The Center for Near Earth Object Studies (CNEOS) জানিয়েছে, তাদের পর্যবেক্ষণ অনুসারে নভেম্বরের ২ তারিখে পৃথিবীর বেশ কাছ দিয়ে অতিক্রম করে যাবে “2018VP1” নামক এই গ্রহাণু টি। কিন্তু পৃথিবীর তুলনামূলক কাছে দিয়ে অতিক্রম করলেও এটি পৃথিবীর জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াবেনা বলে জানিয়েছে নাসা।
আকারে বেশ ছোট এই গ্রহাণুটির ব্যাস ৬.৫ ফিট বা ০.০০২ কি.মি.। পৃথিবীকে অতিক্রমের সময় গ্রহাণুটি পৃথিবী থেকে ৪৭০০ মাইল থেকে ২৬০,০০০ মাইলের মাঝে যেকোনো অবস্থানে থাকতে পারে; তবে পর্যবেক্ষণকৃত হিসেব অনুযায়ী এই দূরত্বটি হতে পারে ৪৯৯৪.৭৬ কি.মি.। যা পৃথিবীকে পর্যবেক্ষণ করতে থাকা অনেক টেলিকমিউনিকেশন স্যাটেলাইটের দূরত্বের চেয়েও কম।
গ্রহাণুটি ২০১৮ সালে সর্বপ্রথম আবিষ্কার করেছিলেন ক্যালিফোর্নিয়ার সান ডিয়াগোতে অবস্থিত নাসার পালোমার অবজারভেটরির বিজ্ঞানীরা। সে সময়ে গ্রহাণুটি পৃথিবী থেকে ৪৫০,০০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছিলো। তখন গ্রহাণুটির ১৩ দিনের গতিপথ পর্যবেক্ষণের পর সেটি আর দেখা যায়নি।
কিন্তু এত কাছ দিয়ে অতিক্রম করা সত্ত্বেও এই গ্রহাণুটি কে নাসা বিপদজনক বা ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করছে না, যার কারণ হলো এর ক্ষুদ্র আকার। তাদের তথ্য অনুযায়ী এই গ্রহাণুটি পৃথিবীতে আঘাত করার সম্ভাবনা সর্বোচ্চ ০.৪১%। আর যদিওবা এটি আঘাত করে, সেক্ষেত্রে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশের সময়েই বায়ুমন্ডলের সাথে ঘর্ষণের ফলে গ্রহাণুটি চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যাবে।
নাসা সম্প্রতি তাদের প্রেস রিলিজে জানিয়েছে, এই ক্ষুদ্র গ্রহাণু গুলোকে শনাক্ত করা ও তাদের গতিপথ নির্ধারণ করা খুবই কঠিন; যতক্ষণ না তারা পৃথিবীর খুব কাছে এসে পৌঁছায়। এছাড়াও এই ক্ষুদ্র গ্রহাণু গুলোর গতিবেগও সাধারণত অনেক বেশি হয়।
এর আগেও গত সপ্তাহে পৃথিবীর মাত্র ১,৮৩০ মাইল দূরত্বে দক্ষিণ ভারত মহাসাগরের উপর দিয়ে আরেকটি গ্রহাণু পৃথিবীকে অতিক্রম করেছে। এটি সম্পর্কে নাসা বলেছে, 2020 GC নামক এই গ্রহাণুটি শনাক্ত করেছে Zwicky Transient Facility, এটি একটি রোবটিক ক্যামেরা যা আকাশকে স্ক্যান করে।
এই গ্রহাণুটিও আকারে বেশ ছোট ছিলো, অনেকটা বড় সাইজের একটা গাড়ির সমান। কিন্তু তবুও এটা পৃথিবীর জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায় নি কারণ এটা সোজাসুজি পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসেনি, আর যদি আসতও তাহলে তা পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের সাথে ঘর্ষণের ফলে চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যেত। পল কোডাস, CNEOS এর ডিরেক্টর বলেন, “এই গ্রহাণুটি যাত্রা পথে ৪৫ ডিগ্রী ঘুরে গিয়েছিলো যার কারণ ছিলো পৃথিবীর অভিকর্ষ বল”।
সাদিয়া বিনতে চৌধুরী/ নিজস্ব প্রতিবেদক