যারা কুকুর পুষেন তারা হয়তো অনুভব করেছেন যে আপনার কুকুর আপনার কথা বুঝতে পারে। সম্প্রতি এটি বৈজ্ঞানিক ভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে,মানুষের আচরণগত ও দেহের রাসায়নিক নিঃসরণ কুকুরের আচরণকে প্রভাবিত করে। এমনকি পোষা কুকুর তার মালিকের রাগ, ভালো লাগা, ভয় – এই ধরনের সূক্ষ্ম অনুভূতি পর্যন্ত অনুভব করতে পারে।
বিজ্ঞানীদের মতে,এই অনুধাবন করার ক্ষমতা তিনটি বিষয়ের সাথে সম্পৃক্ত – শারীরিক, মানসিক ও আচরণ। বিভিন্ন পরীক্ষা থেকে দেখা গেছে যে,কিছু হরমোন (যেমন ঃ oxytocin) এর ক্ষরণে এই ধরনের আবেগের চালান ঘটে। এছাড়াও আরও কিছু ফ্যাক্টর যেমনঃ মালিকের শরীরের গন্ধের পরিবর্তন ইত্যাদিও প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।
আরেকটি বিস্ময়কর ব্যাপার এই গবেষণা থেকে উঠে এসেছে। সেটি হচ্ছে, কুকুর ও তার মালিকের মধ্যে কতটা আবেগপূর্ণ বন্ধন আছে তা নির্ভর করে তারা কতটা সময় একসাথে কাটিয়েছে তার ওপর।
গবেষণায় আরও জানা গেছে, মালিক ও কুকুরের যখন কোনো ধরনের মিথস্ক্রিয়া হয়, যেমন শুধু eye contacting এর মাধ্যমেই দুজনের মস্তিষ্ক থেকে oxytocin ক্ষরিত হয় যাকে সাধারণত আকর্ষণ বা স্নেহ হরমোন বলে।এর মাধ্যমে কুকুরটি তার মালিকের কাছে নিরাপদ বোধ করে ও মালিকের আস্থা অর্জন করে। ইমোরি ইউনিভার্সিটির ল্যারি ইয়ং বলেন, “কুকুর থেকে মালিক, মালিক থেকে কুকুর – oxytocin উভয় দিক থেকে সম্পর্ক তৈরীতে ভূমিকা রাখে।”

কুকুর কিভাবে পোষা প্রাণীতে পরিণত হয়েছে? – প্রশ্নটি অনেক যুগ ধরেই বৈজ্ঞানিকদের ভাবিয়েছে। আগে মনে করা হতো, মূলত প্রকৃতিতে টিকে থাকার উদ্দেশ্যে কুকুর প্রজাতি মানুষের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে, যেন তারা নিরাপদে বাঁচতে পারে। তবে এ ধারণাটি এখন পরিবর্তিত হয়েছে। পোষ মানার মূল কারণ হিসেবে এখন কুকুর ও তার মালিকের মধ্যেকার সম্পর্ক(যা oxytocin দ্বারা ত্বরান্বিত হয়।) ও তাদের একসাথে কাটানো ভালো মুহুর্তকে দায়ী করা হয়।
মালিক ও পোষা কুকুর একসাথে একটি বাড়ি, একটি জীবন ও একটি পরিবারের অংশ হয়ে থাকে যা তাদের মধ্যেকার বন্ধনকে দৃঢ় করে। তখন মানুষের মতো কুকুরও হয়ে ওঠে সেই মানুষ গুলোর এক আস্থাভাজন সঙ্গী।
Basma Ahmed Sami | News Correspondent
সোর্সঃ https://www.nationalgeographic.com/science/article/yes-dogs-can-catch-their-owners-emotions
Basma Ahmed Sami | News Correspondent

+1
+1
2
+1
1
+1
+1
2
+1
+1