একজন প্রসিদ্ধ পীর স্বপ্ন দেখেছেন, থানকুনি পাতা খেলে করোনাভাইরাস আর সংক্রমিত হবে না,মিলবে মুক্তি। এমনই এক গুজবে রাতের ঘুম হারাম হয়েছে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলা- উপজেলার বাসিন্দাদের।
সেই গুজবে সাড়া দিয়ে এ অঞ্চলের অধিবাসীরা রাতের আঁধারে থানকুনি পাতা সংগ্রহ করেছেন। অনেকে চিবিয়ে খেয়েছেন সে পাতা। তারা বলছেন, এই থানকুনি পাতাই করোনাভাইরাসের উত্তম প্রতিষেধক। জানা গেছে, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে শুরু হয়েছে এ গুজব।
অনেকে ফেসবুকে এ নিয়ে পোস্ট দিচ্ছেন। কেউ কেউ থানকুনি পাতা সংগ্রহ করতে পেরেছেন জানিয়ে ছবিও পোস্ট করেছেন। কেউ কেউ স্বজন, বন্ধুদের ফোন করে ঘুম ভাঙাচ্ছেন এবং জরুরি ভিত্তিতে থানকুনি পাতা সংগ্রহের তাগিদ দিচ্ছেন।
থানকুনি পাতা সংগ্রহে নেমে পড়া একাধিক ব্যক্তি জানান, জৈনপুরী পীর সাহেব স্বপ্নে দেখেছেন যে, তিনটি থানকুনি পাতার আর এক গ্লাস পানি খেলে করোনাভাইরাস ছুঁতেও পারবে না। তবে ফজরের আজানের পূর্বেই পাতা তিনটি খেতে হবে। ফেসবুকে অবশ্য এই গুজব কানে তোলেননি স্থানীয়দের কেউ কেউ। তারা গুজবে কান না দিতে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
তারা বলছেন, এমন গুজবের উৎপত্তি কোথা থেকে তা কেউ জানে না। এদিকে করোনায় বিধ্বস্ত ইতালি, জার্মান, বাহারাইন, সৌদি আরব থেকে দলে দলে প্রবাসীরা আসায় এই আতঙ্কে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। আতঙ্কিত জনতার অনেকেই নানা সময় নানা গুজবে কান দিচ্ছেন। করোনা থেকে মুক্তি মিলবে এমন তথ্য পেলেই তা যাচাই-বাছাই না করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস নিয়ে বেশ কয়েকটি ভুল ও ভুয়া তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরপাক খাচ্ছে। বিশেষকরে ইউনিসেফের বরাত দিয়ে কিছু ভুল তথ্য প্রচারিত হচ্ছে। এ নিয়ে গবেষকরা সচেতনতামূলক পোস্ট দিয়েছেন।
লবণ মেশানো গরম পানি কি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করে ?-না |
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে আরও দু’জনের মধ্যে নতুন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১০ জনে দাঁড়িয়েছে। নতুন আক্রান্ত দু’জনের একজন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। অন্যজন বিদেশ ফেরত একজনের সংস্পর্শে আক্রান্ত হয়েছেন।
তিনজন সুস্থ হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুজন বাড়ি ফিরেছেন। একজন এখনও কোয়ারেন্টাইনে, ৭ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সারা দেশে হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছে ৪ হাজার ৮৩৬ জন। দেশে বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৬ জন এবং প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছে ৪৩ জন।