাও শেষ সাথে আমার কফিটাও খাওয়া শেষ।”

এই কথা বলে শিউলি রাফিদকে জড়িয়ে ধরে। আসলে শিউলির কফি খেলে মানুষের ঘুম না আসার রহস্য জানা নিয়ে কোন আগ্রহই ছিল না। সে রাফিদের মন ঠিক করার জন্য এ প্রশ্ন করেছিল। কারণ রাফিদ বিজ্ঞানভিত্তিক যেকোন প্রশ্নের উত্তর দেওয়াটাকে খুব উপভোগ করে।

“এখন তোমার দেহে কোন হরমোন ক্ষরিত হচ্ছে?”

রাফিদ একটু চিন্তা করে বললো, “অক্সিটোসিন।

science bee science story শিউলি

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার অন্তরঙ্গ মুহূর্তগুলোতে ক্ষরিত হয়। তাই এটাকে ‘লাভ হরমোন’ ও বলে।”

রাফিদের কথা শুনে শিউলি আর তার হাসি চেপে রাখতে পারলোনা। শিউলির বালিকার মতো খিলখিল শব্দে সারা ঘর মুখরিত হয়ে উঠলো।

শিউলির সাথে রাফিদের বিয়ে হয়েছে ছয়মাস হতে চললো। সম্পর্কে তারা দূর-সম্পর্কের আত্মীয়ও হয়। তাই বিয়ের পূর্বেও তারা একজন আরেকজনকে চিনতো। রাফিদের মা-বাবা নেই। তার দাদা তাকে বড় করেছে। বাবার ফেলে যাওয়া অঢেল সম্পত্তি যাতে রাফিদকে বিপথে না নিয়ে যায় সেদিকে তিনি সর্বদা সতর্ক থাকতেন। তাছাড়া  গবেষণার বাইরে রাফিদের অন্যকিছুতে খুব একটা আগ্রহও ছিল না। রাফিদ অনার্স পাশ করার কিছু দিনের মধ্যেই তার দাদাও মারা যায়। 

বিয়ের আগে শিউলি লিউকেমিয়া নামক একটি দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ছিলো। শিউলির পরিবারের কাছে তার চিকিৎসা করাবার মতো সামর্থ্য ছিল না। বিপদের সেই মুহূর্তে রাফিদ তাদের সাহায্য করে। যদিও শিউলির বাবা শুরুতে রাফিদের দেওয়া টাকা নিতে চাইছিলেন না। কিন্তু প্রতি পলকে  মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলা মেয়ের কথা চিন্তা করে তিনি সে টাকাগুলো নিতে বাধ্য হন।

যেদিন শিউলির অপারেশন হবার কথা সেদিন রাফিদের সাথে শিউলির দেখা হয়। রাফিদ শিউলিকে বলে, “আমি তোমাকে বিয়ে করতে চাই। প্লীজ বেঁচে ফিরে এসো।”

ঐদিন ঠিক-ই শিউলি অপারেশন থিয়েটার থেকে বেঁচে ফিরতে সক্ষম হয়। এর-ই সাথে রাফিদের সাথে শিউলির বিয়েটাও হয়ে যায়।

রাফিদের ল্যাব তার ঘরের ঠিক পাশেই অবস্থিত।

science bee science story শিউলি

বেশ গুছানো আর পরিপাটি। যদিও এতে রাফিদের চেয়ে শিউলির কৃতিত্ব বেশি। কারণ সে প্রতিদিন সকালবেলা যত্ন করে ল্যাবটিকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখে। রাফিদ বেশিরভাগ সময় রাত এবং ছুটির দিনগুলো সেখানেই কাজ করে কাটিয়ে দেয়। যখন সে ভেতরে থাকে তখন বাইরের কেউ তার ল্যাবে প্রবেশ করতে পারেনা। এমনকি শিউলিও না। আজও সে প্রতিদিনের মতো ল্যাবে ঢুকেছে।

তার হাতে একটি বই। বইয়ের নাম “Testimonium Creatura Mysteriosa।” বাংলায় যার অর্থ দাঁড়ায় ‘রহস্যময় সৃষ্টির জবানবন্দি’।

বইটি প্রায় ৯০ বছর আগে একজন লাতিন বনগবেষক ব্রুটাস লুকাসের লেখা। ব্যক্তিটির সারাবিশ্বের বনাঞ্চলসমূহে ঘুরার নেশা ছিল। এই নেশা তাকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় রেইন ফরেস্ট আমাজন পর্যন্ত নিয়ে যায়। আর সেখানে গিয়েই তিনি নিজের জীবনের সবচেয়ে বড় আবিষ্কারটি করেন। 

ঐদিন তিনি আমাজনের অন্যতম গভীর অংশ ‘vale do javari’ তে তার কয়েকজন সঙ্গীসহ হাঁটছিলেন। এমন সময়  একটি বিশাল গাছের দিকে তাদের নজর যায়। এই প্রজাতির গাছ তারা ইতোপূর্বে কখনও দেখেনি। গাছটির গায়ে প্রায় ১৫ ফুট জুড়ে বিস্তৃত একটি বেগুনী পদার্থ। তারা ধারণা করে এটি ‘Slime mold’ এর কোন একটা প্রজাতি। 

লুকাস একটি বয়াম বের করে তাতে বেগুনী পদার্থটির নির্দিষ্ট কিছু অংশ কেটে নেয়। লুকাস তার বইয়ে লেখে, “Slime mold সমূহ দেখতে বড় হলেও তাদের পুরো গঠন একটি কোষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। অর্থাৎ, এরা এককোষী প্রাণী। তাদেরকে বিভিন্ন অংশে কেটে যদি আবার একস্থানে এনে রাখা হয়, তাহলে তারা পরস্পর জোড়া লেগে আবার আগের রূপে ফিরে আসে। দেখতে একটা সাধারণ ফাঙ্গাসের মতো হলেও এরা এর চাইতে বেশি ক্ষমতা রাখে।”

২০১০ সালে জাপানে Physarum polycephalum নামক হলদে একটি slime mold এর উপর একদল বিজ্ঞানী পরীক্ষা চালান। সে পরীক্ষায় কিছু অবাক করা তথ্য সবার সামনে আসে। Slime mold টি টোকিও রেলপথ কেমন হওয়া উচিত তার একটি চিত্র একদম সঠিকভাবে ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হয়।

science bee science story শিউলি

যে কাজ মানুষের পক্ষে উন্নত প্রযুক্তি ছাড়া করা সম্ভব না, তা একটি মস্তিষ্কবিহীন জীব কিভাবে করে ফেলল তা সবার জন্য বড় একটি রহস্য।

রাতে ঘুমোতে যাওয়ার সময় বয়ামটি লুকাসের এক সঙ্গী নিজের কাছে রাখে। সকালবেলা সবাই ঘুম থেকে জেগে দেখে তাদের ঐ সঙ্গীটি উধাও। বয়ামটি তার বিছানায় ফাঁকা অবস্থায় পড়ে আছে। সবাই চারিদিকে খোঁজাখুঁজি করলো, কিন্তু তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলোনা। লুকাস চিন্তা করলো ঐ গাছটির আশপাশ থেকে একবার খুঁজে আসা যাক। সেখানে গিয়ে লুকাস দেখলো তার সঙ্গীর মৃতদেহ গাছটির ঠিক পাশেই পড়ে আছে। মৃতদেহটির খুলিতে মস্তিষ্ক অনুপস্থিত। মস্তিষ্কটি গাছটির সাথে লেগে আছে।

science bee science story শিউলি

এই দৃশ্য দেখার পর দলের সবার মনোবল ভেঙ্গে যায়। তারা বন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু পথিমধ্যে লুকাস বাদে বাকীরা সবাই মারা যায়।

এই সম্পূর্ণ ঘটনাটি লুকাস তার বইটিতে তুলে ধরে। বেগুনী slime mold জাতীয় জিনিসটার সে নাম দেয় Physarum Indescriptibilis। যদিও বিজ্ঞানীমহলে কেউ-ই ঘটানাটিকে গুরুত্বের সাথে দেখেনি। তাদের মতে এটি একটি বানোয়াট গল্প ছাড়া আর কিছুই না।

রাফিদ কিছুক্ষণ ল্যাবের চারপাশে ভালোভাবে দেখে নিলো। তার হাতে থাকা একটি রিমোট জাতীয় যন্ত্রে টিপ দিতেই ল্যাবের আন্ডারগ্রাউন্ড অংশে যাওয়ার দরজাটি খুলে গেল। রাফিদ বাদে এটি সম্পর্কে আর কেউ জানেনা। তার গোপন পরীক্ষাগুলো সে ওখানেই চালায়। 

“মিকি, তুমি কেমন আছো? ক্ষমা করে দিও তোমাকে অনেক অপেক্ষায় রাখলাম।”

রাফিদের সামনে মিকির খোলা মস্তিষ্ক। মস্তিষ্কটিকে ঘিরে আছে একটি বেগুনী পদার্থ।

science bee science story শিউলি

৩ বছর আগে রাঙ্গামাটির পার্বত্য অঞ্চলে একটি উল্কাপিণ্ড এসে আছড়ে পড়ে। উল্কাপিণ্ডটির ভূপৃষ্ঠের সাথে সংঘর্ষে  আশেপাশের ১০ কিলোমিটার অঞ্চলের জঙ্গল ও ঘরবাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। রাফিদদের তখনকার গবেষণাকেন্দ্র ঘটনাস্থলের কাছেই ছিল। জরুরি ভিত্তিতে উল্কাটির অবশিষ্টাংশ সেখানে পাঠানো হয়। কথা ছিলো কয়েক ঘন্টার মধ্যে SPARRSO থেকে গবেষকদল এসে সেটিকে ঢাকায় নিয়ে যাবে। সেসময় হঠাৎ রাফিদের মাথায় একটি বুদ্ধি খেলে। 

সে খুব সাবধানে সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে উল্কাটির একটি টুকরো নিজের কাছে রেখে দেয়। পরবর্তীতে জানা যায় উল্কাটিতে ওগনেসন (পর্যায় সারণির ১১৮ নং মৌল) এর উপস্থিতি আছে। রাফিদ তার চুরি করা টুকরোটি থেকে ০.০০২ মিলিগ্রাম ওগনেসন সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়।

০.০০০২ মিলিগ্রাম ওগনেসন দিয়ে সে প্রায় ৩০০ মিলিলিটারের একটি বিশেষ তরল বানায়। সাধারণ Physarum polycephalum এ এটি ঢাললে তা হলুদ থেকে বেগুনী রঙ ধারণ করে। সাথে সেটির মধ্যে মস্তিষ্ক থেকে তথ্য শুষে নেওয়ার মতো ক্ষমতা চলে আসে। যদিও তা অস্থায়ী সময়ের জন্য। লুকাসের দেখা সেই বেগুনী Slime mold এর নামানুসারে রাফিদ এটির নাম রাখে Physarum Indescriptibilis।

৩০০ মিলিলিটারের মধ্যে ১ মিলিলিটার দিয়ে সে শুরুতে একটি ইঁদুরের উপর পরীক্ষা শুরু করে। রাফিদের বাছাইকৃত ইঁদুরটি জন্ম থেকে শুরু করে জীবনের পুরোটা অংশ এই ল্যাবেই কাটিয়েছে। ফলে তার মস্তিষ্কে এই ল্যাবের বাইরের কোন স্মৃতি থাকবার কথা না। খুব সাবধানে ইঁদুরটির মস্তিষ্ক বের করে রাফিদ সেটিকে Physarum Indescriptibilis এর কাছে এনে রাখে। বিদঘুটে আঠার মতো বেগুনী পদার্থটির এক প্রান্ত ছোট্ট মস্তিষ্কটাকে ধীরে ধীরে গ্রাস করে ফেলে। 

দেরি না করে রাফিদ অপর প্রান্তকে একটি তারের সাথে যুক্ত করে দেয়। তারটি একটি কম্পিউটারের সাথে যুক্ত। সে দেখতে পায় ইঁদুরের মস্তিষ্কের তথ্যগুলো সফলভাবে Physarum Indescriptibilis রাফিদের কম্পিউটারে স্থানান্তর করতে পেরেছে। তথ্যগুলোকে সে একে একে ছবিতে পরিণত করে দেখতে লাগলো। সব ছবি তার ল্যাবের ভেতরের। রাফিদের অনুমান সঠিক ছিল। Physarum Indescriptibilis আসলেই মানব মস্তিষ্ক থেকে তথ্য সংগ্রহে সক্ষম।

সে একই পরিক্ষা আরও তিনটি ইঁদুরের উপর চালিয়ে সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিত হয়।

প্রথম ইঁদুরের ক্ষেত্রে ১ মিলিলিটার করে তরল লাগলেও বাকী দুটির ক্ষেত্রে যথাক্রমে ২ ও ৩ মিলিলিটার করে লেগেছে। কারণ সে ঐ ইঁদুর দুটিকে ল্যাবের বাইরেও নিয়ে গিয়েছিলো। ফলে তাদের মস্তিষ্কেও তথ্যের পরিমাণ ও ধরণ বেশি ছিল। মিকির মস্তিষ্কের জন্য প্রায় ১৫০ মিলিলিটারের মতো খরচ হয়েছে। এর কারণ কুকুরের মস্তিষ্কের আকার এবং জটিলতা ইঁদুরের মস্তিষ্কের চেয়ে বেশি। এখন তার কাছে শুধু ১৪৬ মিলিলিটার-ই বাকী আছে। এখন আর ওগনেসনের জোগান পাওয়াটাও সম্ভব না। তবে সে চেষ্টা করছে কিভাবে এই পরিমাণটাকে অন্যকোনো উপায়ে বাড়ানো যায়।

রাফিদ একটা চেয়ারে বসে পড়লো। মাথায় হাত দিয়ে সে কিছু একটা চিন্তা করছে, “তরলটার একটা ডাকনাম রাখা উচিত। কী রাখা যায়? মিকির নামে রাখবো? সে তো আমার খুবই পছন্দের ছিল। এজন্যই তো তার লাশটাকে আমি ক্যামিকেল দিয়ে ধ্বংস করিনি। মিকিকে মারাটা কি খারাপ হয়েছে? নাহ মোটেও না। আমি না থাকলে তো সে এতোদিন বাঁচতে পারতোনা। আমিই যেহেতু তাকে জীবন দিয়েছি তাই তা কেড়ে নেওয়ার অধিকারও আমার আছে।

নাহ নামটা আমি মিকির নামে রাখবোনা। শিউলিকে আমি মিকির চেয়েও বেশি ভালোবাসি। তাছাড়া সে-ই প্রথম মানুষ যার মস্তিষ্কের উপর এই যুগান্তকারী পরীক্ষাটি চালানো হবে। নামটা আমি আমার শিউলি ফুলের নামেই রাখবো।”

আতিক হাসান রাহাত / নিজস্ব লেখক 

Science Bee Science news

আপনার অনুভূতি কী?
+1
4
+1
1
+1
1
+1
3
+1
36
+1
2
+1
2
ট্যাগ: Adenosine TriphosphateATPঅক্সিটোসিনআমাজন ফরেস্টকফিকম্পিউটারকুকুরঘুমের ব্যাঘাতজাপানটোকিওব্রেইনভেটেনারিয়ানমিকিরেলওয়ে নেটওয়ার্কলাভ হরমোনলাশল্যাব এক্সপেরিমেন্টশিউলি ফুলসায়েন্স ফিকশনস্লাইম মল্ড
Science News

Science News

footer_logo    

বাংলাদেশের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক সংবাদমাধ্যম “ডেইলি সায়েন্স” সায়েন্স বী এর একটি অন্যতম অনুষঙ্গ প্রোগ্রাম। এই ওয়েবসাইটে প্রকাশিত সকল সংবাদ, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার আইনত ও নৈতিকভাবে বেআইনি।

   

যা গুরুত্বপূর্ণ


  • যোগাযোগ করুন
  • প্রশ্ন ভাণ্ডার
  • বী ব্লগ
  • অফিসিয়াল পেইজ

আরও…


  • আমাদের সম্পর্কে
  • যুক্ত হোন
  • অফিসিয়াল গ্রুপ
  • আমাদের টীম

প্রধান সম্পাদক


মবিন সিকদার

 

বার্তা সমন্বয়ক


দিদারুল ইসলাম
সাদিয়া বিনতে চৌধুরী

 
 

© Science Bee Bangladesh. 2020 All rights reserved.

Designed & Developed By Mobin Sikder

কাঙ্ক্ষিত রেজাল্ট পাওয়া যায়নি
সবগুলো রেজাল্ট দেখুন
  • ২১ শতক
  • অন্যান্য
  • আত্মউন্নয়ন
  • ইতিহাস
  • গেমস এন্ড সফটওয়্যার
  • টিপস
  • তারুণ্য
  • দেশান্তর
  • ফ্যাক্ট চেক
  • বইয়ের দুনিয়া
  • উদ্যোগ
  • ক্যাম্পাস টাইম
  • টপিকস
  • জীববিজ্ঞান
  • পদার্থবিজ্ঞান
  • রসায়ন
  • পরিবেশ
  • প্রযুক্তি
  • মহাকাশবিজ্ঞান
  • স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা
  • করোনাভাইরাস

Copyright © 2020 Science Bee.