যেকোন ভাইরাস এর ঔষধ বা টিকা আবিষ্কারের জন্য বিজ্ঞানীদের সে ভাইরাস সম্পর্কে উত্তম ধারণা প্রয়োজন। আর সবচেয়ে ভালভাবে একটি ভাইরাস সম্পর্কে জানা যায় তার ডিএনএ সিকোয়েন্স সম্পর্কে জানতে পারলে।
কোভিড-১৯ এর এই ডিএনএ সিকুয়েন্স বের করতে বিজ্ঞানীরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করেছে যা দিয়ে কোভিড-১৯ এর জন্য দায়ী SARS-CoV-2 এর মতো ভাইরাসের গঠন কে মাত্র কয়েক মিনিটের মাঝে ব্যাখ্যা করা যায়।
কানাডার ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা বলেছেন, এই পদ্ধতি ব্যবহার করে মহামারী চলাকালীন সময়ে কীভাবে চিকিৎসা দিতে হবে তার উত্তম পরিকল্পনাও করা যায়।
প্লাস ওয়ান সাময়িকীতে প্রকাশিত এই গবেষণাটি, “বাদুড় থেকে কোভিড-১৯ এর জন্য দায়ী SARS-CoV-2 ভাইরাসটি এসেছে” এই ধারণাটিকে সমর্থন করে এবং তারা আরো বলেন বাদুড়ের শরীরে বেটাকরোনাভাইরাস এর উপগ্রুপের একটি ভাইরাস সার্ভেকোভাইরাস থেকেই কোভিড–১৯ এর উৎপত্তি।
গবেষকেরা বলেন এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পদ্ধতিটি কিছু নতুন গ্রাফিক্স ভিত্তিক বিশেষায়িত সফটওয়্যার ব্যবহার করে খুব দ্রুত ও নিখুঁত ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং নভেল করোনাভাইরাস এর জিনোম সিকুয়েন্স নির্ণয়েও এই পদ্ধতিটি শতভাগ নির্ভুল ফলাফল দিয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা এই পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রায় পাঁচ হাজার ভাইরাসের জিনোমের মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া গিয়েছে।
মেশিন লার্নিং মূলত এমন একধরনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যা দিয়ে কোন সফটওয়্যার নিজে নিজেই নিজের উন্নতি সাধন করতে পারে যাতে নতুন করে নির্দেশনা দেয়ার প্রয়োজন হয় না।
কানাডার ওয়েস্টার্ন ওন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্যাথলিন হিল বলেন, “আমাদের শুধু প্রয়োজন ছিল কোভিড-১৯ এর ডিএনএ সিকুয়েন্স, তারপরই আমরা সে সিকুয়েন্স অন্যান্য ভাইরাসের সিকুয়েন্স এর সাথে মিলিয়ে মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে কোভিড-১৯ এর শ্রেণিকরণ করে ফেলতে সমর্থ হই। দিন নয়, ঘন্টা নয়, আমাদের লেগেছিল মাত্র কয়েক মিনিট!”
এই পদ্ধতিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৯ টি নোবেল করোনাভাইরাস সহ প্রায় পাঁচ হাজারটি ভাইরাসের জিনোম সিকুয়েন্স বের করা সম্ভব হয়েছে। এবং অধ্যাপক হিল বিশ্বাস করেন মহামারী এবং অন্যান্য সময়ে যেকোন ভাইরাসের ঔষধ বা টিকা আবিস্কারে এই পদ্ধতিটি বিজ্ঞানী ও ডাক্তারদের নিত্য প্রয়োজনীয় হয়ে উঠবে।
আকিল রহমান / নিজস্ব প্রতিবেদক